ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের সিরিজ জয়

প্রকাশিত: ০৪:২২, ৪ অক্টোবর ২০১৬

বাংলাদেশের সিরিজ জয়

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যের বহরে আরও একটি মাত্রা যুক্ত হলো। বলা যায় ক্রিকেটের সোনালী ইতিহাসের নাম এখন বাংলাদেশের টাইগার বাহিনী। এবার আফগানিস্তান ক্রিকেট দলকে ২-১ ম্যাচে পরাজিত করে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ৩১৫তম ম্যাচে এসে ওয়ানডেতে শততম জয় ধরা দিল টাইগারদের। শনিবার শততম ওয়ানডে ম্যাচ জয়ের সঙ্গে সিরিজটাও নিজেদের করে নেয় লাল-সবুজরা। এ নিয়ে টানা ৬টি ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। যেখানে জায়ান্ট দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারতকে একবার করে ও জিম্বাবুয়েকে দু’বার সিরিজ হারানোর সুখস্মৃতির সঙ্গে এবার যোগ হলো আফগান বধের গল্প। সামনে শক্তিশালী ইংল্যান্ড। এই মিরপুরেই প্রথম ওয়ানডেতে ইংলিশদের সঙ্গে লড়বে মাশরাফির বাংলাদেশ। ইংলিশদের মোকাবেলার আগে এই সিরিজ নিশ্চিত করে নিজেদের চাঙ্গা করল টাইগাররা। ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সিরিজ জয় করার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি টিম বাংলাদেশকে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- প্রতিটি বিভাগে অসামান্য নৈপুণ্য দেখিয়ে বরাবরের মতো সিরিজ জয় করে নিয়েছে মাশরাফি বাহিনী। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল এখন বাংলাদেশে। শক্তিশালী ইংল্যান্ডের সঙ্গে মাঠে নামছে চলতি সপ্তাহেই। তাই নতুন আরেকটি পরীক্ষায় নামতে হচ্ছে মাশরাফি বাহিনীকে। এখন অপেক্ষার পালা সিরিজ জয়ের পরিসংখ্যান ৭ স্পর্শ করে নাকি ৬ ই থেমে যায়। দেশবাসীর প্রত্যাশা সাফল্যের এই ধারা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ। শনিবার সিরিজের শেষ ম্যাচে একপেশে হয়ে ওঠা লড়াইয়ে ১৪১ রানে সফরকারীদের হারাল টাইগাররা। ঢাকার মিরপুরে শেরে-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মেঘ-রোদের লুকোচুরির মধ্যে টসভাগ্য ছিল মাশরাফির পক্ষে। স্বাগতিকরা ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৭৯ রান। জবাব দিতে নেমে ৩৩.৫ ওভারে ১৩৮ রানে গুটিয়ে যায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ছিল অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এই ম্যাচে মাত্র ৭ রানে আফগানিস্তানকে হারায় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ম্যাচে অত্যন্ত শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় দুই উইকেটে জিতে সিরিজের সমতা আনে আফগানরা। শনিবারের ম্যাচসেরা শুধু নন, সিরিজসেরা হয়েছেন বাংলাদেশের তামিম ইকবাল। ক্রিকেট আজ বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। এখন আমরা নিশ্চিত করেই বলতে পারি ক্রিকেটের নতুন সূর্যোদয় ঘটেছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশকে যে আর অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা যাবে না সেই বার্তাও খুবই স্পষ্ট। এটা বিশ্ববাসী জানে। বাংলাদেশ দল যে এখন যে কোন ক্রিকেট পরাশক্তির সমীহ আদায় করতে সক্ষম তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বাঙালীর নতুন এই ক্রিকেট-কাব্যের নায়ক কিন্তু একক কেউ নন। পুরো একটি টিম। যে কোন খেলায় ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে একজন আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। সেই দৃষ্টান্ত বারবার রেখে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ও সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে সরকারের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা এবং খেলোয়াড়দের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কথা বারবার উল্লেখ করে আসছেন। এই অনুপ্রেরণা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এই অর্জন ধরে রাখতে ক্রিকেট পরিচর্যায় আমাদের আরও মনোযোগী হতে হবে। সব মিলিয়ে সিরিজটা বেশ স্মরণীয় হয়ে থাকল। তবে আসল পরীক্ষা আগামী ৭ অক্টোবর থেকে। তখন লড়তে হবে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের সঙ্গে। সেই সিরিজেও সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে সেই প্রত্যাশা সবার। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন।
×