ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

আনন্দ আয়োজনে উদ্যাপিত চ্যানেল আইর বর্ষপূর্তি

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২ অক্টোবর ২০১৬

আনন্দ আয়োজনে উদ্যাপিত চ্যানেল আইর বর্ষপূর্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পথচলার আঠারো বছরে পদার্পণ করল চ্যানেল আই। আনন্দ আয়োজনে উদযাপিত হলো ১৭তম বর্ষপূর্তি। ‘আঠারোর জয়ধ্বনি’ স্লোগানে শনিবার দিনভর বর্ণিল আয়োজন আর উৎসবমুখরতায় উদযাপিত হয় বেসরকারী টিভি চ্যানেলটির প্রতিষ্ঠাবার্র্ষিকী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শুভেচ্ছা ও আশীর্বাণীতে প্রাণবন্ত ছিল প্রতিষ্ঠানটির তেজগাঁওয়ের কার্যালয়। আশ্বিনের তপ্ত রোদেও যেন হেসে উঠেছিল উৎসব আঙিনা। মঞ্চে বেজেছে দেশ ও দশের গান। উড়েছে লাল-সবুজ বেলুন। নানা বয়সী শ্রেণী-পেশার মানুষের উচ্ছল পদভারে বয়ে যায় সতত আনন্দের ফল্গুধারা। ১৭তম বর্ষপূর্তিতে শনিবার এভাবেই মেতেছিল তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই কার্যালয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসিমুখে সুহƒদদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, আবদুর রশীদ মজুমদার, জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, মুকিত মজুমদার বাবুসহ চ্যানেল আইয়ের পরিচালনা পর্ষদের নেতৃবৃন্দ। তবে ১৮ বছরে পদার্পণের মুহূর্ত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা এক মিনিটে চ্যানেল আইয়ের চেতনা চত্বরে ছাতিমতলায় কেক কাটার সময়টি ছিল অন্যরকম আনন্দের। মূলত এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান। আনন্দঘন এ আয়োজনে শামিল হন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, বিএনপি নেতা আব্দুুল্লাহ আল নোমান, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, এম. সাখাওয়াত হোসেন, মিজানুর রহমান শেলীসহ বিশিষ্টজনরা। শনিবার চ্যানেল আই ভবনের খোলা প্রাঙ্গণের চেতনা চত্বরে ছিল দিনব্যাপী মিলনমেলা। ‘চ্যানেল আইয়ের আজ জন্মদিন আনন্দভরা সেই শুভদিন’ গানের সঙ্গে বেলা সোয়া এগারোটায় একঝাঁক লাল-সবুজ রঙের বেলুন আকাশে ওড়ানোর মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উৎসব মঞ্চে ছিলেনÑ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, নাট্যজন আতাউর রহমান, কেরামত মাওলা, সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফকির আলমগীর, চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন, কবি মুহাম্মদ সামাদ, সুরকার শেখ সাদী খান, কণ্ঠশিল্পী খালিদ হোসেনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। চেতনা চত্বরে অস্থায়ী উৎসব মঞ্চে পরিবেশিত হয় বৈচিত্র্যময় দেশ ও দশের গান। গান শোনান খুরশীদ আলম, রথীন্দ্রনাথ রায়, ফকির আলমগীর, শাহীন সামাদ, সাদী মহম্মদ, ফেরদৌস ওয়াহিদ, শফি ম-ল, পলাশ, বাদশা বুলবুল, আগুন, বাপ্পা মজুমদার, রুমানা ইসলাম, দিনাত জাহান মুন্নী, কোনাল, ঝিলিক শারমিন ও জলের গান। উৎসব আরও জমজমাট করতে বসেছিল ২৫টি স্টল। সন্ধ্যা নামার আগেই চ্যানেল আইয়ের অস্থায়ী উৎসব মঞ্চে হাজির হন মন্ত্রিসভার সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিকসহ সংস্কৃতি ভুবনের কীর্তিমান মানুষেরা। আতশবাজির ঝলকানিতে রঙিন হয়ে ওঠে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়সংলগ্ন আকাশ। সন্ধ্যা ৭টায় কেক কাটার মধ্য দিয়ে শেষ হয় ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কার্যক্রম। এ পর্বে অংশ নেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রমুখ। এ সময় চ্যানেল আইয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ পর্ব পরিচালনা করেন জিল্লুর রহমান। জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার সমাপনী ॥ সারাদেশের ১৯৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা। ৬৫ জেলাকে ১২ অঞ্চলে ভাগ করা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় স্কুল ও কলেজের ৬০০ বিতার্কিক। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় ‘সংবাদ মাধ্যমে শিশু : ধারণা ও নীতি-নৈতিকতা’ শীর্ষক জাতীয় এ বিতর্ক প্রতিযোগিতা। শনিবার আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে শেষ হয় প্রতিযোগিতার কার্যক্রম। বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেরা বিতার্কিকদের হাতে তুলে দেয়া হয় পুরস্কার। প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআরডিআই)। নানাভাবে প্রতিযোগিতা আয়োজনে সহযোগিতা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, ইউনিসেফ ও বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন (বিডিএফ)। জাতীয় বিতর্ক উৎসবের স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। স্কুল পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চট্টগ্রামের ডাঃ খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও রানার্সআপ হয়েছে কালীগঞ্জের করিমুদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। কলেজ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা কলেজ ও রানার্সআপ হয়েছে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, তথ্য অধিদফতর, যুব অধিদফতর, ক্রীড়া অধিদফতরসহ বিভিন্ন অধিদফতর থাকলেও শিশুদের জন্য আলাদা কোন অধিদফতর নেই। শিশুদের মানস গঠনে ও তাদের বিকাশের লক্ষ্যে শিশু অধিদফতর থাকাটা অত্যাবশ্যক। টকশোতে রাজনীতি, সমাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বললেও শিশুদের ব্যাপারে সবাই নিশ্চুপ। সংবাদপত্রকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিতর্ক একটি শিল্প। এ শিল্পের মাধ্যমে শিশুরা তাদের মনন ও মানসের বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হবে। শিশুদের বিকাশে ও তাদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- ডাঃ আব্দুন নূর তুষার, তথ্য সচিব মরতুজা আহমেদ, ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেনবাদার। অনুষ্ঠানের সমাপনী পর্বের আগে ‘আমাদের গণমাধ্যম শিশুবান্ধব নয়’ বিষয়ের ওপর আলোচনার ঢংয়ের বিতর্ক পর্বে পক্ষে বিতর্ক করেন হাসান মাহমুদ বিপ্লব, ড. সাদেকা হালিম ও আব্দুন নূর তুষার এবং বিপক্ষে বিতর্ক করেন বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ূম ও সমকালের সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত। বিতর্ক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের আগে বিশ্লেষণধর্মী বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
×