ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে হামিদুজ্জামান খানের চিত্রকলা প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১ অক্টোবর ২০১৬

শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে হামিদুজ্জামান খানের চিত্রকলা প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সত্তরেও দারুণ সৃষ্টিশীল এক শিল্পী হামিদুজ্জামান খান। মূলত ভাস্কর হলেও মননের টানে ফিরে যান চিত্রপটে। নানা বিষয়কে উপজীব্য করে রাঙিয়ে তোলেন ক্যানভাস। বিশেষ করে জলরঙে চিত্রিত শিল্পীর চিত্রকর্ম অনন্য বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল। বরেণ্য এ শিল্পীর জলরঙের ৭০টি চিত্রকর্ম নিয়ে ভিন্নধর্মী প্রদর্শনী শুরু হলো রাজধানীর শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে। শিরোনাম ‘অব নেচার, বোটস এ্যান্ড ফেসেস’। এবারের প্রদর্শনীতে নারীর ফিগারেটিভ কাজ শিল্পীর নতুন সংযোজন। ব্রাশের টানে সেসব ফিগারে কবিতার মতোই ছন্দময়তা ফুটে উঠেছে। শরতের সন্ধ্যায় প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহম্মদ আজিজ খান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, শিল্প সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্পাঙ্গনের পরিচালক রুমী নোমান। অনুভূতি প্রকাশ করে হামিদুজ্জামান খান বলেন, আমি না ঘুরলে ছবি আঁকতে পারি না। যেখানেই যাই মানুষ দেখি। তাদের জীবনযাপন, চলাফেরা, বাজার, বাড়িঘর সব। এসবই মনের মধ্যে একটা ছাপ ফেলে; যা উঠে আসে ক্যানভাসে। শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী বলেন, হামিদুজ্জামান সব সময় ব্যতিক্রম। তার ক্যানভাস নিছক ছবি নয়, ফটোগ্রাফ নয়; তার ছবিতে ভিন্নতা থাকে, নতুনত্ব থাকে। প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী শিল্পীর ক্যানভাসে কবিত্বময় হয়ে ওঠে। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, শিল্পের প্রকাশে হামিদুজ্জামান খান অক্লান্ত। তরুণদের মতোই পরিশ্রমী শিল্পী। তার নিজেকে প্রকাশের এই বাসনা শুধু মুগ্ধই করে না। তার অধ্যবসায় ও নিষ্ঠা আমাদের গর্বিত করে। হামিদুজ্জামান খানের শিল্পসাধনার এক অনন্ত উৎস হচ্ছে ভ্রমণ। গোটা বাংলাদেশকে ছুঁয়ে-ছেনে দেখেছেন শিল্পী হামিদুজ্জামান। পাশাপাশি ঘুরেছেন পৃথিবীর নানা দেশ। ভ্রমণকালে তিনি দেখেন প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্যাবলী, দেখেন মানুষ, সংস্কৃতি ও সভ্যতার নানা নিদর্শন। ঘুরেফিরে শিল্পীর ক্যানভাসে উঠে আসে সেই ভ্রমণের নান্দনিক অভিজ্ঞতা। রাজধানীর শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে থরে থরে সাজানো তার জলরঙের নানা ছবি। তাতে উঠে এসেছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, ইন্দোনেশিয়াসহ পৃথিবীর নানা দেশের অনুপম দৃশ্যাবলী; পাশাপাশি উঠে এসেছে ফিগারেটিভ কাজের অপূর্ব নিদর্শন। প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায়, নিকষ কালো অন্ধকারে যেন বাতিঘরের মতো জেগে উঠেছে সাগর। সেখানে চকিতে আলোর ঝলকানিতে আবছা দেখা যায় নৌকা, পানিতে ঢেউয়ের দোল, আকাশের মেঘÑ চরাচরের নিঃসীম শূন্যতার মাঝে রহস্যময় প্রকৃতি। অন্ধকারে ফুটে ওঠে কালো পাহাড়ের প্রতিচ্ছবি। মনে হয়, অসীম নীরবতা নিয়ে হাজার বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়টি। হামিদুজ্জামান খানের ল্যান্ডস্কেপ নিছক ছবি নয়, তার ক্যানভাস কবিতার মতোই রহস্যময়, নান্দনিক। শিল্পী বাংলাদেশের রূপ-বৈচিত্র্যে মুগ্ধ। এবারের প্রদর্শনীতে তার ছাপ স্পষ্ট। অন্ধকার নদী তীরের কাব্য, কালো পাহাড়ের নীরবতা এক সুরেলা আবহ তৈরি করে। জলরঙে অসংখ্য মুখ মনে করিয়ে দেয় বিচিত্র জীবন ও মানুষের কথা। রুমী নোমান বলেন, হামিদুজ্জামান খান বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী। এবারের প্রদর্শনীতে শিল্পীর নতুন ধরনের ছবি শিল্পরসিকদের আকৃষ্ট করবে। বিশেষ করে নারী ফিগারেটিভ ছবি আর মুখোশ। প্রদর্শনীতে সাম্প্রতিক আঁকা ৭০টি জলরঙ আর স্কেচ স্থান পেয়েছে। ধানম-ির ৩০ নম্বর সড়কের গ্যালারি শিল্পাঙ্গনে প্রদর্শনী চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে চিত্রপ্রদর্শনী ॥ চিত্রকলায় নিবেদিতপ্রাণ এক শিল্পী মনসুর উল করিম। শিল্প সৃজনে একই সঙ্গে দার্শনিকতা ও নন্দনতাত্ত্বিক উপলব্ধির সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন এই চিত্রকর। ধাবিত হয়েছেন নতুন শিল্পরীতির পানে। বরেণ্য এই চিত্রশিল্পীর ২৬তম একক প্রদর্শনী শুরু হলো শুক্রবার। শিরোনাম ‘কাল’। যৌথভাবে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ান ও আর্টকন। শরতের বিকেলে গ্যালারি টোয়েন্টিওয়ানে যৌথভাবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী মনিরুল ইসলাম ও শিল্প সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মনসুর উল করিম। সভাপতিত্ব করেন গ্যালারি টোয়েন্টি ওয়ানের পরিচালক শামীম সুব্রানা। দুই শিল্পীর শিল্পকর্ম নিয়ে ওপেন স্টুডিও ॥ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২০১৫ সাল থেকে প্রবর্তিত হয়েছে সুবীর চৌধুরী শিল্পচর্চা বৃত্তি; যা পেয়েছেন দুই তরুণ শিল্পী Ñঈশিতা মিত্র তন্বী এবং আবীর সোম। দুই শিল্পীর নির্বাচিত শিল্পকর্ম নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে ওপেন স্টুডিওর । অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিল্পী ঈশিতা মিত্র তন্বী, শিল্পী আবীর সোম, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং ভিস্যুয়াল আর্টস প্রোগ্রামের প্রধান কিউরেটর তানজীম ওয়াহাব। অনুষ্ঠানে সুবীর চৌধুরী শিল্পচর্চা বৃত্তির ওপর বেঙ্গল ফাউন্ডেশন নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আগামী ২১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ প্রদর্শনী। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এবিএম মূসা স্মারকগ্রন্থের প্রকাশনা ॥ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এবিএম মূসা স্মারকগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এবিএম মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্মারকগ্রন্থের সম্পাদকম-লীর সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, নিউজ টুডে সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক-প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, স্মারকগ্রন্থের প্রকাশক মাওলা ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী আহমেদ মাহমুদুল হক প্রমুখ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও এবিএম মূসার মেয়ে পারভীন সুলতানা ঝুমা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গ্রন্থের সম্পাদকম-লীর সদস্য সাংবাদিক হাসান হাফিজ। উপস্থিত ছিলেন এবিএম মূসার স্ত্রী সেতারা মূসা। খেলাঘরের দিনব্যাপী কর্মশালা ॥ শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘এসো গড়ি খেলাঘর, এসো গড়ি বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা। এতে সভাপতিত্ব করেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিম-লীর চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা পান্না কায়সার।
×