ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজিমপুরের আস্তানা থেকে আটক ৩ নারী জঙ্গীর জবানবন্দীতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে

মারজান রাজীব বাশারকে গ্রেফতারের চেষ্টায় গোয়েন্দারা

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৪ অক্টোবর ২০১৬

মারজান রাজীব বাশারকে গ্রেফতারের চেষ্টায় গোয়েন্দারা

শংকর কুমার দে ॥ জঙ্গী সংগঠন নব্য জেএমবির পলাতক অন্যতম শীর্ষ জঙ্গী নুরুল ইসলাম মারজান, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব এবং চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামানকে গ্রেফতার করতে পারলে গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার রহস্য উন্মোচিত হবে বলে আশা করছেন তদন্তকারীরা। নব্য জেএমবিকে সমূলে বিনাশ করতে না পারলে সুযোগমতো তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠে হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। গুলশান হামলার বিষয়ে ইসলামিক স্টেট আইএসের পক্ষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সর্বশেষ ভিডিওতে যার কণ্ঠস্বর শোনা গেছে তার নাম তাহমিদ রহমান সাফি বলে জানিয়েছেন তারা। গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম জড়িত কি না সেই বিষয়ে এখনও পুলিশ নিশ্চিত নয়। হলি আর্টিজানে জিম্মিদের সঙ্গে ছাড়া পাওয়ার পর ৫৪ ধারায় আটক তাহমিদ হাসিব খান জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তার বিষয়েও জড়িত থাকার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজিমপুরে জঙ্গী আস্তানায় পুলিশী অভিযানের সময়ে নিহত আবদুল করিম ওরফে তানভীর কাদেরীর ছেলে তাহরিম কাদেরীকে জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলার পূর্বাপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তার দেয়া জবানবন্দী অনুযায়ী গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড নিহত তামিম চৌধুরী, নিহত মেজর জাহিদুল ইসলাম ওরফে মেজর মুরাদ ছাড়াও যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাতে নুরুল ইসলাম মারজান, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব ও চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামান অন্যতম। এর মধ্যে আজিমুপর জঙ্গী আস্তানা থেকে গ্রেফতার হয়েছে মারজানের স্ত্রী আফরিন ওরফে প্রিয়তি, জামান ওরফে চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামানের স্ত্রী শায়লা আফরিন ও নিহত তানভীর কাদেরীর স্ত্রী অর্থাৎ যে কিশোর তাহরিম কাদেরী জবানবন্দী দিয়েছে তার মা আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে খাদিজা। আজিমপুর আস্তানা থেকে মারজান ও বাশারুজ্জামানের স্ত্রী গ্রেফতার হওয়ায় পলাতক দুই শীর্ষ জঙ্গী যে সেখানে যাতায়াত ছিল এবং গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পেছনে কাজ করেছে তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তদন্তে, যা কিশোর তাহরিম কাদেরীর জবানবন্দীতে উঠে এসেছে। এখন পলাতক এই দুই শীর্ষ জঙ্গী মারজান ও বাশারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা গেলে হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলাসহ নব্য জেএমবির সাংগঠনিক বিস্তার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য পাওয়ার আশা করছে তদন্তকারীরা। যা বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তা ॥ ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম জড়িত কি না সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে সমন্বিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁকে। এখনও সে প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। ওই প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ও গুলশান হামলা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দী মিলিয়ে দেখার পর সিদ্ধান্তে আসা যাবে তিনি জড়িত কি না ? সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, গুলশান হামলার পর জিম্মিদের সঙ্গে উদ্ধার হওয়ার পর আটক হয়ে রবিবার জামিনে মুক্ত তাহমিদ হাসিব খানেরও জড়িত থাকার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাহমিদ গুলশান হামলার আসামি নয়। তথ্য চাপা এবং অসহযোগিতার অভিযোগে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। গুলশান হামলা মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তদন্তে তাঁর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁকে আবার এই মামলায় গ্রেফতার করা হবে। গুলশান হামলার মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মনিরুল ইসলাম জানান, গুলশান হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে কেউ কেউ ইতোমধ্যে অভিযানে নিহত বা আত্মহত্যা করেছে। পলাতক নুরুল ইসলাম মারজান, জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব ও চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামানকে গ্রেফতার করতে পারলে এ ঘটনার পুরো রহস্য উন্মোচিত হবে। তিনি বলেন, আজিমপুরে জঙ্গীবিরোধী অভিযানে নিহত তানভীর কাদেরীর ছেলে তাহরিম কাদেরী পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এই জবানবন্দীর মাধ্যমে গুলশান হামলা সম্পর্কে কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব তথ্য এর আগে পুলিশ ও গোয়েন্দারাও পেয়েছিল। এ ছাড়া কল্যাণপুরের অভিযানে আহত রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিলে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি জানান, সাম্প্রতিক জঙ্গী হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র কোন পথে এসেছে, তা জানা গেছে। অস্ত্র কার কাছ থেকে এসেছে, কীভাবে এসেছে, সেটা জানতে পেরেছি। কিন্তু নেপথ্যের ব্যক্তি কে তা এখনও বের করা সম্ভব হয়নি। গুলশান হামলার জন্য তৃতীয় একটি দেশ থেকে ভারত হয়ে দুই ধাপে প্রায় ২০ লাখ টাকা এসেছিল। এই টাকা গ্রহণ করেছে চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামান। নব্য জেএমবি সম্পর্কে মনিরুল ইসলাম বলেছেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে কিছু তরুণ সহিংসতায় জড়িত হয়ে পড়ছে। নব্য জেএমবি একটি মতাদর্শিক সংগঠন। এটিকে সমূলে বিনাশ করতে না পারলে সুযোগমতো তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এ জন্য গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার পর যে গণসচেতনতা তৈরি হয়েছে তা অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানান তিনি। এ বছরের গত ১ জুলাই রাত সাড়ে নয়টার দিকে গুলশান-২ এ ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ি হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলা চালায় অস্ত্রধারীরা। ওই হামলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিনসহ ২০ জিম্মিকে হত্যা করা হয় বলে জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। নিহত ২০ জিম্মির মধ্যে ১৭ বিদেশী ও তিন বাংলাদেশী। পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গীসহ নিহত হয় ছয়। আইএসের ভিডিওর কণ্ঠস্বর তাহমিদের ॥ গুলশান হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলা বিষয়ে ইসলামিক স্টেট আইএসের পক্ষে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সর্বশেষ ভিডিওতে যার কণ্ঠস্বর শোনা গেছে তার নাম তাহমিদ রহমান সাফি বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। সাবেক নির্বাচন কমিশনার শফিউর রহমানের ছেলে সাফি সিরিয়ায় পালিয়ে গেছে। সে নব্য জেএমবি সদস্য। ভিডিওতে সিরিয়ার যে ছবি দেখা গেছে তা এডিট করে যুক্ত করা হয়েছে। ভিডিওটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। ভিডিওটির যে ব্যাকগ্রাউন্ড তা পরে যুক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত ৫ জুলাই গুলশানে হামলাকারীদের প্রশংসা করে আইএসের নামে যে ভিডিওটি প্রকাশ করে সেটিতেও সাফি অংশ নিয়েছিল। তখনই তার পরিচয় জানা যায়। আর সেই ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডও এডিট করে বসানো হয়েছিল। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই দাবি করেছেন। তিনি জানান, সাফি বর্তমানে সিরিয়াতে আছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে দেশে এলেই তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। অনলাইনে পাওয়া সাফির সিভি অনুযায়ী তার ঠিকানা বারিধারা এবং সে গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে এসএসসি এবং নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পড়া শেষ করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে। সে এনটিভিতে প্রচারিত উদীয়মান সঙ্গীত তারকা খোঁজার অনুষ্ঠান ক্লোজ-আপ ওয়ানের সিজন ওয়ানের একজন উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগী ছিল বলেও জানা গেছে। গত ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার আগে একটি ভিডিও ধারণ করে তার একাংশ জঙ্গীরা হামলা চালানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ করা হয়। ভিডিওর অপর অংশটি প্রকাশ করা হয় গত ২৩ সেপ্টেম্বর আইএসের নামে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গী তৎপরতা নজরদারি সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স আইএসের কথিত সংবাদ সংস্থা আমাকের বরাত দিয়ে ভিডিওটি প্রকাশ করে। সর্বশেষ প্রকাশিত ১৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে ৫ জঙ্গীর ছবিসহ একটি বর্ণনা আরবী ও বাংলা ভাষায় উপস্থাপন করা হয়। এই বাংলা ধারাভাষ্যটির কণ্ঠ দিয়েছেন তাহমিদ রহমান সাফি। এই ভিডিওর প্রথম ৯ মিনিটে বাংলাদেশের আলেম সমাজের সমালোচনা করে ইসলামী চিন্তাবিদদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ইসলামী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, শোলাকিয়া মসজিদের ইমামসহ কয়েকজনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বক্তৃতা তুলে ধরা হয়েছে ভিডিওটিতে। ভিডিওটির বাংলা তরজমায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনসহ বিশ্বনেতাদের ছবি ব্যবহার করে তাদের ‘কাফের’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মুসলিমদের তাদের প্রতি কঠোর হতে হবে বলে বলা হয়। গুলশানে হামলার কারণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ভিডিওতে বলা হয়েছে, মুসলিম নারী-পুরুষ ও শিশুদের রক্তে রঞ্জিত ক্রুসেডাররা মুসলিমদের প্রতি তাদের চরম উপহাস হিসেবে বাংলাকে তাদের মনোরঞ্জনের স্থান হিসেবে বেছে নেয়। তাই তারা ৫ জন ঢাকার গুলশানে হামলা চালিয়েছিল। ভিডিওতে পরের অংশে গুলশান হামলায় নিহত পাঁচ জঙ্গীর মধ্যে মোবাশ্বের এবং নিবরাসকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ এবং ভারি অস্ত্রসহ ছুরি হাতে দেখা গেছে। গুলশান হামলার পর সাইট ইন্টেলিজেন্সের প্রকাশিত ছবিতে জঙ্গীদের যে পোশাক ও জায়গা দেখা গিয়েছিল, সেই একই পোশাকে পাঁচ জঙ্গীর বক্তব্যের ভিডিও ধারণ করা হয়। ভিডিওতে নিবরাস বলছে, মানুষ আমাদের সম্পর্কে কি ভাবছে, অথবা কি বলছে তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিত হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এ হামলার জন্য নব্য জেএমবিকে দায়ী করা হয়েছে। তিন জঙ্গীর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ ॥ আজিমপুর জঙ্গী আস্তানায় পুলিশী অভিযানের সময়ে আহত অবস্থায় গ্রেফতার হয়ে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আছে পলাতক মারজানের স্ত্রী আফরিন ওরফে প্রিয়তি, জামান ওরফে চকলেট ওরফে বাশারুজ্জামানের স্ত্রী শায়লা আফরিন ও নিহত জঙ্গী তানভীর কাদেরীর স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে খাদিজা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন নারী জঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। পলাতক মারজান ও বাশারুজ্জামান কোথায় তা জানতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়াও জঙ্গী আস্তানা থেকে সটকে পড়া নিহত জঙ্গী মেজর জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলা দশ মাসের শিশু সন্তান নিয়ে কোথায় আছে তাও জানার চেষ্টা করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন নারী জঙ্গী সুস্থ হলে তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে হলি আর্টিজান হামলাসহ নব্য জেএমবির জঙ্গী তৎপরতার বিস্তৃতির বিষয়ে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
×