ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে প্রেমিকাকে ফেলে দিল পাষণ্ড যুবক

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৮ অক্টোবর ২০১৬

কুয়াকাটায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে প্রেমিকাকে ফেলে দিল পাষণ্ড যুবক

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৭ অক্টোবর ॥ প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে এসে কলাপাড়া হাসপাতালের বিছানায় ক্ষত-বিক্ষত মুখমণ্ডল নিয়ে কাতরাচ্ছে কিশোরী সোনিয়া। অর্ধচেতন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে ভাড়াটে হোন্ডা চালক বেলাল কলাপাড়া হাসপাতালে এনে তাকে ভর্তি করেন। কুয়াকাটা ফিলিং স্টেশনের সামনের মহাসড়কে চলন্ত হোন্ডা থেকে তাকে ফেলে দেয় পাষণ্ড প্রেমিক ওবায়দুল ও তার এক সহযোগী। দুই বছর ধরে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে প্রেম করে পাষণ্ড ওবায়দুল। শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সোনিয়ার সর্বাঙ্গে আঘাতের গুরুতর চিহ্ন। উপরের চোয়ালের দুটি দাঁত ভেঙ্গে গেছে। চোখের ওপর কপালসহ ডানপাশ কেটে গেছে। হাত-পায়ের চামড়া ক্ষত হয়ে গেছে অসংখ্য স্থানে। এখনও অসহায় এ কিশোরীর ক্ষত থেকে রক্ত ঝরছে। জরুরীভিত্তিতে সোনিয়ার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ সেন্টার থেকে আধা কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মহিপুর থানা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে এমন নির্মম ঘটনা ঘটে। তাও মহাসড়কের ওপরে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, সোনিয়ার অর্ধচেতন ক্ষত দেহ মহাসড়কে লুটিয়ে পড়েছিল। তখন পুলিশকে অবহিত করলে হোন্ডা চালকরা অটোযোগে সোনিয়াকে মহিপুরে নিয়ে আসে। সেখানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ভাড়াটে হোন্ডায় তুলে দেয় পুলিশের এসআই আতিকুর রহমান। অভিভাবকহীন শঙ্কটাপন্ন এ তরুণীকে পুলিশের গাড়িতে করে কেন ১৫ মিনিটের পথ কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো না। কেন সঙ্কটাপন্ন সোনিয়াকে ভাড়াটে হোন্ডায় তুলে দেয়া হলো? এ নিয়ে নানা প্রশ্ন জনমনে। এসআই আতিক জানান, আমরা ওবায়দুলকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। সোনিয়ার দাবি কুয়াকাটার আনোয়ার কাজীর ছেলে ওবায়দুল। সোনিয়ার বাড়ি বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার চার নম্বর ওয়ার্ডে। দুই বছর আগে মোবাইলে পরিচয় থেকে প্রেম। সেই সুত্রে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি থেকে বাসে ফুফাত ভাই বাবুলের সঙ্গে কুয়াকাটায় আসে সোনিয়া। খুঁজে বের করে প্রেমিক ওবায়দুলকে। তখন রাত কেবল নেমেছে। এ সময় বাবুলের কাছে টাকা দাবি করে ওবায়দুল। এরপর বাবুল লাপাত্তা হয়ে যায়। রাতে হোটেলে রাখার কথা বলে সোনিয়াকে হোন্ডায় তোলা হয়। বিভিন্ন স্পটে ঘোরানো হয়। রাত বাড়তে থাকে। এক সময় তার মোবাইল ফোন ও পার্টস ছিনিয়ে নেয় ওবায়দুল। এরপর তাকে হোন্ডা থেকে ফেলে দেয়া হয়। হোন্ডা থেকে ফেলে দেয়ার পরও হোন্ডা টেনে ধরেছিল সে। ওবায়দুলকে আটকানোর চেষ্টা করেছিল। রাস্তায় চলন্ত হোন্ডা থেকে পড়ে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকে সোনিয়া। ওবায়দুলের চাচাত ভাই জাকির নামে এক যুবক গোটা বিষয়টি অবগত ছিল বলে সোনিয়া জানায়। সোনিয়ার কাছ থেকে পাওয়া ওবায়দুলের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ডাঃ লেনিন জানান, সোনিয়ার আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তার মুখমণ্ডলসহ হাতে-পায়ে অসংখ্য ক্ষত রয়েছে। মহিপুর থানার ওসি এসএম মাকসুদুর রহমান জানান, ওবায়দুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
×