ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাগমারায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে ফের বিতর্ক

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ৭ অক্টোবর ২০১৬

বাগমারায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে ফের বিতর্ক

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক ও সহিংসতার শঙ্কায় গত মে মাসে নির্বাচনের দুই দিন আগে স্থগিত করা হয় বাগমারা উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। চার মাস পর নির্বাচন কমিশন পুনঃতফসিল ঘোষণার পর আবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মনোনয়নের পর উপজেলার গোয়ালকন্দি ইউপির প্রার্থী নিয়ে হৈ চৈ পড়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগে। বৃহস্পতিবার শেষদিনে নির্বাচন অফিসে নতুন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীরা। আগামী ৩১ অক্টোবর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি এ ইউনিয়নে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আলমগীর সরকার। তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিল এমন অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালামের দলীয় মনোনয়ন বাতিল করে এবার আলমগীর সরকারকে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে টানাপোড়েন চলছে ওই ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে। স্থানীয়দের অভিযোগ মনোনয়ন পাওয়া আলমগীরের বাড়িতে জেএমবির মিডিয়া সেল ছিল। যেখানে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলাভাই নিয়মিত গোপন বৈঠক করেছে। যার ভিডিও চিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশিত হয়েছে। তারপরেও এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার মাসুদ রানার নির্দেশে জেএমবির নেতাদের তার বাড়িতে বৈঠক করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল বলে দাবি করে আলমগীর সরকার বলেন, আপ্যায়নের জন্য তিনি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জেএমবির সঙ্গে জড়িত নন। তিনিসহ তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত বলে জানান তিনি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, এবার দলীয় মনোনয়নের জন্য জেলার কাছে কোন তালিকা চাওয়া হয়নি। কেন্দ্র থেকে সরাসরি দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আসাদ জানান, আলমগীর সরকারের বাড়িতে ২০০৪ সালে জেএমবি নেতাদের বৈঠক হতো তা সবাই জানে। তার ভিডিওচিত্র আছে। সে কারণে গতবার (মে মাসে) তার নাম পাঠানো হয়নি। তবে এবার তিনি কীভাবে দলীয় মনোনয়ন পেলেন তা জানা নেই বলে জানান আসাদুজ্জামান আসাদ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাহেদুল ইসলাম বলেন, ২০০৪ সালে আলমগীর সরকার ও তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর সরকার জেএমবির সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের বাড়িতে গোপন বৈঠক করে তালিকা তৈরি করা হতো। সে তালিকা অনুযায়ী জেএমবির সদস্যরা আওয়ামী লীগ কর্মীসহ এলাকার লোকজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন ও চাঁদা আদায় করতেন। দলে আনুষ্ঠানিক যোগদান না করলেও ২০১২ সাল থেকে আলমগীর দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন। এদিকে বৃহস্পতিবার দলীয় মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীতরা ছাড়া বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিল করেন।
×