ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন ॥ বখাটেদের গ্রেফতার দাবিতে আল্টিমেটাম

স্কুলে ঢুকে ছাত্রীকে মারপিট

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ৫ অক্টোবর ২০১৬

স্কুলে ঢুকে ছাত্রীকে মারপিট

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ৪ অক্টোবর ॥ এবার ইউপি চেয়ারম্যানের বখাটে ছেলে দলবলসহ স্কুলে গিয়ে এক ছাত্রীকে মারধর করেছে। গুরুতর আহত করেছে তার বাবাকেও। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জ এলাকায় জালশুকা-কুমুদগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছে। এছাড়া জেএসসি পরীক্ষার্থীরা মডেল টেস্ট পরীক্ষা বর্জন করেছে। স্কুলের শিক্ষকম-লী, শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জালশুকা গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে ফারিয়া রহমান প্রাপ্তি মঙ্গলবার দুপুরে জেএসসি মডেল টেস্ট পরীক্ষা দেয়ার উদ্দেশে শ্রেণীকক্ষে বসেছিল। এ সময় বিশকাকুনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের বখাটে পুত্র শাহাদাত কতিপয় সঙ্গীসহ ওই কক্ষে গিয়ে তাকে মারধর শুরু করে। এ সময় ওই স্কুলছাত্রী দৌড়ে শিক্ষকদের দিকে এগিয়ে গেলে সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিনুল হক তাকে রক্ষা করেন। মেয়েটির চিৎকারে অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে বখাটে শাহাদাত ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এদিকে মেয়ের ওপর হামলার খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা মিজানুর রহমান দৌড়ে স্কুলে যাবার সময় রাস্তায় শাহাদাত ও তার সঙ্গীরা তার ওপরও হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর স্কুলের জেএসসি পরীক্ষার্থীরা ওই দিনের পরীক্ষা বর্জন করে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে এবং ১২ ঘণ্টার মধ্যে বখাটেদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেয়। খবর পেয়ে পূর্বধলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর হোসেনসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা স্কুলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তারা দ্রুত বখাটেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এদিকে এলাকাবাসী খায়ের নামে এক বখাটেকে আটক করে পুলিশে দেয়। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রহুল আমিন তালুকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমরা শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও ওই বখাটেদের অতি দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে মারপিট স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, সিরাজগঞ্জ শহরের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শহীদ মডেল স্কুলের তিন শিক্ষকের নামে শিক্ষার্থীকে নির্যাতন ও মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। পড়াশোনায় অমনযোগী হওয়া বা শ্রেণীকক্ষে দুষ্টামি করলে প্রায়ই ডাস্টার বা স্কেল দিয়ে শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়। সামান্য অপরাধে শিক্ষার্থীদের রোদেও দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। বদমেজাজী শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের লাথি মারতেও দ্বিধা করেন না। মঙ্গলবার দুপুরে নির্যাতনের শিকার ছাত্র সামি বিল্লাহর বাবা বাকী বিল্লাহ নিজে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসানুজ্জামান রঞ্জুর নিকট অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের বিচার দাবি করে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযাগে বলা হয়, তার ছেলে সামি বিল্লাহ শহীদ মডেল স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। সোমবার দুপুরে পড়া মুখস্থ না হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক কামরুল ইসলাম সামিকে ক্লাসরুমের বাইরে টানা রোদে দাঁড় করিয়ে রাখেন। প্রায় ১০ মিনিট পরে লাথি মেরে তাকে ক্লাসরুমে ঢুকতে বলে। এছাড়া একই বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক কাইয়ুম সহপাঠীদের সাথে কথা বলার কারণে সামিকে ডাস্টার দিয়ে পেটায়। এতে সামির শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা ও জখম হয়ে যায়। শিশু সামি বিল্লার পিতা বাকী বিল্লাহ আরও জানান, তার ছেলে কিডনি রোগে আক্রান্ত এবং অনেকটা শারীরিক প্রতিবন্ধী। দেশে ও বিদেশে ৪ বার তার অপারেশন হয়েছে। বিষয়টি আগেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। তারপরও তাকে নির্যাতন ও ডাস্টারপেটা করা হয়েছে। এর আগেও এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা জুলেখা বেগম সামান্য বিষয় নিয়ে তার ছেলেকে স্কেল দিয়ে পেটান। তিনি অভিযুক্ত ওইসব শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান।
×