ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আমদানি রফতানি পণ্য আত্মসাতে কয়েক চক্র তৎপর

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১ অক্টোবর ২০১৬

আমদানি রফতানি পণ্য আত্মসাতে কয়েক চক্র তৎপর

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে আমদানি ও রফতানি পণ্য হাতিয়ে নিতে বেশ কয়েকটি চক্র কাজ করছে। এসব চক্র চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের কাছে রয়েছে এমন তথ্য। কিন্তু এমন অপরাধী চক্রের সদস্যদের তালিকা বন্দর থানায় থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়ার নজির নেই। চট্টগ্রাম ইপিজেড থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত এসব চক্রের সদস্যরা নজর রেখেছে বিভিন্ন শিপিং এজেন্টের প্রতিনিধিদের গতিবিধি ও বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট চালক ও হেলপারদের ওপর। গত ২৮ সেপ্টেম্বর বন্দর থানা পুলিশ গাড়িচালক ইসরাফিল ও হেলপার সেলিমকে গ্রেফতার করে আমদানি পণ্য চুরির ঘটনায়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের ৩৬০ রোল কাপড়। এর আগে চট্টগ্রামে গত ৩ সেপ্টেম্বর ইপিজেড থানাধীন নিউমুরিং এলাকার জাহিদ হোসেনের গোডাউন হতে ৩৬৯ ব্যাগ চোরাই জিরা উদ্ধার করা হয়, যার মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। আমদানিকারক বিএসএ ফ্যাশন লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, চীন থেকে তারা ১ হাজার ১৩০ রোল ফেব্রিক্স বা কাপড় আমদানি করেছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এসব কাপড় খালাসের দায়িত্ব দেয়া হয় আমদানিকারকের নিজস্ব সিএন্ডএফ এজেন্ট ভেনগার্ড গার্মেন্টস লিমিটেডকে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর এসব কাপড় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস করে পাহাড়তলীর সাগরিকা সড়কের বিএসএ ফ্যাশন লিমিটেডের গুদামে পৌঁছানোর জন্য মেসার্স সায়েম এ্যান্ড ব্রাদার্স ট্রান্সপোর্টকে দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে ৩টি কাভার্ডভ্যান যথাক্রমে চট্টমেট্রো-ট-১১-১৫২৫, ঢাকা-ন-৪৮১২ ও মাগুরা-ট-০২-০০৩০ নম্বর কাভার্ডভ্যানে কাপড়গুলো বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ড হতে লোড করা হয়। পরে সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিটি কাভার্ডভ্যানের দরজার তালা প্লাস্টিকের সিলগালা করে দেয়। রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর হতে সাগরিকার বিএসএ ফ্যাশন লিমিটেডের গুদামের উদ্দেশে রওনা দেয়। রাত ১২টার মধ্যে দুটি গাড়ি গুদামে পৌঁছে গেলেও (মাগুরা-ট-০২-০০৩০) নম্বরের কাভার্ডভ্যানটি পৌঁছায়নি। ওই গাড়িতে প্রায় ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের ৩৬০ রোল ফেব্রিক্স ছিল। বন্দর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৮ সেপ্টেম্বর রাত দেড়টার দিকে বন্দর থানাধীন মনসুর মার্কেটের সামনে রাস্তার পার্শ্বে ওই গাড়িটি দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল। গাড়ির মালামাল বিক্রি করার জন্য চালক ও হেলপারসহ একটি চক্র মনসুর মার্কেটের সামনে সিএন্ডএফ প্রতিনিধি কর্তৃক তালায় প্রদত্ত সিল অক্ষত রেখে কৌশলে বডি থেকে তালা খোলার চেষ্টা চালাচ্ছিল। স্লাইরেন্স ও স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দরজার তালা অক্ষত অবস্থায় খোলার সময় বন্দর থানা পুলিশ গাড়িচালক ইসরাফিল ও হেলপার সেলিমকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। এ সময় উদ্ধার করা হয় প্রায় ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের ৩৬০ রোল কাপড়। এমএস ট্রেডার্স নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান তুর্কী থেকে ৪০০০ ব্যাগ জিরা আমদানি করে গত আগস্টে, যার প্রতি ব্যাগে ২৫ কেজি করে জিরা ছিল। জে কে শিপিং নামীয় সিএন্ডএফ এজেন্টকে চট্টগ্রাম বন্দর হতে খালাস করার দায়িত্ব দেয়া হয়। সিএন্ডএফ এজেন্টের মালিক মোঃ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া ২ হাজার ব্যাগ জিরা চট্টগ্রাম বন্দর হতে ডেলিভারি করে চট্টগ্রামের মাঝিরঘাট কবির মাঝির গোডাউনে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
×