ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রুইফের প্রশংসায় পঞ্চমুখ গার্ডিওলা

প্রকাশিত: ০৬:২০, ৯ অক্টোবর ২০১৬

ক্রুইফের প্রশংসায় পঞ্চমুখ গার্ডিওলা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্পেনের ক্লাব বার্সিলোনার পর জার্মানির বেয়ার্ন মিউনিখ। উভয় ক্লাবেই সাফল্যের আলো ছড়িয়েছেন পেপ গার্ডিওলা। এই মৌসুমের আগেই নতুন করে ঠিকানা গড়েন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন ম্যানচেস্টার সিটির। তবে বার্সিলোনা, বেয়ার্ন মিউনিখ কিংবা ম্যানচেস্টার সিটিÑ একজন গার্ডিওলা হয়ে ওঠার পেছনে নাকি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন জোহান ক্রুইফ। গার্ডিওলা নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন তা। বৃহস্পতিবার উন্মোচন হলো ক্রুইফের আত্মজীবনী। যা পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার মাসখানিক আগেই সম্পন্ন করেছিলেন কিংবদন্তি ক্রুইফ। সেই আত্মজীবনী উন্মোচনের পরই এক সাক্ষাতকারে সাবেক কোচ ও মেন্টর জোহান ক্রুইফের প্রশংসা করে পেপ গার্ডিওলা বলেন, ‘তিনি ছিলেন অনন্য, সম্পূর্ণরূপেই আলাদা। তার সহযোগিতা না পেলে কখনই এখানে আসতে পারতাম না। খুব ভাল করেই জানি যে এই মুহূর্তে আমি কেন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ এবং এর আগে কেন বেয়ার্ন মিউনিখ এবং বার্সিলোনার কোচ ছিলাম।’ বার্সিলোনার কোচ হিসেবে অসাধারণ সব সাফল্য উপহার দিয়েছেন পেপ গার্ডিওলা। তার জনপ্রিয়তায় এতটুকু ভাটা পড়েনি বেয়ার্ন মিউনিখেও। তবে কেমন করবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে? তবে ম্যানচেস্টার সিটির দায়িত্ব গ্রহণ পেপ গার্ডিওলার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন তারই সাবেক শিষ্য কার্লোস পুয়োল। ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ক্যাম্প ন্যুতে গার্ডিওলার অধীনে থেকে চারটি সফল মৌসুম উপভোগ করেছেন পুয়োল। এ সময় লা লিগার তিনটি ও চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা লাভ করে কাতালান ক্লাবটি। এরপর বার্সা ছেড়ে জার্মান জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখে গিয়েও দারুণভাবে সফল হয়েছেন গার্ডিওলা। সেখানে অবস্থানকালীন তিনটি মৌসুমের বুন্দেসলিগার সবগুলো শিরোপা জয় করেছেন তিনি। যদিও ইউরো মঞ্চের শিরোপা জয় করা হয়নি জার্মান ক্লাবটির। এখন ম্যানচেস্টার সিটিতে এসে দুর্দান্ত একটি সূচনা উপহার দিয়েছেন গার্ডিওলা। সবধরনের প্রতিযোগিতায় মৌসুমের প্রথম ১০ ম্যাচের সবকটিতেই জয় পায় তার দল। এরপরই অবশ্য ভাটা পড়ে অগ্রযাত্রায়। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সেল্টিকের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করে সিটিজেনরা। এরপর প্রিমিয়ার লীগে তো হারই মানে তারা। এ্যাওয়ে ম্যাচে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে ২-০ গোলে হেরে যায় পেপ গার্ডিওলার দল। পুয়োলের মতে স্পেন ও জার্মানিতে কর্তৃত্ব বজায় রাখার পর প্রিমিয়ার লীগে এসে গার্ডিওলার সফলতায় ভাটা পড়েছে। তবে এটিও বলেছেন যে, তিনি ইংলিশ ফুটবলের সংস্কৃতিতেই একটা পরিবর্তনের ছোঁয়া এনেছেন! এ প্রসঙ্গে কার্লোস পুয়োল জানান, ‘এটি গার্ডিওলার জন্য এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমার মতে তিনি ইংল্যান্ডের ফুটবলে একটি পরিবর্তন আনতে পারবেন। বিপুল সংখ্যক মানুষের অভিমত অন্যান্য দেশের চেয়ে ইংল্যান্ডের ফুটবলে ভিন্নতা রয়েছে। তবে তিনি যে পন্থায় কাজ করছেন এবং খেলোয়াড়দের যেভাবে চাপের মধ্যে রাখেন, তাতে এখানকার খেলার মধ্যে কিছুটা হলেও পরিবর্তন আসবে। তার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ফুটবলের স্টাইলে পরিবর্তন করা।’ গার্ডিওলা গোড়া থেকেই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে খেলা শুরু করতে চান এবং তা গোলরক্ষক থেকেই। তার মানে এই নয় যে, তিনি লম্বা পাসের খেলা খেলতে চান। যেমনটি হয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে। ম্যাচের একমাত্র গোলটি হয়েছে মাত্র তিন স্পর্শে। তবে এটাই টোটাল স্টাইল। তিনি খেলা চালান খেলোয়াড়দের পজিশনের ওপর নির্ভর করে এবং সেটি শুরু হয় একদম পেছন থেকেই। খুব দ্রুত দলের মধ্যে তার প্রভাব লক্ষ্য করেছি আমি। তিনি খুবই ভাল করছেন। তার ধারণা খুবই পরিষ্কার এবং সেটি খেলোয়াড়দের মাধ্যমে তিনি তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তাদের মধ্যে তিনিই শ্রেষ্ঠ কোচ। তাকে ইংল্যান্ডে দেখতে পেয়ে আমি সন্তুষ্ট। তিনি খেলোয়াড়দের প্রচুর চাপে রাখেন। তবে গার্ডিওলার অধীনে খেলোয়াড়রা যথেষ্ট নির্ভার অনুভব করেন। এটি অনুধাবন করা বেশ কঠিন। এটিই ফুটবল। যা আমি উপভোগ করি।’
×