ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু, রেজা নওফল হায়দার ও আকিল জামান ইনু

চালকবিহীন গাড়ি

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ৭ অক্টোবর ২০১৬

চালকবিহীন গাড়ি

এলিয়েন নিয়ে ঘোর প্যাচ যেন সবারই আছে। এবং সেটা ছোট বেলার কল্পনাতেই তা বেশি সুন্দর। ভাবতে ভালই লাগতো যে পৃথিবীর বাইরের মানুষগুলো কেমন? তাদের চলা ফেরাই বা কেমন? কি খেয়ে বেঁচে থাকে ইত্যাদি। যে কারণে স্পেসশীপ কিংবা এলিয়ন নিয়ে বানানো কার্টুন কিংবা মুভি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। তবে এসব যে অলীক কল্পনা নয় তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বর্তমান সময়ের শীর্ষ বিজ্ঞানী মহাকাশ গবেষক ও ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজের সেন্টার ফোর থিওরিটিক্যাল কসমোলজির গবেষণা পরিচালক স্টিফেন হকিং তো বলেই দিয়েছেন যদি আমরা ভিনগ্রহের প্রাণীদের অনুসন্ধান বন্ধ করে দেই তাহলে হয়তো তারা আমাদের সবাইকে মুছে ফেলবে। ভিনগ্রহের কোন প্রাণীর সঙ্গে যখন আমাদের যোগাযোগ হয়, তখন বিষয়টি অনেকটা নেটিভ আমেরিকানদের সঙ্গে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের প্রথম সাক্ষাতের মতো বলে তুলনা করেন তিনি। ‘স্টিফেন হকিং’স ফেভারিট প্লেইসেস’ নামের অনলাইনে পোস্ট করা একটি চলচ্চিত্রে এমন সতর্কতা জারি করেন হকিং। চলচ্চিত্রটিতে দেখানো হয়, তিনি স্পেসক্রাফটের মাধ্যমে মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থান পর্যবেক্ষণ করছেন। তার মধ্যে একটি স্থান হচ্ছে পৃথিবী থেকে ১৬ আলোকবর্ষ দূরে একটি গ্রহ- গ্লিজ ৮৩২ সি। এই স্থানে ভিনগ্রহের প্রাণী থাকার ধারণা প্রকাশ করা হয়, যা আমাদের জন্য ভাল নাও হতে পারে, দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি যত বড় হয়েছি ততই উপলব্ধি করেছি যে, আমরা একা না। সারা জীবন চিন্তা করার পর আমি বিশ্বজুড়ে একটি নতুন প্রচেষ্টাকে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছি।’ “‘দ্য ব্রেকথ্রু লিসেন’ প্রকল্পটি প্রাণের চিহ্ন খোঁজার জন্য কাছের লাখো তারা স্ক্যান করবে, কিন্তু আমি জানি কোন স্থান থেকে খোঁজা শুরু করতে হবে। হতে পারে একদিন আমরা গ্লিজ ৮৩২সি-এর মতো স্থান থেকে সিগন্যাল পেতে পারি, কিন্তু আমাদের জবাব দেয়ার জন্য সতর্ক থাকা উচিত।” ভিনগ্রহের প্রাণীদের সঙ্গে আলাপ নিয়ে সতর্কবার্তা হকিং আগেও দিয়েছেন। তবে এ নিয়ে কল্পনার রাজ্য থেকে বাস্তবে মানুষ কে ফিরিয়ে আনা বেশ কঠিন। কারণ এখন পর্যন্ত এলিয়নের কোন চিহ্ন মানুষের সামনে ধরা দেয়নি। তবে এও সত্যি অনেক অবিশাস্য ব্যাপারই আমাদের সামনে এসে হাজির হচ্ছে। এই যেমন স্বচালিত গাড়ি। অর্থাৎ ড্রাইভার ছাড়াই যে গাড়ি যাত্রী নিয়ে ছুটে চলবে মাইলকে মাইল। স্বচালিত গাড়ি একটা সময় রিমোর্ট কন্ট্রোলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থাৎ খেলনা গাড়ির কনসেপ্ট। এটা যে সত্যি সত্যি একদিন মানুষের সামনে হাজির হবে সেটা গত বছরেও ছিল কল্পনার গ-িতে। কিন্তু আজ তা বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই হাজির হতে যাচ্ছে স্বচালিত গাড়ি। মূল ধারণা হচ্ছে এটা একটি সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত গাড়ি। ড্রাইভারসহ কিংবা ড্রাইভার ছাড়াই গাড়ি চলবে। যদিওবা ড্রাইভার থাকেও সে ক্ষেত্রে তাকে কোন কষ্ট করতে হবে না। কারণ নির্দেশনা দেয়া মাত্রই নিজেই নিজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছুটে চলবে গাড়ি। ধারণাটি নিখুঁত বাস্তবতায় পরিণত হলে কেবল গাড়ি প্রযুক্তিতেই নয় বৈপ্লবিক আকার ধারণ করবে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে। স্বচালিত গাড়ির ধারণা এক সময় অকল্পনীয় হলেও বর্তমানে তা বাস্তবের খুব কাছাকাছি। এ গাড়ি আবিষ্কারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবেশ দূষণ রোধ, জ্বালানি তেল সাশ্রয়, দুর্ঘটনা রোধ এবং শক্তির ভিন্ন রূপের ব্যবহার। অর্থাৎ প্রচলিত জ্বালানি নির্ভর গাড়ির পরিবর্তে বিদ্যুতনির্ভর স্বচালিত গাড়ি। এটি হতে পারে সৌরশক্তি নির্ভর অথবা প্রচলিত বিদ্যুত থেকে শক্তি সংগ্রহের মাধ্যমে। এই স্বপ্নটি বাস্তবায়নে অন্যতম বড় বিনিয়োগকারী হচ্ছে এলেন মাস্ক এর টেসলার কোম্পানি। পাশাপাশি এ্যাপেলের মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পটি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। এবং অ্যাপেলের সর্বাধিক গোপনীয় প্রজেক্টের মধ্যে এটি একটি। তবে এলেন মাস্ক এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে। স্বচালিত গাড়ি সম্পন্ন করার দ্বারপ্রান্তে তিনি। ইতোমধ্যে বেশকিছু সফলতা অর্জন করলেও বেশকিছু আইনগত জটিলতা এবং আরও কিছু উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে গাড়িটি এখনও সেভাবে বাজারে ছাড়তে পারেনি। কিন্তু মাস্কের টেসলা মটরস অথবা এ্যাপেল কিংবা অন্য কোন বৃহৎ মোটর কোম্পানি যারা এ ধরনের গাড়ি উদ্ভাবনে নিয়োজিত তারা ধারণাটিকে বাস্তবতার পর্যায়ে আনতে পেরেছেন। এখন একথা বলাই যায় স্বচালিত গাড়ি আর নয় কোন অলিক কল্পনা বা খুব দূরের বিষয়। স্বচালিত গাড়ির ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে সবচেয়ে বেশি গোপনীয়তা রক্ষা করে চলছে এ্যাপেল। তবে অনেকেরই ধারণা এ গোপনীয়তা বেশিদিন ধরে রাখতে পারবে না এ্যাপেল। এ ব্যাপারে এলেন মাস্ক তো বলেই বসলেন, এ্যাপেল হয়তো বা বিদ্যুতচালিত গাড়ি তৈরি করতে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারটা গোপন রাখা বেশ কঠিন হবে। যখন হাজারটা ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করবেন তখন এটা গোপন কতটুকু থাকবে তা দেখার বিষয়। তবে মাস্ক অন্যের কৌশলের অপেক্ষা না করে নিজের কাজটা অবশ্য অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই মোটর বিষয়ক ম্যাগাজিন ব্লুমবার্গ রিপোর্ট করে যে, এ্যাপেল হয়তো বড়সড় একটা ইলেক্ট্রিক চার্জিং স্টেশন দিতে যাচ্ছে। এতে অনেকেই ধারণা করে নেন যে, বৈদ্যুতিক গাড়িগুলো সেখানে চার্জ হবে। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, এ্যাপেল ড্যান ডডগি কে নিযুক্ত করেছেন যিনি ফিউ এন এক্স এর সাবেক সিইও। যেখানে তিনি অটোমেটিক সফটওয়্যার ডিপার্টমেন্ট এর প্রধান ছিলেন। তার মতো লোকের এ্যাপেলে নিয়োগ মানেই হচ্ছে একটা স্বচালিত গাড়ির সফটওয়্যার তৈরি করা। যে বিষয়টা এখন অনেকের কাছেই পরিষ্কার। ওয়ার্ন স্ট্রিট জার্নাল এর মতে, এ্যাপেলের গাড়িটি হবে বৈদ্যুতিক ব্যাটারিচালিত যান। কিন্তু প্রাথমিকভাবে গাড়িটি চালনার দক্ষতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তবে এ্যাপেলের বর্তমান সিইও টিম কুক ২০১৫ তে ওয়ার্ল্ড স্টিট জার্নালের এক বিবৃতিতে বলেছেন সকল বাধা অতিক্রম করেই গাড়িটি বাজারে আসবে এবং তা ২০১৯ সালের মধ্যেই। আর আমাদের এই ধারণা অটোমোবাল সেক্টরে একটি বড় পরিবর্তন আনবে। অনেকেই আমার এ ধারণার সঙ্গে একমত পোষণ নাও করতে পারেন তবে ভবিষ্যতে আমরা কি করব তা দেখার বিষয়। সত্যিই অবাক করা ব্যাপার হবে যখন দেখবেন, গাড়িতে ওঠা মাত্রই শুধু একটি কমান্ড আপনাকে নিয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। দেখছেন গাড়ি চলছে কোন রকম চালক ছাড়াই। তবে সবগুলো কোম্পানি বিপাকে রয়েছে এই চালক সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে। খোদ যুক্তরাষ্ট্র চালকহীন গাড়ির বিপক্ষে। তাই বলে স্বচালিত গাড়ির বিপক্ষে নয়। গাড়িটি স্বচালিত হতে পারে তবে অবশ্যই তাতে চালকের আসনে চালককে থাকতে হবে। তা না হলে নানা রকমের জটিলতা নাকি সৃষ্টি হতে পারে। সেসব চিন্তা মাথায় রেখে তাই স্বচালিত গাড়ির প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো চালকের আসনে হয়তো চালককে বসাবেন শুধু কমান্ড টি ঠিক মতো দেয়ার জন্য। এছাড়া চালকের আর কোন কাজ থাকবে না। তবে এ ধারণার অনেকটাই উল্টো পথে চীন। তারা বরং চালকহীন গাড়িকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। এতে করে নাকি তাদের সড়কপথে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যাবে। আর আগ্রহের কারণেই এ্যাপেল, গুগল অনেকেই এখন চীনাদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ্যাপল সম্প্রতি চীনের একটা গণপরিবহন কোম্পানির পেছনে ১শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্তটা নজিরবিহীন এবং হেঁয়ালিপূর্ণ মনে হতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে গাড়ির পেছনে কেন এই বিনিয়োগ। আর বিনিয়োগ যদি করতেই হয় সেই অর্থটা নিজ দেশ যুক্তরাষ্ট্রেই করা নয় কেন? প্রশ্ন যেটাই থাক, সিদ্ধান্তটা যে হঠাৎ করেই বা দৈবাৎ নেয়া হয়েছে তা নয়। অটোমেশনের মতো যুগান্তকারী প্রযুক্তির বদৌলতে আজ মোটরগাড়ি শিল্পে দ্রুত ও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে চলেছে। চীন আগামী প্রজন্মের মোটরগাড়ি প্রযুক্তির জন্য নিজেকে তৈরি করতে বিস্ময়কর গতিতে এগিয়ে চলেছে। সে দেশের সরকারী কর্মকর্তারা ২০২০ সাল নাগাদ মহাসড়কে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ শহরের রাস্তায় সম্পূর্ণরূপে চালকহীন গাড়ি নামানোর একটি খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল আইন, রাজ্য সরকারের আইনও স্থানীয় মোটরযান আইন একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে এমন এক জট বেঁধে আছে যে মোটরযান অটোমেশনের ক্ষেত্রে সেখানে ঝট্ করে কিছু করতে যাওয়া সম্ভব নয়। এদিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের পার্থক্য আছে। চীনে অধিকতর কেন্দ্রীভূত সরকার থাকায় সেই সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তেই অনেক কিছু করে ফেলা সম্ভব। আর তার ফলেই চীন মোটরগাড়ির অটোমেশন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে পেছন থেকে এসে টপকে যেতে পারে। চীনে মোটরগাড়ির মালিকানার হার এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সামান্য অংশ মাত্র। সেখানে এক হাজার লোকের জন্য গাড়ি আছে ২শ’রও কম। তথাপি চীনের বিশাল জনসংখ্যার কারণে পরিবেশ দূষণ, যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু- এইসবই দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের প্রতি হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে ২০১৩ সালে চীনে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে। অথচ একই সময় যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে ৩৪ হাজার। চীনের কোথাও কোথাও যানজট কয়েকদিন ধরে থাকে। ২০১০ সালে এমনি যানজটের একটা রেকর্ড হয়েছিল। যাই হোক, এ্যাপলের সম্প্রসারণ শেষ পর্যন্ত অটোমোবাইল শিল্পেও বিস্তৃত হয়েছে এই নিয়ে নানা ধরনের গুজব এখনও চলছে। সেই গুজবের মধ্যে কোম্পানির দিক থেকে এটা বুঝতে পারা গুরুত্বপূর্ণ যে বিশ্বে গাড়ির সবচেয়ে বড় বাজার কিভাবে কি করতে হবে তা নিয়ে কি ভাবছে। এ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম বুক সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে এ কাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আভাস দিয়ে বলেছিলেন যে ইউবার কোম্পানির চীনা সংস্করণ ডিডি চুজিংয়ে বিনিয়োগ থেকে চীনের বাজারের নির্দিষ্ট কিছু অংশ সম্পর্কে আরও কিছু জানবার সুযোগ পাওয়া যাবে। গণপরিবহন কোম্পানিতে এ্যাপলের এই সহায়তা নানা দিক দিয়ে যথেষ্ট অর্থবহ। এর মধ্য দিয়ে যে অংশীদারিত্ব গড়ে উঠছে তাতে আমেরিকার এই বিশাল হাইটেক কোম্পানিটি বিশ্বব্যাপী আইফোন বিক্রির ক্ষেত্রের মন্দার হাত থেকে রক্ষা পাবে। এতে করে চীনে এ্যাপল আরও বৃহত্তর পরিসরে দৃশ্যমান হতে পারে। মোটরগাড়ি শিল্প এবং সেই সঙ্গে গুগল ও গণপরিবহন ফার্ম ইউবারের মতো টেক কোম্পানিগুলো মনে করে যে চালকের আসন থেকে মানুষকে বের করে আনা হলে যানজট কমবে এবং জীবন রক্ষা পাবে। মানুষের ভুলের জন্য শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি মোটরগাড়ির দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। মানবচালিত যানের বদলে স্বয়ংচালিত গাড়ির বহর চালু করা হলে চালকরা নিজেদের ভ্রান্তি লাঘব করতে পারে। বলতে গেলে প্রতিটি বড় ধরনের গাড়ি প্রস্তুতকারীরাই স্বয়ংচালিত গাড়ির ক্ষমতা ও সামর্থ্য নিয়ে গবেষণা করে আসছে। কেউ কেউ আবার গাড়ি ব্যবহারের নতুন রূপ নিয়ে গবেষণার জন্য গণপরিবহন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্র জেনারেল মোটরস মোটরগাড়ির অটোমেশনে গবেষণার অংশ হিসেবে লিফটে অর্ধ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ব্যবসায় মহল ও সরকার উভয় পরিসরের চীনা কর্মকর্তারাও চালকহীন গাড়ির ধারণাটি সাদরে গ্রহণ করেছেন। গত এপ্রিল মাসে স্থানীয় কোম্পানি চ্যাংঅ্যান অটোমোবাইলের তৈরি দুটি স্বয়ংচালিত গাড়ির প্রথম দূরপাল্লার পরীক্ষা চালানো হয়। গাড়ি দুটো মাহসড়ক দিয়ে চোংকিং থেকে বেজিং পর্যন্ত প্রায় ১২৫০ মাইল পথ চারদিনে পাড়ি দেয়। একই মাসে ভলভো ঘোষণা করে যে তারা শীঘ্রই তাদের একশ’ প্রোটোটাইপ গাড়ি চীনের রাস্তায় ছাড়বে। বাইদু ও আলীবাবার মতো চীনের সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি দেশীয় ফার্ম স্বয়ংচালিত গাড়ি প্রযুক্তির পেছনে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করছে। বাইদু তার নিজস্ব প্রোটোটাইপ এ বছর যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করবে। এটা হবে গুগলের প্রতি একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে। মোটরগাড়ি কোম্পানিগুলো ডেইমলার, এজির মতো পাশ্চাত্য কোম্পানির কাছ থেকে মেধা চালান করে নিয়ে আসার জন্য ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করছে। প্রযুক্তির এই উৎকর্ষতার যুগে আমরা এখন অনেক এগিয়ে। যা এক সময়ে কল্পনাতে আনতেও দু’বার ভাবতে হতো তাই এখন বাস্তবে ধরা দিচ্ছে। স্ব-চালিত গাড়ি তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বলা তো যায় না হয়তো একদিন খোঁজ মিলবে এলিয়নদের। যারা পৃথিবীর মানুষদের আমন্ত্রণে স্পেসশীপ নিয়ে একদিন হাজির হবে। তবে বিজ্ঞানের আবিষ্কার যেভাবে এগুচ্ছে তাতে চোখের পলকে কোন ঘটনা ঘটে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। অপেক্ষা শুধু বাস্তবায়নের। বিজ্ঞানের বদৌলতে পৃথিবী যেমন ক্রমেই ছোট হয়ে হাতের মুঠোয় চলে এসেছে ঠিক সেভাবে প্রকা- মহাকাশও ছোট হয়ে ধরা দেবে মানুষের হাতে।
×