ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্মার্টকার্ড বিতরণে ব্যয় ৮০ কোটি টাকা, ৩ অক্টোবর শুরু

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১ অক্টোবর ২০১৬

স্মার্টকার্ড বিতরণে ব্যয় ৮০ কোটি টাকা, ৩ অক্টোবর শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে স্মার্টকার্ড বিতরণে ইসির ব্যয় হবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য প্রচার, যানবাহন খরচ ও কর্মকর্তাদের বিশেষ করে কার্ড বিতরণে অপারেটরকে দেয় খরচ হিসেবে এ ব্যয় ধরা হয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর থেকে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ স্মার্টকার্ড বিতরণ শেষ করবে ইসি। তারা জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে নয় কোটি ভোটারের হাতে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য ঢাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্যাম্প করা হবে। যারা স্মার্টকার্ড নিতে আসবেন তাদের কিছু করণীয়ও বেঁধে দিয়েছে ইসি। বিশেষ করে স্মার্টকার্ড নেয়ার সময় প্রত্যেক নাগরিককে সশরীরে ক্যাম্পে হাজির হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। সঙ্গে লেমিনেটিং করা মূল জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসতে হবে। যারা ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি তাদের ভোটার নিবন্ধনের সিøপ নিয়ে ক্যাম্পে আসতে হবে। ভোটার নিবন্ধন সিøপ দেখালেই স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা নিবন্ধন সিøপ হারিয়ে গেছে তাদের এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করতে হবে। এর পর জিডির মূল কপি নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর থেকে ঢাকার রমনা ও উত্তরা থানার অধীনে মোট ৪টি ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যে এ দুটি থানার স্মার্টকার্ড বিতরণের বিস্তারিত সময়সূচী জানানো হয়েছে। সময়সূচী অনুযায়ী রমনা থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে বেইলী রোডে অবস্থিত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে। এই কেন্দ্রে ৩ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। এর পর ২০ নম্বর ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে ১৩ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। এই ওয়ার্ডে অবস্থিত সেগুনবাগিচা হাইস্কুলে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে ২২ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এই ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্যাম্প করা হবে। অপরদিকে উত্তরা থানার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ অক্টোবর থেকে স্মাটকার্ড দেয়া হবে। এই ওয়ার্ডের যারা বসিন্দা এবং যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে তাদের ৭ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত উত্তরা হাইস্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে হবে। এই ওয়ার্ডে ৩ তারিখ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যারা নির্দিষ্ট সময়ে কার্ড সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হবেন তাদের নিজ নিজ স্ব উপজেলা/থানা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের মণির প্রতিচ্ছবি দিয়ে এবং লেমিনেটেড কার্ড ফেরত দিয়ে স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে হবে। তবে নতুন করে ১০ আঙ্গুলের ছাপ মূলত ভোটারদের জন্য রক্ষিত ইসির সার্ভারেই সংরক্ষণ করা হবে। সার্ভার থেকে যাতে কেউ কারও তথ্য নকল করতে না পারে। তারা জানিয়েছেন, স্মার্টকার্ডও কেউ ইচ্ছে করলে নকল করতে পারবে না। কারণ এটা নকল করার মেশিন কারও হাতে নেই। এই স্মর্টকার্ড নকল করতে হলে অবশ্য অতি মূল্যমানের স্মার্টকার্ড তৈরির মেশিন বিদেশ থেকে আনতে হবে। এ কারণে কেউ স্মার্টকার্ড নকল করতে চাইবে না। তারা জানান, প্রতিটি স্মার্টকার্ড তৈরিতে ইসির ব্যয় হয়েছে ২ ডলার করে। প্রত্যেক নাগরিকের কাছে এটি বিনামূলে দেয়া হবে। তবে পরে কারও স্মার্টকার্ড হারিয়ে গেলে উল্লিখিত মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে নতুন করে স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। প্রতিটি স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য তাদের ব্যয় হচ্ছে ৯ টাকা করে। স্মার্টকার্ড বিতরণে ৮০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে অপারেটরদের কার্ডপ্রতি ৫ টাকা করে সম্মানী হিসেবে ৪৫ কোটি টাকা, প্রচারে ১০ কোটি এবং বিতরণকারীদের যানবাহন ব্যয় ১০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মোঃ সালেহউদ্দিন জানান, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশজুড়ে স্মার্টকার্ড বিতরণের লক্ষ্যে কমিশনের কাছে কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে। ইসি জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন ও কুড়িগ্রামে স্মার্টকার্ড বিতরণ সম্পন্ন করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি সিটি কর্পোরেশনে বিশেষ করে খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। তৃতীয় পর্যায় দেশের ৬৪টি জেলা সদরে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। চতুর্থ পর্যায়ে এসে উপজেলা পর্যায়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। এর জন্য নির্ধারিত সময়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি, মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে প্রচারের মাধ্যমে স্মার্টকার্ড বিতরণের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানিয়ে দেয়া হবে।
×