ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তামিম-সাকিব বনাম রয়-স্টোকস

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ৭ অক্টোবর ২০১৬

তামিম-সাকিব বনাম রয়-স্টোকস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যে কোন সিরিজেই বাংলাদেশ দলের অন্যতম নির্ভরতার নাম সাকিব আল হাসান। একাধারে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে অনেকবারই দলকে জিতিয়েছেন সাকিব। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আজ থেকে শুরু হওয়া ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও তাই বিশ্বসেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডারের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ দল। একইসঙ্গে গতবছর থেকে ধারাবাহিকভাবে রানের মধ্যে থাকা বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল হয়ে গেছেন দলের ব্যাটিং স্তম্ভ। তার ব্যাট থেকে বড় ইনিংস পাওয়ার প্রত্যাশা থাকবে বাংলাদেশ দলের। অপরদিকে ইংল্যান্ড দলের হয়ে এবার সফরে নেই অপরিহার্য ওপেনার এ্যালেক্স হেলস, জো রুটের মতো নিয়মিত পারফর্মাররা। তবে ফর্মের তুঙ্গে থাকা জেসন রয় এবং পেস অলরাউন্ডার বেন স্টোকসকে নিয়েই এবার বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে জন বাটলারের দল। এ দুই ক্রিকেটারের ওপর বিশেষ ভরসা নিয়ে তাকিয়ে থাকবে ইংলিশরা। দীর্ঘ ৬ বছর পর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। ২০১০ সালে অবশ্য ভাল হয়নি ফলাফলটা, শতভাগ ব্যর্থ হয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে, গত দেড় বছরে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে টাইগাররা। বিশেষ করে ঘরের মাটিতে হয়ে উঠেছে দুর্বার। এর পেছনে দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের ধারাবাহিক দুর্দান্ত নৈপুণ্য অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে। সেক্ষেত্রে ব্যাট হাতে এগিয়ে আছেন তামিম। ২৭ বছর বয়সী এ বাঁহাতি ওপেনার সর্বশেষ ১৫ ওয়ানডেতে দেখিয়েছেন দেশের মধ্যে সর্বসেরা ধারাবাহিক নৈপুণ্য। ৬২.০০ গড়ে ৩ সেঞ্চুরি ও ৫ অর্ধশতকসহ তিনি করেছেন ৮০৬ রান। এছাড়া এর মাঝে টি২০ বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত খেলেছেন তামিম। এ সময়ের মধ্যে ১৩ টি২০ খেলে ৩৮.১৮ গড়ে তিনি ৪২০ রান করেন একটি অর্ধশতক ও একটি সেঞ্চুরিসহ। সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজেও ব্যাটিংয়ের ধারাটা অব্যাহত ছিল তামিমের। প্রথম ম্যাচে ৮০, দ্বিতীয় ম্যাচে ২০ এবং শেষ ম্যাচে ১১৮ রানের দারুণ ইনিংস উপহার দিয়েছেন। উইকেটে তামিম থাকা মানেই যে কোন দলের বোলারদের জন্য তিনি হুমকির কারণ। সে কারণে ইংল্যান্ড দলকে ভাবতে হবে তাকে নিয়ে। আর সাকিব কখনও বাজে সময়ের মধ্যে থাকলেও তাকে নিয়ে ভাবতেই হয়েছে প্রতিটি দলকে। দেশের মাটিতে তার বাঁহাতি স্পিনটা ভয়ানক সফরকারী দলের জন্য। এবার আফগানরাও সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজে সেটা টের পেয়েছে। অতীতেও অনেকে সেটা দেখেছে। অবশ্য ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তেমন সুবিধাজনক নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি সাকিব ওয়ানডে ক্রিকেটে। ৯ ম্যাচ খেলেছেন ২২.৭৫ গড়ে মাত্র ১৮২ রান করার পাশাপাশি ১১ উইকেট নিয়েছেন। ব্যাট হাতে না পারলেও সাকিব বল হাতে জ্বলে ওঠার ক্ষমতা রাখেন। সে কারণেই তাকে নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়তি পরিকল্পনা সাজাতে হয়। এখন পর্যন্ত সে কারণেই ৪১৬ রেটিং নিয়ে তিনি বিশ্বসেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডার। বোলিং র‌্যাঙ্কিংয়েও আছেন চার নম্বরে। তাই ইংলিশদের বিরুদ্ধে ধীরগতির উইকেটে তিনি অনেক বড় ভরসার কারণ হবেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরেই প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র কিছুদিন আগে দলের নেতৃত্ব নিয়েছিলেন ইয়ন মরগান। তবে বিশ্বকাপের পরই দলে সুযোগ করে নিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। এর মধ্যে অন্যতম জেসন রয়। ২৬ বছর বয়সী এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ওয়ানডে অভিষেকের পর থেকেই অন্যতম অপরিহার্য ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেছেন তিনি। বাংলাদেশী বোলারদের জন্য তিনি নিশ্চিতভাবেই অনেক বড় হুমকির কারণ হয়ে উঠবেন এতে কোন সন্দেহ নেই। গত ১৮ মাস ব্যাট হাতে উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে গেছেন তিনি। সর্বশেষ ৯ ম্যাচেই ২ সেঞ্চুরি ও ২ হাফসেঞ্চুরিসহ করেছেন ৭০.৫৭ গড়ে ৪৯৪ রান। দ্রুত রান তোলার ক্ষেত্রেও সিদ্ধহস্ত রয় বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞতাও আছে, খেলেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে। তার সঙ্গে আরেক বড় ভরসার নাম স্টোকস। অনেক আগেই ইংল্যান্ড দলে অভিষেক হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এ অলরাউন্ডার হয়ে উঠেছেন দুর্বার। বেশ কয়েকটি ম্যাচ তিনি একাই জিতিয়েছেন দলকে ব্যাট ও বল হাতে চৌকষ নৈপুণ্য দেখিয়ে। সর্বশেষ ১২ ম্যাচে ব্যাট হাতে ৪২.৫০ গড়ে ৪২৫ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ৫ উইকেট। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গত মাসে ওয়ানডে সিরিজে টানা দুটি বিধ্বংসী অর্ধশতক হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়েছেন। এ কারণে ২৫ বছর বয়সী এ বাঁহাতি তরুণের ওপর আস্থা নিয়েই তাকিয়ে থাকবে ইংলিশরা। বাংলাদেশের জন্যও বেশ সমস্যার সৃষ্টি করবেন এ অলরাউন্ডার সেটাও পরিষ্কার হয়েছে প্রস্তুতি ম্যাচে ২৮ রান করা এবং ২ উইকেট নেয়ার পর।
×