ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলী হাসপাতালে ২১ ডাক্তারের পদ শূন্য

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ৪ অক্টোবর ২০১৬

আমতলী হাসপাতালে ২১ ডাক্তারের পদ শূন্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী বরগুনা, ৩ অক্টোবর ॥ বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার পাঁচ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য চিকিৎসক আছে মাত্র তিনজন। ৩৯ চিকিৎসকের পদ থাকলেও ৩৬ পদ শূন্য। আমতলীর ৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালের নতুন ভবনে ক্রটিপূূর্ণ বৈদ্যুতিক সংযোগের কারণে অধিকাংশ ফ্যান অকেজো। শৌচাগারে কোন লাইট নেই। তালতলী ২০ শয্যা ও কুকুয়ার ১০ শয্যা হাসপাতালের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। তিনটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও সাতটি ইউনিয়ন ক্লিনিকে কোন চিকিৎসক নেই। এতে ভেঙ্গে পড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা। সামান্য অসুখ হলেও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর যেতে হয় শহরের কোন হাসপাতালে। আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক এই আছে, এই নেই। দু’জনকে প্রেষণে এনে কোনমতে চিকিৎসা সেবা চালানো হচ্ছে। জানা গেছে, আমতলী ও তালতলী দু’উপজেলার তিনটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, তিনটি উপস্বাস্থ কেন্দ্রে ও ৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এ্যান্ড হেলথ ক্লিনিকের ৩৯ চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে আমতলী ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ চিকিৎসকের মধ্যে কোন চিকিৎসক নেই। তালতলী ও কুকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দু’চিকিৎসককে আমতলী হাসপাতালে প্রেষণে আনা হয়েছে। কুকুয়া ১০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২ চিকিৎসকের পদ শূন্য । তালতলী ২০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ চিকিৎসকের একজনও নেই। গুলিশাখালী, গাজীপুর ও তালতলী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে তালতলী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুম বিল্লাহ তিনি প্রেষণে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত আছেন। সাতটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এ্যান্ড হেলথ ক্লিনিকের মধ্যে কুকুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এ্যান্ড হেলথ ক্লিনিকের কর্মরত চিকিৎসক তহমিনা আক্তার তিনি বরিশাল মডেল স্কুল এ্যান্ড হেলথ ক্লিনিকে প্রেষণে কর্মরত। এদিকে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক না থাকায় তালতলী ও কুকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত দু’চিকিৎসককে প্রেষণে আনা হয়েছে। এতে সেখানে চিকিৎসক শূন্য রয়েছে। আমতলী ও তালতলীর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর চিকিৎসক পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ। এদিকে গাজীপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র একমাস ধরে তালাবদ্ধ। সেখানে চিকিৎসক, স্বাস্থ্য সহকারী ও কোন কর্মচারী নেই। ভাঙ্গা হাসপাতাল নিজস্ব সংবাদদাতা ফরিদপুর থেকে জানান, ৫০ শয্যার ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ১০ চিকিৎসক কর্মরত। এর মধ্যে শনিবার পরিদর্শনে এসে আট চিকিৎসককেই অনুপস্থিত পেয়েছেন সিভিল সার্জন। অনুপস্থিত চিকিৎসকদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ ও ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মেহেদী হাসানও রয়েছেন। দুই প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সিভিল সার্জন অরুণ কান্তি বিশ্বাস শনিবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তিনি সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। ওই সময় কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত ১০ চিকিৎসকের মধ্যে মেডিক্যাল কর্মকর্তা কল্যাণ সাহা ও অমিত ঘোষকে উপস্থিত দেখতে পান। কর্মরত চার সেবিকার মধ্যে এক এবং কর্মরত ২২ কর্মচারীর মধ্যে একজন ঝাড়ুদার ও এক পিয়ন উপস্থিত ছিলেন। সিভিল সার্জন অনুপস্থিত আট চিকিৎসক, তিন সেবিকা ও ২০ কর্মচারীর হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখিয়ে স্বাক্ষর করেন। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মচারীদের থাকা বাধ্যতামূলক।
×