ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ঢাবি চারুকলার বকুলতলায় ছায়ানটের শরত বন্দনা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৮ অক্টোবর ২০১৬

ঢাবি চারুকলার বকুলতলায় ছায়ানটের শরত বন্দনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তখনও জেগে ওঠেনি শহরের অধিকাংশ মানুষ। ভর করেছিল ছুটির দিনের আলস্য। তন্দ্রাচ্ছন্নতায় শয্যা ত্যাগ করেনি বেশিরভাগ শহরবাসী। তবে সেই সাত-সকালেই যেন প্রাণের ছোঁয়া পেয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলা। শরতের আবাহনে স্নিগ্ধ হয়ে উঠেছিল চারুশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সবুজ প্রান্তর। সুরের মায়াজালে উদ্দীপ্ত হয়ে উঠেছিল শিল্পাচার্য জয়নুলের স্মৃতি আঙিনা। একক ও সম্মেলক গানে গানে অনুষ্ঠিত হলো স্নিগ্ধ ঋতু শরতের উদ্যাপন। সুরের সঙ্গে নৃত্যের সহযোগে অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠে আরও বেশি আকর্ষণীয়। আর বিশেষ ঋতু বন্দনার এমন আয়োজনে সকালের আলস্য ভেঙ্গে সংস্কৃতিপ্রেমী নগরবাসীর অনেকেই শামিল হয়েছিলেন সেখানে। নাগরিক মনে বয়ে গেছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস। মননের সঙ্গে নারী-পুরুষ ও শিশুদের পোশাকেও উঠে এসেছিল শরতের আবহ। শুক্রবার সকালে শরত বন্দনার এমন নান্দনিক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাতটা। মঞ্চে এলেন একঝাঁক কণ্ঠশিল্পী। সম্মেলক কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথকে আশ্রয় করে শিল্পীরা গেয়ে উঠলেন- বিশ^বীণারবে বিশ্বজন মোহিছে/স্থলে জলে নভতলে বনে উপবনে ...। আকাশের ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয়ার কথাটি গানে গানে বলে যান ফারজানা আক্তার পপি। গেয়ে শোনানÑ আলোর অমল কমলখানি কে ফুটালে/নীল আকাশের ঘুম ছুটালে ...। এরপর কণ্ঠশিল্পীদের একক ও সম্মেলক গান এবং নৃত্যশিল্পীদের নাচের মুদ্রায় চলে ছায়ানটের শরত অঞ্জলি। উদ্বোধনী গান ছাড়াও সম্মেলককণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘শরত তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি’ ও ‘আমার নয়ন-ভুলানো এলে’। এছাড়া সমবেত কণ্ঠে গাওয়া ‘ওগো শেফালিবনের’, ‘আনন্দেরই সাগর হতে’ ও ‘আজ ধানের ক্ষেতে’ গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা। কৌশিক সাহা ও মন্দ্রিতা বিশ^াস দ্বৈতকণ্ঠে গেয়ে শোনান ‘তোমার মোহন রূপে কে রয় ভুলে’। এছাড়া বেশ ক’জন শিল্পী একক কণ্ঠে গেয়ে শোনান গান। মাকছুরা আখতার গেয়ে শোনান ‘অমল ধবল পালে লেগেছে’, রাইয়্যান বিনতে হাবীব ‘আমারে ডাক দিল কে’, দীপাঞ্জন মুখার্জী ‘হৃদয়ে ছিলে জেগে’, সুতপা সাহা ‘কোন্ খেলা যে খেলব কখন’, সুদীপ সরকার ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে’, শ্রাবন্তী শোভনা ‘তোমরা যা বল তাই বলো’, সৈকত মুখার্জী ‘কেন আমায় পাগল করে যাস’, সেমন্তি মঞ্জরী ‘কোন্ খেপা শ্রাবণ’, মানস ভট্টাচার্য ‘আমার রাত পোহালো’, সেঁজুতি বড়ুয়া ‘মেঘ কেটে গেছে’ গেয়ে শোনান। সব শেষে পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীত। সমবেতকণ্ঠে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় অনুষ্ঠান। স্মরণে সৈয়দ শামসুল হক ॥ স্মরণ করা হলো চর্যাপদের অক্ষর থেকে উঠে আসা কবি সৈয়দ শামসুল হককে। যৌথভাবে এ স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলা একাডেমি এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। শুক্রবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সূচনা বক্তব্য রাখেন একাডেমির সচিব আনোয়ার হোসেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি। এ অনুষ্ঠানে সৈয়দ হকের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, নাট্যজন আতাউর রহমান, কবির সহধর্মিণী আনোয়ারা সৈয়দ হক, অধ্যাপক ড. বিশ^জিৎ ঘোষ, গীতিকবি রফিকউজ্জামান, কবি সাজ্জাদ শরিফ, কবি মাহবুবুল হক শাকিল, সৈয়দ হকের ছেলে দ্বিতীয় সৈয়দ হক, জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ। স্মরণসভা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি ‘পরাণের গহিন ভিতরে সৈয়দ শামসুল হক’ শিরোনামে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করে। আনিসুজ্জামান বলেন, সবাই সৈয়দ হকের নানা বৈশিষ্ট্য উন্মোচন করেছেন। তার সঙ্গে পরিচয় ১৯৫২ সালে। তার প্রথম বই প্রকাশের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। এখনও এক বছর হয়নি তার আশি বছর উদযাপন করেছিলাম এই মঞ্চে। সেদিন তাঁর সঙ্গে রসিকতাও করেছিলাম। সৈয়দ হক যৌবনে এক অসাধারণ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি পেশা হিসেবে লেখালেখিকেই বেছে নিয়েছিলেন। আমাদের মনে শঙ্কা জেগেছিল, এটা কি সম্ভব হবে সেই ময়ের প্রেক্ষাপটে? কিন্তু তিনি সেটাকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন। লেখায় সৈয়দ শামসুল হক নিজেকে প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিকে প্রকাশ করেছেন। এদেশের মানুষের ব্যক্তিগত, যৌথ ও আনন্দ-বিষাদ, সমস্যা-সঙ্কটের কথা বলেছেন। আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। এ জন্য আমরা চিরকাল তাঁর কাছে ঋণী থাকব। কবির কবিতার চরণ থেকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আমি সৈয়দ শামসুল হক এখনও বেঁচে আছি’Ñএই লাইনটি আমাদের জন্য, সৈয়দ হকের জন্য ধ্রুব সত্য। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সময় আমাদের সঙ্গে শত্রুতা করে। এটা নির্মম সত্য। ব্যক্তিগত সময় ফুরিয়ে আসে। ব্যক্তি সময়ের যে নির্মমতা তাকে সৈয়দ হক জয় করেছিলেন। তার কাছে জীবন অনেক বড় সত্য ছিল। তাই মৃত্যু সম্পর্কে তিনি খুব কম ভাবতেন। তাঁকে কখনও সময় নষ্ট করতে দেখেনি। তাঁর রয়েছে বহুমাত্রিক পরিচয়। তবে তিনি প্রধানত সাহিত্যিক ছিলেন, কবি ছিলেন। তিনি মনে করতেন, সাহিত্যচর্চা মানে অশিক্ষিতের পটুত্ব নয়। সাহিত্যচর্চা মানে জ্ঞান চর্চার মধ্য দিয়ে নতুন সাহিত্য সৃষ্টি করা। কবিতা, গদ্য কিংবা কাব্যনাটকÑসব শাখায় ভাষা, নির্মাণশৈলীতে নতুনত্ব এনেছেন। জীবন থেকে অভিজ্ঞতা সংগ্রহ করে তা সাহিত্যে প্রয়োগ করেছেন। লেখালেখির ক্ষেত্রের অসাধারণ মেধার সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত করেছেন শ্রম। লেখার প্রতি এই ভালবাসাই তাঁকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায় । আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, এক স্বপ্নের ফেরিওয়ালার সঙ্গে আমি জীবন কাটিয়েছি। আমাদের দাম্পত্য জীবন পঞ্চাশ বছরের। এই জীবন যেন স্বপ্নের ভেতরে কেটেছে। মনে হয়নি কখনও বাস্তবে পা ফেলে আমাদের দিন কাটছে। ভীষণ কর্মব্যস্ত মানুষটি সদা অস্থিরতার ভেতরেও নিয়মিত লেখার টেবিলে বসত। জীবনের শেষ সময়টুকুতেও মাথার ভেতরে তার কবিতা ঘুরপাক খেত। সৃষ্টির বিভোরতাই ছিল তাঁর জীবনের প্রধান অবলম্বন। দ্বিতীয় সৈয়দ-হক বলেন, বাবাকে নিয়ে অনেক স্মরণসভা হচ্ছে, যা শোকসভায় পরিণত হচ্ছে। ভাল লাগবে, যখন বাবার সাহিত্যকে আমরা উদ্যাপন করব। তার সৃষ্টিকর্ম থেকে আনন্দ খুঁজে নেব। চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী কবরী বলেন, আমার আজকের এ অবস্থানে আসার পেছনে যেসব গুণীজন ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম সৈয়দ হক। বয়সে ছোট হওয়ায় তাঁর খুব কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তাই যতটুকু সান্নিধ্য পেয়েছি তাঁকে অনুধাবনের চেষ্টা করেছি। এরপর তিনি সৈয়দ শামসুল হকের লেখা থেকে পাঠ করেন। রামেন্দু মজুমদার বলেন, পঞ্চাশের দশকে যে ক’জন লেখক বাংলা সাহিত্যে নতুন অবয়ব দেন তার মধ্যে অন্যতম একজন সৈয়দ শামসুল হক। সৈয়দ শামসুল হকের সর্বাধিক নাটকের নির্দেশক আতাউর রহমান বলেন, রবীন্দ্রনাথ পরবর্তী লেখকদের মধ্যে সৈয়দ শামসুল হকের মতো এমন বহুপ্রভা লেখক বাংলা সাহিত্যে খুব কম এসেছে। শেক্সপিয়রের নাটকের অনুবাদ করা খুব কঠিন বিষয়। সেই কঠিন কাজটি তিনি খুব সহজেই করেছেন। বিশ্বাসাহিত্যের সেই অমূল্য সম্পদকে পৌঁছে দিয়েছেন এদেশের শিল্পের ভুবনে। প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী উৎপল দত্তও সৈয়দ হকের শেক্সপিয়রের অনুবাদ বাংলা সাহিত্যে অতুলনীয় বলে মন্তব্য করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন আতাউর রহমান। গীতিকবি রফিকউজ্জামান বলেন, সৈয়দ শামসুল হক মূলত কবি। তার নাটকগুলোও যেন একেটি কবিতা। সব্যসাচী শব্দটি ব্যবহার করে যেন তার কবি পরিচয়টাকে আড়াল করে ফেলা হয়েছে। এদেশের শ্রেষ্ঠ কবিদের একজন তিনি। অধ্যাপক ড. বিশ^জিৎ ঘোষ বলেন, ব্যক্তির জীবন নিয়ে তিনি লেখা শুরু করেন মুক্তিযুদ্ধের পর তার লেখায় উঠে এল সমষ্টির কথা আর মানুষের কথা। চর্যাপদের অক্ষর থেকে বাংলা সাহিত্যের উঠে আসার কথা । তিনি লেখার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে আনতে শুরু করলেন। সাজ্জাদ শরিফ বলেন, সৃষ্টিশীলতার স্ফূর্তি যে তিনি কতভাবে প্রকাশ করেছেন। কত নতুন নতুন ফর্ম যে সৃষ্টি করেছেন সৃষ্টির আনন্দে Ñ এটা খুব বিস্ময়ের। সৈয়দ হককে পাঠের মধ্য দিয়ে আমাদের অনুভব করতে হবে। মাহবুবুল হক শাকিল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৈয়দ শামসুল হকের হাসপাতালে কথোপকথনের কিছু অংশ বর্ণনা করে বলেন, সেই সময় সৈয়দ শামসুল হক প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, এই মুহূর্তে আপনিই বাংলাদেশ। আপনাকে বেঁচে থাকতে হবে মানুষের জন্য, বাংলাদেশের জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দ হককে বলেছিলেন, আপনাকেও বেঁচে থাকতে হবে। প্রত্যুত্তরে সৈয়দ হক বলেছিলেন, আমার ইচ্ছা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ পালন করে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী তখনই বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষের যে জাতীয় কমিটি হবে তার আহ্বায়ক সৈয়দ শামসুল হক হবেন বলে জানান। অনুষ্ঠানে কবি পিয়াস মজিদ সৈয়দ শামসুল হককে নিবেদন করে শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘কথা হবে’ কবিতাটি পাঠ করেন। কচি-কাঁচার মেলার ৬০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ॥ পথচলার ৬০ বছর পূর্ণ করেছে ঐতিহ্যবাহী শিশু-কিশোর সংগঠন ‘কচি-কাঁচার মেলা’। এ উপলক্ষে সংগঠনের পক্ষ তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী আয়োজন। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নন্দিত সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। সম্মানিত আলোচক ছিলেন মেলার ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী, মেলার সহ-সভাপতি ড. রওশন আরা ফিরোজ, প্রবীণ সদস্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমানুল হক, মেলার সাধারণ সম্পাদক আলপনা চৌধুরী এবং আহ্বায়ক সৈয়দা কানিতা মাঈশা। সভাপতিত্ব করেন-মেলার সভাপতি খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। সমাপনী আয়োজনের শুরুতেই ছিল মেলার শিশু-কিশোর শিল্পীদের পরিবেশনায় ‘সত্য শান্তির গান গেয়ে যায়/আমরা কচি-কাঁচারা...’ শীর্ষক উদ্বোধনী সঙ্গীত। এরপর অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা। শিশু বক্তা আদিবের বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয় সমাপনী আয়োজন। অভিভাবকদের উদ্দেশে মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ছোটদের, ছোটদের মতো করে থাকতে দিন। তাদের মতো করে তাদের নিয়ে ভাবেন। শুধু পড়া আর পড়ার ভেতরে না রেখে ছোটদের খেলতে দিন, আঁকতে দিন, প্রকৃতিকে জানতে দিন। এমনভাবে পড়ার প্রতি চাপ দেবেন না যাতে শিশুরা চাপে পড়ে। তিনি বলেন, পড়াশোনা মানে-ব্রেনকে অক্ষত রাখা। নতুন কিছু সৃষ্টি করার প্রেরণা যোগানো। শুধু পড়ার ভেতরে রেখে শিশুদের ব্রেইনকে ধ্বংস করবেন না। শিশুদের গড়ে তুলতে হলে লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে জড়িত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে ট্যাব-কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা এরকম বিভিন্ন সামগ্রী যেভাবে শিশুরা খেলছে তা ভবিষ্যতে ভাল হবে না। এতে ব্রেনের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। যার ফলে, অটিস্টিক কিংবা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হয়ে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, একটা বাচ্চাকে প্রকৃত অর্থে বড় হতে হলে লেখাপড়ার পাশাপাশি কচি-কাঁচার মতো সংগঠন করতে হবে। গান-বাজনা করতে হবে। নাটক করেতে হবে। সমাজের নানা স্তরের সঙ্গে মিশতে হবে। তাহলে সে বুঝে উঠতে পারবে তাকে সমাজের জন্য, দেশের জন্য, মানুষের জন্য এবং নিজের জন্য কি করতে হবে। আলোচনা শেষেই ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। পরিবেশিত হয় দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের আলোকে নির্মিত নৃত্যনাট্য। এতে উঠে এলো ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত বাঙালীর গৌরবগাথা। এর আগে সকাল থেকে শুরু হওয়া সমাপনী দিনের আয়োজনের শুরুতেই ছিল কচি-কাঁচার মেলার নবীন ও প্রবীণদের মিলনমেলা ও স্মৃতিচারণ সভা। এই মিলনমেলা ও স্মৃতিচারণ সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি বরেণ্য চিত্রশিল্পী অধ্যাপক আবুল র্বাক আলভী, কবি রুবি রহমান, মাহফুজা খানম হেলেন ও দিল মনোয়ারা মনু, মেলার প্রবীণ সদস্য মোঃ মাকসুদুল বাবলু, ফাতেমা সাইফুল বীনু, অসীম রায়, কবি-সংসদ সদস্য কাজী রোজি ও অঙ্কন।
×