মানুষে মানুষ, জীবনে জীবন যোগ করার আবাহন নিয়ে উৎসব এসে কড়া নাড়ে। উৎসব মানে মহামিলনের দিগন্তকে প্রসারিত করে তোলা। পরস্পরের সঙ্গে প্রাণে প্রাণে প্রাণ মেলানোর এক মোক্ষম আয়োজন ঘটে উৎসবে। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য এই প্রাণের উৎসবকে গুরুত্ব দিয়েছেন তার কালে। বলেছেনও “সবচেয়ে দুর্গমÑ যে মানুষ আপন-অন্তরালে,/তার পূর্ণ পরিমাপ নাই বাহিরের দেশে কালে।/সে অন্তরময়/অন্তর মিশালে তবে তার অন্তর পরিচয়।/” উৎসবের যেমন রয়েছে বহিরঙ্গ, তেমনি তার অন্তরঙ্গেও রয়েছে আনন্দ উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি দুঃখ কষ্ট, বেদনা, যন্ত্রণার সারাৎসারও। সম্ভবত এরা মানুষের ভেতরই সৃষ্ট এবং তাতেই পায় লয়। উৎসবের সঙ্গে চিত্ত-বিত্তের একটা পারস্পরিক সম্পর্ক রয়ে যায়। সমাজের উচ্চ ও নিচ শ্রেণীর মধ্যে উৎসবের আনন্দ একরূপে প্রতিভাত হয় না। নিরন্ন অনাহারি অসহায় মানুষের জীবনে উৎসব হচ্ছে সেই দিন, যেদিন সে দু’বেলা দু’মুঠো খাদ্য পরিপূর্ণতার সঙ্গে ধারণ করতে পারে। সামাজিক বৈষম্যের করুণ রূপটি উৎসবের দিনে সাদা চোখে তাকালে স্পষ্ট হয়। একদল উৎসবকে সামনে রেখে দু’হাতে দেদার ব্যয় করেন আরেক দল অর্থাভাবে উৎসবে শামিল হওয়ার আয়োজনটুকুও সম্পন্ন করতে পারে না। প্রাণে প্রাণ যোগ হওয়ার ক্ষেত্রগুলো সঙ্কুচিত হতে থাকে কেবলই। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত স্তরে উৎসবের রং একরকম নয়। অর্থ, বৈভব-প্রতিপত্তের দাপটে উৎসব নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে তাদেরই হাতে। অন্যরা দর্শক হয়ে উপভোগের আকাক্সক্ষায় শামিল হলেও ভেতরের দারিদ্র্য তাকে পীড়িত করে তোলে।
বাংলাদেশের সমাজের শিখরে রয়েছেন, এমন শ্রেণীর একটা বড় অংশই কোন না কোন প্রকার দুর্নীতিকে ভিত্তি করে ঐশ্বর্য, বৈভব এবং ক্ষমতার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। এটাও বাংলাদেশের আলাদা বৈশিষ্ট্য নয়। পৃথিবীর সব দেশের উচ্চ শ্রেণীর বৈভব ও ক্ষমতার মূলে রয়েছে দুর্নীতি। পৃথিবীর কোথাও কোনকালে টাকা উপার্জনের সঙ্গে নীতিশাস্ত্র বা ইথিকস-এর কোন সম্পর্ক ছিল না। আমাদের সমাজেও নেই। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ যুগে অগ্রজসহ আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা এই সাক্ষ্য দেয় যে, পশ্চাতে রাজনৈতিক খুঁটির জোর এমনকি আমলাতান্ত্রিক খুঁটির জোর থাকলেও কিংবা সামরিক জান্তাশাসকের বশংবদ হলে ও অর্থ উপার্জন করতে পারলে সমাজপতি, নরপতি, পীর-দরবেশ এমনকি জনপ্রতিনিধিও হওয়া যায়। এমনও হয়, যে কোন উপায়ে সংগৃহীত ওই অর্থ আরও অধিক অর্থ অর্জনের প্রেরণাও যোগায়। একবার একটি ক্ষমতার পদ সংগ্রহ করতে পারলে, সেই পদ আরও অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন পদ সংগ্রহের প্রেরণা যোগায়, সে অভিলাষ ক্রমে সর্বগ্রাসী হয়ে ওঠে। বিশ্বের অন্যত্র উচ্চশ্রেণী গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে উঁচুমানের সংস্কৃতি ও বৈদগ্ধও গড়ে উঠেছে। সমাজ জীবনে ঘটেছে বিপ্লব। ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের ফলে উচ্চশোষক শ্রেণী গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে একটি অভিজাত সংস্কৃতিও জন্ম নেয়। যাকে বলা হয়েছিল সাংস্কৃতিক বিপ্লব। তার কেউ সেকালে ছড়িয়েছিল দেশে দেশে। কিন্তু এ দেশে ঘটনা ঘটেছে সম্পূর্ণ বিপরীত। দুর্নীতিকে ভিত্তি করে গঠিত উঁচু শ্রেণীটিতে রয়েছেন ব্যাপারী, ব্যবসায়ী, কিছু আমলা বা ভূতপূর্ব আমলা, কতিপয় রাজনীতিক এবং ফটকাবাজ। এদের একাংশের জীবনযাপন প্রণালী প্রায় ইউরোপীয়-মার্কিনী হলেও মন এবং মানসের দিক থেকে এরা দৃষ্টিকটু শঙ্কর বৈকি! ঘরে বিদেশী উপকরণ ব্যবহার, সাজসজ্জায় বিদেশী ভাবধারা এবং লেটেস্ট মডেলের গাড়ি চালানো ও বিমানে চলাফেরা করলেই ইউরোপীয় হওয়া যায় না। সে জন্য বিদ্যাবত্তা, বৈদগ্ধ, মুক্তবুদ্ধি, সাংস্কৃতিক চেতনা আবশ্যক। বিরল ব্যতিক্রম ছাড়া তাদের মধ্যে এসব সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এদের বৈঠকখানায় কুৎসিত সাজসজ্জা, শোকেস, টেলিভিশন প্রভৃতি দেখা যায়; কিন্তু পুরো বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজলেও বই-পুস্তকের সন্ধান পাওয়া যায় না। কোন ধরনের সাংস্কৃতিক বা সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হওয়া দূরে থাক, সামান্য আলোড়নও জাগে না তাদের মধ্যে। সন্তানদের জ্ঞাতসারে এবং চোখের সামনেই তারা অসদুপায়ে অর্থকড়ি উপার্জন করেন। ওই অর্থে সন্তানদের দামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠান। পাশ্চাত্য বোলচাল শেখান। সন্ধ্যায় টিভি নিয়ে বসেন। কখনও সপরিবারে তৃতীয় শ্রেণীর বিদেশী ছবি বা সিরিয়াল দেখেন, যার মধ্যে মারামারি, খুনোখুনী, ঘুষোঘুষিই অধিক। বিত্তবানের সন্তানরা পশ্চাত্য সংস্কৃতির বহিঃরূপটাই দেখে, ভেতরের দিক নয়। ওরা ওই সংস্কৃতিতেই দীক্ষিত হচ্ছে। সুনীতি-কুনীতির পার্থক্য তাদের অভিভাবকরাও বিবেচনা করেন না। সন্তানরাও নয়। দেশে বিরাট মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রভাবও কম নয়। এরা মন-মানসিকতা ও অর্থনৈতিক অবস্থার দিক থেকে বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত হলেও উচ্চাভিলাষের ব্যাপারে তারা সকলে এক স্তরে। মুখে ধর্ম ও নীতির বুলি কিন্তু সুনীতি-কুনীতি নির্বিশেষে যে কোন উপায়ে টাকাকড়ি রোজগার করে উচ্চ শ্রেণীতে প্রমোশন লাভ করার ব্যাপারে তারা ঐক্যবদ্ধ। মন ও মানসের দিক থেকে, বিরল ব্যতিক্রম বাদে, ওরা প্রায় সবাই মধ্যযুগীয় চেতনাধারী যেন। বসবাসও সেই পর্যায়ের। নিজেরা বাস্তব জীবনে কোনরূপ অসততাকেই অসৎ ও অন্যায় জ্ঞানে পরিহার না করলেও হিতোপদেশ দিতে সতত নিযুুক্ত। কথা ও কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় তাদের হিতোপদেশের প্রতি কেউ কর্ণপাত করে না। তারা বরং অভিভাবকদের বাস্তব জীবনযাপন রীতিই অনুসরণে সচেষ্ট থাকে। মধ্যবিত্ত সমাজের কোন কোন স্তরে অল্পবিস্তর চর্চা হয়ে থাকে সংস্কৃতির। কিছু লোক কখনও মনের তাগিদে, কখনওবা পেশাগত কারণে বাধ্য হয়ে কিছু লেখাপড়ার চর্চাও করে থাকেন। কিন্তু শ্রেণী হিসেবে বিচার করলে এ শ্রেণীর মধ্যে যে কোন উপায়ে অর্থবিত্ত লাভ ছাড়া অন্য কোনরূপ প্রবর্তনা আদৌ নেই বললেও অত্যুক্তি হয় না। কখনও বকধার্মিকের বেশে, কখনওবা প্রগতিশীল বেশে সমাজে বিচরণ করলেও দেশে নবজীবনের সঞ্চার, উন্নতির নয়া দিগন্ত উন্মোচনের নেতৃত্ব দেয়ার কোন আগ্রহ এবং উদ্যোগ তাদের নেই। তাদের একটি অংশ বরং বাংলাদেশের জন্মেরও আগে হতে দেশে মূর্খতা সম্প্রসারণের আদর্শে উদ্বুদ্ধ ও সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে। এদেরই একটা অংশ বিত্তবান হয়ে উঠলেও তাদের বংশধরদের মধ্যে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ এবং মৌলবাদের বিস্তার ঘটেছে। তারা যে মূর্খতা সম্প্রসারণের কাজে নিযুক্ত, সে বিষয়েও তারা সচেতন নন। কেননা, তাদের বিদ্যাবুদ্ধির মাত্রা এত নীচে যে, তারা মূর্খতা সম্প্রসারণের কাজটিকেই বৈপ্লবিক কাজ মনে করেন। এর প্রমাণ এবং গলদটাও রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থায়।
সমন্বিত ও সুসংহত শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন না করায় নানামুখী শিক্ষায় শিক্ষিতরা সমাজে অসঙ্গতি বাড়ায়। শিক্ষাব্যবস্থায় বিদ্যমান প্রায় নৈরাজ্য এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রায় শূন্যতা জঙ্গীবাদে পরিণত হওয়ার সহায়ক হয়ে উঠেছে, যে কারণে সপরিবারে জঙ্গী হয়ে ওঠা শুধু নয়; আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতাও তীব্র হয়ে উঠেছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আলোকিত মানুষ তৈরির কাজ যদি করতে না পারে, তবে অনালোকিত অন্ধকার হয়ে ওঠে সর্বগ্রাসী। মাঠে-ময়দানে অনুষ্ঠিত সমাবেশের মঞ্চে এবং শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের দেয়ালঘেরা সভাকক্ষের উন্নীত স্থানে দাঁড়িয়ে সরল বিশ্বাসী শ্রোতাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার মহিমা শোনানো হয়। বলা হয়, ‘ভাইসব, দেশ ও জাতির স্বার্থে আরও ত্যাগ করুন। ইহকাল দু’দিনের, পরকাল অশেষ। অতএব হে দরিদ্র ক্ষুধার্ত নগ্ন মানবকুল, তোমরা ইহকালের বঞ্চনার জন্য দুঃখ করো না, পরকালে তোমরা আবহমানকাল সুখ ভোগ করবে।’ যারা বলেন, তারা নিজেরা ত্যাগ স্বীকারে আগ্রহী নন। বরং অনুপার্জিত বা অসৎপথে সংগৃহীত অর্থবিত্তের সহায়তায় ইহকালে পরম আরাম-আয়েশে জীবনযাপন এবং নিয়মিত ধর্মকর্ম, দান-খয়রাত ও তীর্থ প্রভৃতি করে পরকালের আরাম-আয়েশও ‘রিজার্ভ’ করে রাখছেন। বিশাল মানবগোষ্ঠীকে পশ্চাৎপদ রেখে কতিপয়ের আত্মস্বার্থ অর্জনে নানাবিধ পন্থা অবলম্বন সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে আসছে। এই বৈষম্যই দুর্গতি আর অগতির বিস্তার ঘটাতে সহায়ক। অতীতে যা ছিল অনড় সত্য, পরবর্তী যুগে সেটাই হয়ে যাচ্ছে প্রকা- মিথ্যা। যুগে যুগে বাস্তব সামাজিক জীবনে তার প্রমাণ মেলে। পিতামহ-প্রপিতামহ এমনকি পিতার সামাজিক জীবনের সঙ্গেও আমাদের সামাজিক জীবনের সাদৃশ্য ক্রমে লোপ পাচ্ছে। পিতামহের জগৎ আমাদের কাছে হয়ে যাচ্ছে এক অন্য অবাস্তব জগৎ। তাই স্পষ্ট দেখা যায়, সুনীতি-দুর্নীতিবোধ পরিবর্তনশীল সমাজের পরিবর্তনশীল শৃঙ্খলাবোধ ছাড়া অন্য কিছু নয়। তথাপি চোখ দুটো যেন এসব দেখেও দেখে না।
সমাজের উপর কাঠামো বাস্তবে অর্থাৎ যে শ্রেণীটি কৃষিনির্ভর নয়, সে স্তরে সরকারী এবং ব্যাংকের তহবিল তছরূপ, জালিয়াতি জুয়াচুরি, চোরাবাজারি, কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে মালামাল আমদানি-রফতানি, পণ্য আমদানিতে কমিশন নেয়া, অসামাজিক ব্যবসা, সরকারী অর্থ ও আনুকূল্যে বেসরকারী ব্যক্তির ফ্রি ব্যবসা-বাণিজ্য ও কলকারখানার মালিকানা লাভ প্রভৃতি যে কোন পন্থায় অর্থোপার্জন ও ধনৈশ্বর্য বৃদ্ধির কাজ নিরন্তর চলছে। এটাই এ যুগের বাংলাদেশের উচ্চস্তরের সামাজিক তথা বাস্তব জীবনের রীতিনীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরাই আবার পোশাক-পরিচ্ছদে, বক্তৃতা-বিবৃতিতে এবং সুনীতি সন্দর্ভ রচনায় শুধু সমাজের শীর্ষস্থানে নয়, প্রয়োজনমতো ধর্মবরদারও। এদের মস্তিষ্ক কোষের গোলকধাঁধার পথে ওই সব সরীসৃপই বেরিয়ে আসে, যেগুলো বৃহত্তর সমাজের ওপর তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। বাংলাদেশের উপরের স্তরে দেনা-পাওনার বিষয়টা এখন আর নৈতিকতা বা নীতিশাস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত নয়। তা এখন কলা-কৌশলের ব্যাপার। অক্ষমের ‘সামান্য ধনসম্পদ’ কৌশলে কুক্ষিগতকরণ এ সমাজের একমাত্র নীতি বা এথিকস। এরা আরাম-আয়েশ এবং বিলাসিতার জীবন নিশ্চিত করার জন্য হেন কাজ নেই যা করতে পারান্মুখ। তাই তারা দারিদ্র্য পছন্দ করেন না। বরং নিম্নবর্গের জনগণকে দেশ ও জাতির স্বার্থে বৃহত্তর ত্যাগ করার বয়ান দেন। এরা ঘরেরও খান এবং ঘাটেরও কুড়ান। এরা উৎসবকে ব্যবহার করেন তাদের নিজেদের মতো করে। সমাজ জীবনে এরা অন্য কারও অবস্থান মেনে নিতে পারে না। রবীন্দ্রনাথ শতবর্ষেরও আগে ১৯০৯ সালে লিখেছিলেন, ‘সকল দেশের সকল সমাজেই ত্রুটি ও অপূর্ণতা আছে। কিন্তু দেশের লোক স্বজাতির প্রতি ভালোবাসার টানে যতক্ষণ এক থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত তার বিষ কাটিয়ে চলতে পারে। পচবার কারণ হাওয়ার মধ্যেই আছে। কিন্তু বেঁচে থাকলেই সেটা কাটিয়ে চলি, মরে গেলেই পচে উঠি।’ এ অবস্থা একুশ শতকে এসেও বিদ্যমান। সমাজে আজ নানা দুর্গতি-অগতির বিস্তার ঘটছে নানাভাবে। সন্ত্রাসবাদ ক্রমশ জঙ্গীবাদে রূপান্তরিত হয়েছে। ধর্মের নামে, ক্ষমতার নামে মানুষ হত্যায় এরা বব্ধপরিকর। বিশ্বজুড়েই জঙ্গীবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে। মানুষ আতঙ্কে কাটায় দিন, তখন শান্তির ললিতবাণী প্রচার জরুরী। হোক তা ব্যর্থ বা পরিহাস। বিশ্ব শান্তি আজ সুদূরপরাহত। কিন্তু তাই বলে থেমে থাকা যায় না। পরমাণু অস্ত্রের হুঙ্কার বাজে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। হতদরিদ্রের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। কিন্তু সমাজ প্রগতির দিকে ধাবিত হচ্ছে না। বরং মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণায় আক্রান্ত হচ্ছে আধুনিক মানুষ। দুর্গতির এ ধারা প্রবহমান। অবশ্য রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘দুর্গতি চিরস্থায়ী হতে পারে এ কথা আমি কোনক্রমেই বিশ্বাস করতে পারিনি।’ আমরাও তা করি না। দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা অসুর নিধন করেছিলেন। কিন্তু মানুষের মধ্যে বসবাসরত অসুর তবু নিধন হয় না।