ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গণমানুষের কণ্ঠস্বর

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৫ অক্টোবর ২০১৬

গণমানুষের কণ্ঠস্বর

গণমানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন তিনি দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছরের রাজনৈতিক পথ পরিক্রমায়। দেশকে নিয়ে গেছেন বিশ্বমানবের পাশে, জাতিকে করেছেন সমৃদ্ধ। ভুখা, নাঙ্গা, মঙ্গা, দুর্ভিক্ষ, অভাব ইত্যাকার শব্দগুলোকে মুছে দিয়েছেন স্বদেশী হতদরিদ্র মানবের জীবন থেকে। তাই অর্জিত আরও দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার উৎসর্গ করলেন বাংলার জনগণকে। যে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, উন্নতি-অগ্রগতি, পতন-উত্থান, হাসি-কান্নার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন তিনিও। জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিয়ে এবারও দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ এওয়ার্ড’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। নারীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করে জাতি গঠনমূলক কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানের স্বীকৃতস্বরূপ প্রাপ্য এ উপহার। এর আগেও তিনি আরও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। যা বিশ্বে বাংলাদেশের সম্মান, গৌরব, অহংকারকে উচ্চে সমাসীন করেছে। দেশের গ-ি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বে নিজের অবস্থান তৈরি করতে পারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘে প্রদত্ত সর্বজন গ্রহণযোগ্য ভাষণে বিশ্বনেতাদের সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের মদদদাতাদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন। কানাডা সফরকালে সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সে দেশে অবস্থানরত দ-প্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর এক খুনীকে দেশে ফেরত আনার বিষয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ পর্যায়ের বলা যায়। এবারই একটানা দু’সপ্তাহের বেশি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী সার্ক সম্মেলনে যোগ না দেয়ার কার্যকারণ তুলে ধরে নয়া প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ সঙ্গত। আর্থসামাজিক উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশগুলো কিভাবে এগিয়ে যেতে পারে, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টিকে শেখ হাসিনা সামনে এনেছেন। এরই আলোকে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর সমাধানও সম্ভব হবে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তান যা বলছে এবং আচরণ করছে যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে, তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। আর এসব কারণে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ যোগ দিচ্ছে না। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও ঝগড়াঝাটি চলবে। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করে পাকিস্তান প্রমাণ করেছে এরা তাদের প্রিয়ভাজন ও সহোদর। এদের যারা বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে, মন্ত্রী উপদেষ্টা বানিয়েছে তাদের এ দেশে রাজনীতি করার যে অধিকার থাকতে পারে না। স্বাধীনতায় বিশ্বাসী জনগণই এদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে বলে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন। যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির সপক্ষে সবসময়ই অবস্থান শেখ হাসিনার। তাই ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধুক, তা শেখ হাসিনার পছন্দ নয়। কোন যুদ্ধবিগ্রহ সৃষ্টি হোক এটা শেখ হাসিনার কাম্য নয়, এ রকম কিছু হলে বাংলাদেশও যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, শেখ হাসিনা সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেছেন যথার্থভাবেই যে, এতে বাংলাদেশের উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা হয়েছে, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গণভবনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করার কারণগুলো তুলে ধরে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, তাদের সময়ে এক কোটি একত্রিশ লাখ ভুয়া ভোটার করেছিল। ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি এই অসাধু পথ নিয়েছিল। এমন নির্বাচন কমিশনার হয়ত চায় বিএনপি। তারা ১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনও করেছিল। গণমানুষের জীবনধারাকে সচ্ছল করে তোলার জন্য প্রাণান্ত যে প্রয়াস তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন, তা বাঙালীর ভবিষ্যতকে সমৃদ্ধ করে তুলবেই। আর তা করার প্রত্যয়েই তিনি পঁয়ত্রিশ বছর ধরে সচেষ্ট থেকে গণমানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন। দেশবাসী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে গতিশীল করার সহযোগী হয়ে উঠছেন ক্রমশ। আর এটাই বাঞ্ছনীয়।
×