ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

৬৪ জেলায় সপ্তাহব্যাপী স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩ অক্টোবর ২০১৬

৬৪ জেলায় সপ্তাহব্যাপী স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একসঙ্গে ৬৪ জেলায় শুরু হলো স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব। রাজধানীসহ দেশের বাকি ৬৩টি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চলবে সপ্তাহব্যাপী এ উন্মুক্ত উৎসব। মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রের সঙ্গে সর্বসাধারণের পরিচয় ঘটানোই বিশাল এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য। আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৮৪টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র। ১৯৭১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত নির্মিত ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে এ আয়োজন। বিচিত্র বিষয় ও ভাবনায় নির্মিত ছবিগুলো বিনা দর্শনীতে উপভোগ করবেন দর্শকরা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত উৎসবে সহযোগিতা করছে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম ও বাংলাদেশ প্রামাণ্যচিত্র পর্ষদ। রবিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় মিলনায়তনে সূচনা হয় উৎসবের। প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন তিন চলচ্চিত্র নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকি, মোরশেদুল ইসলাম ও মানজারেহাসীন মুরাদ। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে দেখানো জহির রায়হান নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’, মোরশেদুল ইসলামের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘আগামী’, তারেক মাসুদের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘আদম সুরত’, আমিনুর রহমানের মুকুলের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘অবরোধ’, রহমান লেনিনের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘মন ফড়িং’ ও ইয়াসমিন কবির নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘পরবাসী মন আমার’। প্রতিটি জেলায় একই সময়সূচীতে প্রদর্শিত হবে উৎসবের ছবিগুলো। ঢাকার উৎসব ভেন্যু চিত্রশালা মিলনায়তন। আজ সোমবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যায় ৬টায় প্রদর্শিত হবে একঝাঁক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র। বিকেলে দেখানো হবে শান্তনু হালদার নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘দি ওয়েভ’, রোকনুজ্জামান অর্কের ছবি ‘নয়ন তারা’, শাহীন দিল-রিয়াজের প্রামাণ্যচিত্র ‘লোহাখোর’ ও শহীদুল ইসলাম অলি নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘তাৎপর্যবিহীন’। সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হবে এনায়েত করিম বাবুল নির্মিথ প্রামাণ্যচিত্র ‘চাক্কি’, সুমনা সিদ্দিকীর স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি ‘মাধো’, সেন্টু রায়ের প্রামাণ্যচিত্র ‘আলতাফ মাহমুদ’, রোকেয়া প্রাচীর প্রামাণ্যচিত্র ‘বায়ান্ন’র মিছিল’ ও মৃদুল মামুন পরিচালিত প্রামাণ্যচিত্র ‘সবাই একজাত’। উৎসবের তৃতীয় দিন কাল মঙ্গলবারও বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টার সময়সূচীতে দেখানো হবে ছবি। দুইটি পৃথক সূচীতে প্রদর্শিত হবে স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র মিলিয়ে প্রদর্শিত হবে ১৪টি চলচ্চিত্র। উৎসবের শেষ দিন ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে সমাপনী আয়োজন। এদিন স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্যচিত্র উভয় বিভাগে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ নির্মাতা ও বিশেষ জুরি বিভাগে দেয়া হবে পুরস্কার। পাঁচ সদস্যের একটি জুরি কমিটির রায়ের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য দুই বিভাগে ১ লাখ টাকা করে দু’জনকে এবং দুইজন শ্রেষ্ঠ নির্মাতাকে ৫০ হাজার করে টাকা দেয়া হবে। বিশেষ জুরি পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতাকে দেয়া হবে সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র। এছাড়া উৎসবে অংশগ্রহণকারী সকল নির্মাতাকে দেয়া হবে সনদপত্র। উৎসবের জন্য বিভিন্ন বিভাগে জমা পড়ে ১৩৩টি ছবি। সেগুলোর ভেতর থেকে বাছাই করে ৩৫টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ২৯টি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নির্মিত উল্লেখ্যযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে ১১টি প্রামাণ্যচিত্র ও ৯টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচন করা হয়েছে। আলোকচিত্রে মহাত্মা গান্ধী ॥ রবিবার ছিল ভারতের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ১৪৭তম জন্মজয়ন্তী। জন্মদিনে স্মরণ করা হলো উপমহাদেশের এই কিংবদন্তি রাজনীতিবিদকে। তাঁর বর্ণাঢ্য জীবন আশ্রিত আলোকচিত্র নিয়ে শুরু হলো প্রদর্শনী। ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। দুপুর ১২টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে মহাত্মা গান্ধীর শৈশব-কৈশোরের নানা স্মৃতির সঙ্গে উঠে এসেছে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের নানা ইতিবৃত্ত। ফ্রেমবন্দী হয়েছে সত্যাগ্রহ, অসহযোগ আন্দোলনের নানা মুহূর্ত। ভারতবর্ষের স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তির আন্দোলনের কারণে ঘুরে গান্ধী বেড়িয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। সেসব ছবিও ঠাঁই পেয়েছে প্রদর্শনীতে। বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে গান্ধীর সাক্ষাত, রাজনৈতিক সভা, সাংবাদিক সম্মেলন কিংবা জনসভায় তাঁর বিভিন্ন বক্তৃতার খ-চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে এসব আলোকচিত্রে। মানবমুক্তির দীক্ষা নিয়ে বিশ্বজুড়ে ঘুরে বেড়ানো মহাত্মা গান্ধী শান্তির দূত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এসব আলোকচিত্রে। ফ্রেমবন্দী হয়েছে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, মদনলাল বসু ও ড. রাজেন্দ্র প্রসাদের সঙ্গে বৈঠকের একান্ত মুহূর্তগুলো। ১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় পূর্ববঙ্গে ছুটে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। ট্রেনের তৃতীয় শ্রেণীর কামরায় চেপে তিনি হাজির হন নোয়াখালীতে। সেই মুহূর্তগুলোও উঠে এসেছে প্রদর্শনীতে। একটি ছবিতে দেখা যায়, চরকায় সুতা কেটে নিজের কাপড় বুনছেন মহাত্মা গান্ধী। একান্ত অবসরে শৈশবের ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে একটি দারুণ মুহূর্ত উঠে এসেছে একটি ছবিতে। প্রদর্শনীর উদ্বোধনী বক্তব্যে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ছবিগুলোর মাধ্যমে আমরা গান্ধীজিকে এই প্রজন্মের আরও কাছে নিয়ে যেতে চাই। তার মানবপ্রেম, রাজনৈতিক দর্শনের কথাও আমরা তুলে ধরতে চাই তাদের সামনে। নাট্যপুরাণ সম্মাননা পেলেন সাত নাট্যজন ॥ নাট্যসংগঠন নাট্যপুরাণের পঞ্চম বর্ষে পর্দাপণ উপলক্ষে সম্মাননা জানানো হলো সাত গুণী নাট্যজনকে। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, ঝুনা চৌধুরী, আকতারুজ্জামান, আহম্মেদ গিয়াস, হাফিজুর রহমান সুরুজ ও প্রবীর দত্ত। রবিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় স্টুডিও থিয়েটার হলে সম্মাননাপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন নাট্যজন আতাউর রহমান এবং দলের প্রধান সম্পাদক তুষার রায়। সম্মাননা পর্ব শেষে মঞ্চস্থ হয় নাট্যপুরাণের নাট ‘অমাবস্যা’। প্রযোজনাটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা প্রবীর দত্ত।
×