স্টাফ রিপোর্টার ॥ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীর রহস্যজনক হত্যাকা-ের কিনারা হয়নি। মামলার একমাত্র আসামি আব্দুল আহাদকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেই রহস্যের কিনারা হবে বলে মনে করছে পুলিশ ও নিহতদের পরিবার। বাড়ির গৃহকর্মী আসামি আব্দুল আহাদকে গ্রেফতার করতে তার সিলেটের গ্রামের বাড়ি ছাড়াও সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাফরুল থানায় নিহতের ভাতিজা রেশাদ আহমেদ চৌধুরী বাদী হয়ে বাড়ির গৃহকর্মী আব্দুল আহাদসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়, নিহত ওয়াজি আহমেদ চৌধুরী (৭৬) ১৯৯২ সালে অবসরে যান। তার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জে। নিহতের স্ত্রী আতিয়া চৌধুরী বছর ছয়েক আগে মারা যান। তাদের বড় ছেলে নাবিদ আহমেদ চৌধুরী (৪৪) প্রায় এক দশক ধরে আমেরিকায় বসবাস করছেন। ছোট ছেলে ফুয়াদ আহমেদ চৌধুরী (৪০) বাক প্রতিবন্ধী। ছোট ছেলেকে নিয়ে তিনি ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএসের ৪ নম্বর রোডের ১৪৮ নম্বর বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
বুধবার সন্ধ্যার পর ফুয়াদ বাড়িতে ফিরে তার পিতাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত ঢাকা সেনানিবাসে অবস্থিত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়। পুলিশ জানায়, উদ্ধারকালে লাশের গলায় কালো দাগ এবং বুকের বাঁ পাশে আর ডানপায়ের গোড়ালিতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ সোহেল মাহমুদ জানান, ওয়াজি আহমেদ চৌধুরীর গলায় রশি পেঁচিয়ে পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে আলামত পাওয়া গেছে।
মামলার বাদী জানান, দুই মাস আগে তার চাচার বাসায় পরিচিত একজনের মাধ্যমে আব্দুল আহাদ (৩৫) নামের একজন গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দেন। চাচা খুন হওয়ার পর থেকেই ওই গৃহকর্মীর সন্ধান নেই। বাসা থেকে একটি টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও টাকা পয়সা খোয়া গেছে। গৃহকর্মী চাচাকে হত্যা করে বাসা থেকে টাকা পয়সা ও মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে পালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওয়াজি আহমেদের ছোট ভাই সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর জেনারেল এজাজ আহমেদ চৌধুরী জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি সিলেটে। গৃহকর্মী আব্দুল আহাদের বাড়িও সিলেটে। একজন পরিচিত লোক আব্দুল আহাদকে তার ভাইয়ের বাসায় কাজে দিয়েছিল। আব্দুল আহাদই ভাইকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক এসএম মুকুল মিয়া জানান, আব্দুল আহাদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আসামির সিলেটের গ্রামের বাড়ির পাশাপাশি সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে। আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলে হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।