ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ কোটি মানুষের গর্ব ও একমাত্র ঠিকানা শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৫ অক্টোবর ২০১৬

১৬ কোটি মানুষের গর্ব ও একমাত্র ঠিকানা শেখ হাসিনা

সংসদ রিপোর্টার ॥ জাতিসংঘে নারী-পুরুষের সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ‘প্লানেট ফিফটি ফিফটি চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ এ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তির মাধ্যমে দেশ ও জাতির জন্য বিরল সম্মান অর্জন করায় মঙ্গলবার সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন, দেশের একজন নেত্রী (খালেদা জিয়া) জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি করছেন। আরেকজন নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করে দেশকে উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে তুলে এনে সব অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। তিনি হচ্ছেন একজন দুঃসাহসী অভিযানের সফল নেত্রী। শেখ হাসিনা যদি বেঁচে না থাকতেন তবে বাংলাদেশ আবারও পাকিস্তান হয়ে যেত। নিজের যোগ্যতা, সাহসিকতা, দূরদৃষ্টি ও প্রাজ্ঞতায় দেশের গ-ি পেরিয়ে শেখ হাসিনা আজ বিশ্বনেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। সারাবিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তাই দেশের ১৬ কোটি মানুষের গর্ব ও একমাত্র ঠিকানা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। দেশের জন্য তিনি হচ্ছেন আশীর্বাদ। বঙ্গবন্ধু যেভাবে সব মানুষকে আপন করে ও বুকে টেনে নিতে পারতেন- শেখ হাসিনাও তেমনি বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে রেখে মানুষকে ভালবেসে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার মাগরিবের নামাজের বিরতির পর ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর এই সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় এই ধন্যবাদ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন সরকারী দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ড. হাছান মাহমুদ, আবদুল মতিন খসরু, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মেহের আফরোজ চুমকি, নুরুজ্জামান আহমেদ, তাজুল ইসলাম, সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি, ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি, এ কে এম শাহজাহান কামাল, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সানজিদা খানম, আবু জাহির, জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভা-ারী, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী এবং জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, সেলিম উদ্দিন ও পীর ফজলুর রহমান। রাত পৌনে দশটায় দীর্ঘ এ আলোচনা শেষে স্পীকার প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এ সময় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান। সংসদের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে উপস্থিত থাকলেও আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলেন না। ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, এ অর্জন শেখ হাসিনার, দেশবাসীর। সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এখন শুধু বাংলাদেশের নয়, সারাবিশ্বের নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। নারীর ক্ষমতায়নে গোটা বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। যথার্থ কর্মের কারণেই জাতিসংঘ শেখ হাসিনাকে এ পুরস্কার দিয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশকে ধ্বংস করে রেখে গিয়েছিল। সব ষড়যন্ত্র ও ধ্বংস হওয়া দেশকে তিনি উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন, বিশ্বের সামনে দেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। শেখ হাসিনা অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছেন, যে বিপুল পরিমাণ রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে ৯টি পদ্মা সেতু করা সম্ভব হবে। জঙ্গী-সন্ত্রাসবাদ দমনেও বিশ্বের প্রশংসা কুড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, কোথায় নেই শেখ হাসিনা। চারদিকে শূন্যতা নিয়ে দেশের মানুষের ডাকে দেশে ফিরে পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজে লিপ্ত রয়েছেন তিনি। জনতার শক্তিতে বলিয়ান হয়ে তিনি সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা এবং জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। গরিব মানুষদের তিনি ১০ টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছেন। এর ফলে সরকারকে এক হাজার ৬৬০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। জীবন-মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। জয়তু শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শেখ হাসিনা একজন দুঃসাহসী অভিযানের সফল নেত্রী। সর্বহারা হয়ে দেশে ফিরে এসে আজ সারাবিশ্বের নেত্রী হয়েছেন। একজন নেত্রী জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করছেন, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছেন। দেশের এই গণতন্ত্র বার বার ক্যান্টনমেন্টে বন্দী থেকেছে, বার্ন ইউনিটে আবদ্ধ থেকেছে। কিন্তু সব বাধা, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করেই পথহারা বাংলাদেশকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে উন্নয়ন-সমৃদ্ধির মহাসড়কে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। শুধু নারীর নয়, জনগণের ক্ষমতায়ন করেছেন শেখ হাসিনা। ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঠিকানা এখন বাংলাদেশ ছাপিয়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিগতভাবে আমাদের প্রধান দায়িত্ব হবে শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করা। পৃথিবীর অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো বিশ্বের মানবতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একজন নেত্রী দেশ ধ্বংস করে ও মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করতে চান, আরেক নেত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ থেকে যদি কেউ নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন, তিনি হচ্ছেন একমাত্র শেখ হাসিনা। জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, শেখ হাসিনা বারংবার আগুনে পুড়ে হয়েছেন খাঁটি সোনা। বিষ হজম করে হয়েছেন নীলকন্ঠী। শাশ্বত বাংলার মুখ হচ্ছেন শেখ হাসিনা। বিশ্বের নেতারাও অকপটে বলতে বাধ্য হচ্ছেন যে, অদম্য স্পৃহায় ১৬ কোটি জনসংখ্যার এই দেশকেই পাল্টে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বিরল সম্মান ও অর্জনে গোটা বাংলাদেশ গর্বিত। তার এই অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, তাঁর দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি ভালবাসা- সবকিছুই শেখ হাসিনার মধ্যে দেখা যায়। বঙ্গবন্ধু যেভাবে সব মানুষকে আপন করে ও বুকে টেনে নিতে পারতেন- শেখ হাসিনাও তেমনি বঙ্গবন্ধুর পথ ধরে রেখে মানুষকে ভালবেসে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার অবিস্মরণীয় অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, তাঁর নেতৃত্বে সব নারী আজ উন্নয়ন-সমৃদ্ধিতে অংশ নিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর মতোই সাহসী নেতৃত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা দেশকে আজ সবদিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এরই স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। আর এই বিশাল অর্জন তিনি দেশবাসীকে উৎসর্গ করেছেন। সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, শেখ হাসিনা হচ্ছেন বাংলাদেশের জনগণের আশীর্বাদ। তিনি শুধু নারীর ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্যমুক্ত করেননি, দেশের মানুষকে আত্মমর্যাদা দিয়েছেন। কারোর অনুকম্পা বা দয়ায় নয়, নিজ কর্মদক্ষতায় দেশের ১৬ কোটি জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সারাবিশ্বের একশ’ বিশ্ব নেতৃত্বের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন অন্যতম। শেখ হাসিনা বিশ্বের একমাত্র মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ১৩ বছর ধরে সফল নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আগে দেশের মানুষ ভাবত কী খাব, কী পরব। এখন সেই অবস্থা আর নেই। দেশ থেকে তিনি দারিদ্র্যতা দূর করে দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ঠিকানা, গর্ব। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
×