ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রেলওয়েতে যোগ হচ্ছে নতুন ২শ’ কোচ

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৫ অক্টোবর ২০১৬

রেলওয়েতে যোগ হচ্ছে নতুন ২শ’ কোচ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যাত্রী সেবার মান বাড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২০০ নতুন কোচ যোগ হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পসহ মোট আটটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৪৮৮ কোটি টাকা। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে পাওয়া যাবে প্রায় ২০ কোটি টাকা। অবশিষ্ট প্রায় ২ হাজার ২৮ কোটি টাকা যোগান দেয়া হবে বৈদেশিক সহায়তা থেকে। সভায় ‘রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন আপগ্রেডেশন প্রজেক্ট (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ৩৫৩ কোটি ৭২ লাখ আর প্রকল্প সাহায্য হিসেবে জাইকা দেবে এক হাজার ৪৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। প্রকল্পটি তৃতীয়বারের মতো সংশোধিত আকারে অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্পে অনুমোদন দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী গ্রামাঞ্চলে স্থাপিত সোলার প্যানেলগুলোকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। সোলার প্যানেল ব্যবহারে জার্মানি সারা বিশ্বে অগ্রগণ্য। এক্ষেত্রে দেশটি কিভাবে সোলার প্যানেলের সর্বোচ্চ ব্যবহার করছে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০০ এমজি যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্পটিও সভায় অনুমোদন পেয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ২১৪ কোটি টাকা। চীনের কাছ থেকে প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে ৭১৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এখনও রেল কোচ তৈরির সক্ষমতা আমাদের হয়নি। তবে রেলওয়ের উন্নয়নে গৃহীত মহাপরিকল্পনার আওতায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশেই রেল কোচ তৈরি হবে। বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা না থাকলে দেশের সব জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে জানান তিনি। ঢাকার আজিমপুরে জুডিসিয়াল কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পটিও অনুমোদন পেয়েছে। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে ৯৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। প্রকল্পে অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজিমপুরের আবাসিক ভবনগুলো পাকিস্তান আমলে তৈরি। বেশিরভাগ ভবনই এখন জরাজীর্ণ। এসব ভবন ভেঙ্গে নতুন করে মাত্র কয়েকটি বহুতল ভবন নির্মাণ করতে হবে। এতে অল্প জায়গায় সবার আবাসন করা যাবে। বাকি জায়গা শিশু ও বয়স্কদের বিনোদনের জন্য ব্যবহার করা যাবে। আজিমপুরের জন্য একটি কেন্দ্রীয় পৃথক সোলার প্যানেল প্ল্যান্ট (এসটিপি) নির্মাণের নির্দেশও প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। অনুমোদন পেয়েছে শ্যামগঞ্জ-জারিয়া-বিরিশিরি-দুর্গাপুর জেলা মহাসড়ককে জাতীয় মহাসড়ক মানে উন্নয়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১৬ কোটি। পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নেত্রকোনা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সুমেশ্বরী নদীর নাব্য রক্ষায় নদীটিতে ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ ও সুমেশ্বরী নদীর মূল্যবান বালু-সম্পদ কাজে লাগাতে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নেত্রকোনার বিজয়পুরসহ আশপাশ এলাকার মূল্যবান চীনা মাটি উত্তোলনে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপর কিরূপ প্রভাব ফেলবে সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
×