ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গৃহকর্মীকে নিষ্ঠুর নির্যাতন ॥ হাসপাতালে ভর্তি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ৩ অক্টোবর ২০১৬

গৃহকর্মীকে নিষ্ঠুর নির্যাতন ॥ হাসপাতালে ভর্তি

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ বাসার কাজের মেয়ে তেরো বছরের শিশু আর্জিনা বেগমের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়েছে। গরম পানি আর আগুনের ছ্যাঁকা দেয়া হয় মেয়েটির শরীরে। রবিবার দুপুরে নির্যাতনের শিকার এই মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আর্জিনা নীলফামারীর ডিমলার সঙ্গে লাগানো তিস্তা নদীর ওপারে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার আরাজি শেখ সিন্ধু গ্রামের আনছার আলী ও আনজু বেগমের মেয়ে। মা আনজু বেগম বলেন, তার মেয়ের বয়স যখন ৬ বছর তখন ডিমলার সুঠিবাড়ির নূর মহম্মদ টাঙ্গাইল জেলা শহরের পৌর এলাকার বিশ্বাস বেতকা মহল্লার শিবনাথ পাড়ার আমির আলীর ছেলে তাজুল ইসলামের বাড়িতে কাজের জন্য দেয়। এতদিন তার মেয়ে ভালই ছিল। প্রতি ঈদে বাড়ি আসত। গত দুই ঈদে তাকে আর আমাদের কাছে আসতে দেয়নি। এমনকি মোবাইলে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের মেয়ের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাজুল ইসলাম মোবাইলে আমার শ্বশুরকে (আর্জিনার দাদা নূরু) গত শুক্রবার টাঙ্গাইলে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। পরের দিন শনিবার দুপুরে আমার মেয়ে আর্জিনাকে তার দাদাসহ বাসে তুলে দেয়। তারা শনিবার রাতে ডিমলার সুটিবাড়িতে আমার বোনের স্বামী আব্দুল খালেকের বাড়িতে এসে ওঠে। এরপর আমাদের খবর দেয়। আমরা রবিবার ভোরে এখানে আসি। মেয়ের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে ডিমলা হাসপাতালে ভর্তি করি। শিশু আর্জিনা জানায়, তাজুল ইসলামের স্ত্রী আমেনা বেগম ও তাদের মেয়ে লাভলী আক্তার তাকে কথায় কথায় মারপিট করত। বাড়ির কাজে কোন ভুল হলে শরীরে গরম পানি আর গরম খুনতির ছ্যাঁকা দিত। মাথার চুল ধরে ঘুরাত। কাঁচি দিয়ে এলোমেলোভাবে চুল কেটে দিত। ডিমলা হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ ইয়াসমিন ইসলাম বলেন, মেয়েটির শরীরের বিভিন্নস্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে হবে। এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম মোবাইল ফোনে নির্র্যাতন প্রসঙ্গে বলেন, মিথ্যে কথা। আর্জিনার শরীরে চর্ম রোগ ও ঘা- ধরা পড়েছে। এ জন্য তার চিকিৎসা করা হচ্ছে। ঘা শুকিয়ে গেলেও তার চর্মরোগের সাদা দাগ বেড়ে যাচ্ছে। চিকিৎসায় কাজ হচ্ছে না। অথচ তাকে বাড়িতে নিয়ে এখন মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে মোবাইলে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে অনেকে টাকা দাবি করছে। এমনকি আর্জিনার কিডনি বিক্রি করা হয়েছে বলেও আমার উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। তিনিও এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
×