ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বনপাড়ায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি, প্রশাসন নির্বিকার

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৭ অক্টোবর ২০১৬

বনপাড়ায় বেপরোয়া চাঁদাবাজি, প্রশাসন নির্বিকার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৬ অক্টোবর ॥ ইগ্রামের বনপাড়া বাইপাস কলার আড়তে নিয়মিত চাঁদাবাজির মাধ্যমে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে ইজারার রসিদ কেটে টাকা দেয়ার পরেও একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে রেহাই মিলছে না কারও। চাঁদা না দিলে বিক্রেতা, তৃণমূল ও বাইরের ব্যবসায়ীদের সইতে হয় লাঞ্ছনা। ফলে ক্রমাগত লোকসান, আর মনের ক্ষোভে আড়ত ছাড়ছেন অনেক ব্যবসায়ী। কলা রফতানির উপর প্রত্যক্ষভাবে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ফলে একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক ও ব্যবসায়ী। এদিকে, বিগত চার-পাঁচ বছর ধরে কলা আড়তে চাঁদাবাজি অব্যাহত থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোন কার্যকরী পদক্ষেপ। চাঁদাবাজদের উপদ্রবে পুলিশের এমন নীরব ভূমিকা জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এদিকে কলার আড়তে চাঁদাবাজি বন্ধে প্রতিকার চেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। তবে, বিষয়টি নিরসনে তদন্তসাপেক্ষে পদক্ষেপ নেয়ার হবে বলে জানায় বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। জানা গেছে, বড়াইগ্রামের বনপাড়া বাইপাস এলাকায় অবস্থিত জেলার বড় কলা আড়তে দীর্ঘদিন থেকেই একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় আড়ত পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখার দোহাই দিয়ে সোলেমান, ইয়াছিন, কিয়ামুদ্দিনসহ একটি চাঁদাবাজ চক্র সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবারে কলার আড়তে চাঁদাবাজি করে আসছে। ইজারাদারদের নির্ধারিত প্রতি কান্দ কলার ইজারা মূল্য পরিশোধ করার পরেও বিনা রসিদে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করছে চক্রটি। ইজারাদারকে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করার পরেও নতুন করে বিনা রসিদে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চক্রটির হাতে মাঝেমধ্যেই বিভিন্নভাবে হয়রানি, মারপিটসহ লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন কলা ব্যবসায়ীরা। চাঁদা চাওয়া মাত্র কলার কান্দ প্রতি নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা তাদের হাতে তুলে না দিলেই বিক্রেতার কাছ থেকে কলার কান্দ জোর করে কেড়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে বিনষ্ট করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের পেটে লাঠি মেরে চলেছে চক্রটি। চাঁদাবাজির সমুদয় অর্থ ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে লুটেপুটে খাচ্ছে চাঁদাবাজ ও প্রভাবশালী মহলটি বলে জানিয়েছে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র। অন্যদিকে, আদায়কৃত চাঁদার একটা বড় অংশ মাদকের পেছনে ব্যয় হচ্ছে বলেও জানায় সূত্রটি। তবে, আড়তে সক্রিয় চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সাধারণ জনগণের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। যেন দেখার কেউ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাক বন্দোবস্ত সমিতির এক নেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। চাঁদাবাজির কারণে লোকসানে পড়ায় অনেক ব্যাপারি বড় এই আড়তে ব্যাবসা করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। চাঁদাবজির বিষয়ে প্রশাসনসহ নেতৃস্থানীয় কেউ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এভাবেই চলছে সবকিছু। বিষয়টি দেখার কেউ নেই। বড়াইগ্রাম থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে, তদন্ত সাপেক্ষে চাঁদাবাজি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি।
×