ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাইফুল হক মিঠু

পূজার সাজসজ্জা

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৩ অক্টোবর ২০১৬

পূজার সাজসজ্জা

শরত প্রায় শেষ। তবে শেষ হয়ে যায়নি শারদীয় আমেজ। পূজা এলেই শারদীয় সাজে নিজেকে আলাদা করতে চায় সবাই। তাই পূজার দিনগুলোতে কমবেশি সবাই সাজসজ্জার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেন। এই সময় নিজেকে উজ্জ্বল দেখাতে কয়েকদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। পূজার আগে রূপচর্চা- সারা বছর কী করেছেন না করেছেন ভুলে গিয়ে কয়েকটি দিন নিজেকে একটু সময় দিন। মেনে চলুন কিছু সহজ সৌন্দর্য চর্চার নিয়ম। তৈলাক্ত ত্বক যাদের ত্বক খুব তৈলাক্ত তাদের ত্বক সংক্রান্ত নানা রকম সমস্যা থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে তেলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। ক্লিনজিং, ময়েশ্চারাইজিংয়ের ক্ষেত্রে ‘অয়েল ফ্রি প্রোডাক্ট’ ব্যবহার করুন। ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার হিসেবে টমেটোর রস খুব কার্যকর। ক্লিনজিং ও টোনিংয়ের পর লেটুস পাতার রস, মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে লাগাতে পারেন। আনারস, আপেল, পাকা পেঁপের সঙ্গে মধু মিশিয়ে প্যাক ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। শুষ্ক ত্বক এই ধরনের ত্বকের প্রধান কাজ হলো ত্বকের ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখা। ভিটামিন-ই অয়েল আর গ্লিসারিন ১-২ চামচ করে মিশিয়ে প্রতিদিন লাগাতে পারেন। ত্বকে পুষ্টি জোগাতে ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ চা-চামচ মধু, ১-২ চা-চামচ অলিভ অয়েল ও গোলাপজল মিশিয়ে সারা মুখে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এই কাজটি সপ্তাহে ২ দিন করবেন। মিশ্র ত্বক প্রতিদিনের যতেœ হালকা ক্লিনজার ব্যবহার করুন। তবে ত্বকের শুষ্ক জায়গাগুলোয় অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগাবেন। সিদ্ধ করা মিষ্টি কুমড়া চটকে, মধু ও দুধ পরিমাণ মতো মিশিয়ে মুখে লাগান। ২০ মিনিট রেখে তারপর ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। এই কাজটি সপ্তাহে ৩ দিন করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে। চুলের যতœÑ আমলকি, হরতকি, শিকাকাই, হেনা, মেথি, টকদই, মিল্ক পাউডার, ডিম মিশিয়ে পুরো চুলে লাগান। ৪০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। তারপর হারবাল শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। শ্যাম্পুর পর সবসময় প্রোটিনযুক্ত কন্ডিশনার ব্যবহার করলে চুল ভাল থাকে। কিছু টিপস মোটা দাড়ার চিরুনি দিয়ে আঁচড়ান। ভিজে চুল আঁচড়ালে চুল ভগুর হয়ে পড়ে। যাদের চুল শুষ্ক তারা শ্যাম্পু করার ১ ঘণ্টা আগে তিলের তেল ও নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে হালকা গরম করে স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করুন। পূজার ৩ দিন আগে ভাল পার্লারে গিয়ে আপনার ত্বক ও বয়স অনুযায়ী ফেসিয়াল, হেয়ার স্পা, পুরো শরীর পলিশিং, ম্যাসাজ ও থ্রেডিং করিয়ে নিন। পূজায় দিনের সাজ ষষ্ঠী থেকে দশমী পূজার উৎসব চলে। তাই ষষ্ঠীতে হালকা সাজ দিয়ে শুরু করে দশমী পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে সাজ রঙিন হয়ে উঠবে। দিনে মন্দিরে পূজার অঞ্জলি দেয়ার সময় প্রকৃতির সজীব ভাবটা যেন সাজের মধ্য থাকে। সেই জন্য বেজ মেকআপ করার ক্ষেত্রে ত্বকের টোনের সঙ্গে মিলিয়ে হালকা ফাউন্ডেশন লাগিয়ে তার ওপর ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার লাগিয়ে নিন। এবার ভিজে স্পঞ্জ দিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করুন। চোখের সাজে অফ হোয়াইট হাইলাইটস, বাদামি ও কালো রঙের কম্বিনেশন অথবা পোশাকের রঙের সঙ্গে মিশিয়ে হালকা রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করুন। পেনসিল আই লাইনার অথবা চাইলে শুধু কাজলের একটা হালকা রেখা টেনে দিন চোখে। ঠোঁটে কোরাল বা হালকা গোলাপি লিপস্টিক অথবা লিপগ্লস লাগাতে পারেন। সঙ্গে হালকা বাদামি রঙের ব্লাশন লাগান। সারা দিনের জন্য বাইরে বের হলে চুলটা এমনভাবে বাঁধুন যাতে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে না হয়। আবার দেখতেও যেন ভাল লাগে। খোঁপা করলে ফুল পড়তে পারেন। বিবাহিত হলে বড় করে কপালে লাল টিপ ও সিঁথিতে সিঁদুর পড়ুন। পূজায় রাতের সাজ সন্ধ্যার পর পূজা দেখতে বের হলে জমকালোভাবে সাজতে পারেন। তাই রাতের মেকআপ একটু যতœ নিয়ে করতে হয়। চোখের আশপাশে কালি বা কোন দাগ থাকলে সেটা ঢাকার জন্য কনসিলার ব্যবহার করুন। এর ওপরে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে তার ওপর ফেসপাউডার দিন। এবার ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করুন। এ্যাকোয়া ব্লু ও ধূসর আইশ্যাডো কম্বিনেশন করে চোখের পাতায় লাগান। সিলভার রঙের হাইলাইটস দিন। ওয়াটার প্রুফ আইলাইনার ও কাজল পড়ুন। চোখের পাপড়ি ঘন ও বড় দেখানোর জন্য ২-৩ পরত ওয়াটার প্রুফ মাশকারা লাগিয়ে নিন। লিপস্টিক চোখের মেকআপ গাঢ় হলে স্বাভাবিক রঙের লিপস্টিকই ভাল দেখাবে। গোলাপি, ব্রাউন বা মভকালার বেছে নিতে পারেন। সাজের সঙ্গে মানানসই স্টাইল করে নিন চুলে। শাড়ির সঙ্গে খোঁপা বা লম্বা বেণির পাশাপাশি ফ্রন্টসেটিং করতে পারেন। খোলা চুলেও স্টাইল করা যায়। স্ট্রেইট করিয়ে নিতে পারেন। আবার হালকা বা কোঁঁকড়ানো করতে পারেন। পূজার সাজে ফুল থাা চাই-ই। চুল সাজাতে পারেন ফুলের স্নিগ্ধতায়। খোঁপাতে জড়িয়ে নিন শিউলি ফুল বা বেলিফুলের মালা। কানের পাশে গুঁজে দিন নীল অপরাজিতা। বিবাহিত হলে বড় লালটিপ, সিঁথিতে সিঁদুর আর পায়ে আলতার প্রলেপ অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে আপনাকে। দিনের বেলাতে বের হওয়ার আগে সান প্রোটেকশন ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ব্যাগ নিন। সারাদিনের জন্য বের হলে ব্যাগে রাখুন ফেসপাউডার, লিপস্টিক, সানক্রিম, ফেশল টিস্যু, ছোট আয়না ও এক বোতল জল। ছবি : আরিফ আহমেদ
×