ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দশ টাকার চাল কালোবাজারে ॥ আটক তিন

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২ অক্টোবর ২০১৬

দশ টাকার চাল কালোবাজারে ॥ আটক তিন

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজি দরের সরকারী চাল কালোবাজারে বিক্রির সময় দুটি মিনিট্রাক আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো- সদর উপজেলার শিয়ালকোল গ্রামের রাকিব হোসেন, শিবনাথপুরের আলমগীর হোসেন এবং পৌর এলাকার হোসেনপুরের সোহাগ (ট্রাকচালক)। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি ট্রাক আটক করা হয়। ওই ট্রাকে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজি দরের ৫০ কেজি ওজনের ৬৫ বস্তা সরকারী চাল ছিল। পুলিশ আরও জানায়, আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে কালোবাজারে চাল বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে। খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রেন জং চাম্বুগং থানায় আসেন এবং তার উপস্থিতিতে ট্রাকে থাকা চালের বস্তাগুলো গুনে নিশ্চিত করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় জরিমানা সংবাদদাতা দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা থেকে জানান, দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের পারকৃষ্ণপুর বাজারে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে ডিলারকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার দুপুর ১২টায় পারকৃষ্ণপুরের নাহিদ স্টোরে সরকারের বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হচ্ছিল। জনপ্রতি ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে কমপক্ষে ৩-৪ কেজি চাল কম দেন প্রতিষ্ঠানের মালিক নাহিদ হোসেন। এ সময় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে স্থানীয়রা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এরপর তারা প্রতিষ্ঠানের মালিক নাহিদ হোসেন ও কর্মচারী রেজাউল হককে গণধোলাই দিয়ে আটকে রাখে। ‘১০ টাকা কেজি চাল কিনতে পারমু ভাবতে পারি নাই...’ নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১ অক্টোবর ॥ কোন দিন ১০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারবেন ভাবতেই পারেননি নুর জাহান বেগম। তার ৮ সদস্যের সংসারে প্রতিদিন ভাত রান্না করতে দুই কেজি করে চাল লাগত। তাই ৩০-৩৫ টাকা দরে সেই চাল কেনার মতো সামর্র্থ্য ছিল না তার। অথচ এক মাসের সেই চাল তিনি কিনেছেন মাত্র ৩শ’ টাকায়! তার কাছে এ ব্যাপারটি আশ্চর্য হওয়ার মতোই। নুরজাহান বেগমের স্বামীর নাম সালাম হাওলাদার। নাজিপুর ইউনিয়নের ছোট ডালিমা গ্রামে তার বাড়ি। স্বামী দিনমজুর। যেদিন কাজ করেন সেদিন তার বাড়িতে চুলায় আগুন জ্বলে। গরিবের কাছে বর্ষার মৌসুম যেন দুর্ভোগের । এই মৌসুমে তাদের হাতে কাজ থাকে না। তাই কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হয় তাদের। নুরজাহান বেগম বলেন, কোন দিন ১০ টাকা কেজি দরে চাউল কিনতে পারমু ভাবতে পারি নাই। ঘরে চাল থাকলে পোড়া মরিচ আর পেঁয়াজ দিয়াও ভাত খাওন যায়। অহন আর চাল কেনার চিন্তা নাই। ৩শ’ টাকায় (৩০ কেজি) পুরা মাসের চাল কিনা বাড়ি যাচ্ছি। শেখ হাসিনারে ধন্যবাদ, আল্লাহ তারে বাঁচাইয়া রাখুক। নুরজাহান বেগমের মতো ওই গ্রামের আরও হতদরিদ্র নারী- পুরুষ ১০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পেরে খুশি হয়েছেন। বাউফলের ১৫ ইউনিয়ন মোট উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের অতি দরিদ্র ১৯ হাজার ২শ’ ৩২ পরিবারকে এ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে বাউফল উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১০টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন চীফ হুইফ আ স ম ফিরোজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
×