ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনেক বাড়বে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১০ অক্টোবর ২০১৬

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনেক বাড়বে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ভারতের মতো চীনের সঙ্গেও বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু ভারতেরটা নিয়ে যত আলোচনা হয়, চীনেরটা নিয়ে তত আলোচনা হয় না। যদিও এই দুই দেশ থেকে বেশি আমদানি করে বাংলাদেশই লাভবান হচ্ছে। তিনি বলেন, চীনে বাংলাদেশের রফতানি বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে চীনে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ শতাংশ। যেখানে দেশের মোট রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ শতাংশ। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসছেন, সে সময় বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক সই হবে। ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ইতোমধ্যে ২০টির কাজ শুরু হয়েছে। যার মধ্যে একটি চীনকে দেয়া হবে। ‘বাংলাদেশ-চীন বন্ধুত্ব : প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক সেনা প্রধান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ, বিএফইউজে সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ইআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, রাজনীতিতে মত ও পথের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সবাইকে একমত হতে হবে। তাহলে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ হবে। দেশও লাভবান হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও রাশিয়াসহ সবার সঙ্গে সুসস্পর্ক স্থাপন করেছে। চীনের সঙ্গে এ সম্পর্ক এখন সুউচ্চতায় রয়েছে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও তারা এক নম্বর বন্ধু। প্রায় শতভাগ পণ্যে আমরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছি। আমরাও বিলিয়ন ডলারের আমদানি করছি। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। এর মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি থাকলেও তা নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। অনেক দেশে আমরা কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাচ্ছি। তাই চীনের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে একটু আস্তে ধীরে এগুচ্ছি। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে চীনে রফতানি ২৫ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে এ সময়ে রফতানিতে জাতীয় গড় প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ। সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ব্যবসা এবং রাজনীতি এখন হাত ধরাধরি করে চলে। অর্থনীতির স্বার্থেই আমাদের এই বৈদেশিক সম্পর্কোন্নয়নে নজর দিতে হবে। সেটি করতে হবে সতর্কতার সঙ্গে। কোন পদক্ষেপে দেশের স্বার্থ ক্ষুণœ হয় এমন কোন পদক্ষেপ সরকার নেবে না সেটিই সবাই আশা করে। বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, চীনের সঙ্গে সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে বিসিআইএম করিডোরের বাস্তব রূপায়ন। চীনের বিনিয়োগ ও ঋণ সহায়তাও বাংলাদেশের জন্য কার্যকরী। তবে চীনের ঋণ সহায়তার শর্ত একটু জটিল। এদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম তার প্রবন্ধে বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান এই অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক ‘টেস্ট কেস’ হবে। কারণ আমরা যদি চীনের ১ শতাংশ বাজারও ধরতে পারি তাহলেও আমাদের রফতানি ১৭ বিলিয়নে পৌঁছানোর কথা। তিনি বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান অংশীদারদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক স্থাপনে ভিন্নতার কথাও তুলে ধরেন এবং পরামর্শ দেন আগের সম্পর্কগুলো নতুন করে স্থাপন করার।
×