ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবৈধ অর্থ আদায়ের জের ॥ কারাগারে হামলা-ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ১ অক্টোবর ২০১৬

অবৈধ অর্থ আদায়ের জের ॥ কারাগারে হামলা-ভাংচুর

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ৩০ সেপ্টেম্বর ॥ জামিনে মুক্ত আসামিদের স্বজনদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা আদায়ের ঘটনায় শেরপুরে কারারক্ষী ও দর্শনার্থীদের মধ্যে মারপিট-পাল্টা মারপিটের ঘটনায় ২ কারারক্ষীসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুর জেলা কারাগারে ওই ঘটনায় আহত সেলিম মোল্লা ও আবু জাফর নামে ২ কারারক্ষী ও দর্শনার্থী শ্রমিক নেতা আলমগীর হোসেন বিশু জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তবে আলমগীর হোসেন বিশুর অবস্থা গুরুতর। ওই ঘটনায় শুক্রবার সকালে জেলার ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে হামলা-ভাংচুর ও এ্যাসল্টের অভিযোগে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আলমগীর হোসেন বিশু ও মুক্তার আলীসহ ১০-১২ জনকে স্ব-নামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে অভিযোগ উঠেছে, কারাগারে দীর্ঘদিনের অনিয়ম-দুর্নীতির ধারাবাহিকতায় জামিনে আসামিদের স্বজনদের কাছ থেকে অনৈতিক অর্থ হাতিয়ে নেয়ার কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে শেরপুর জেলা কারাগারে সুপার মজিবুর রহমানের যোগদানের পর থেকেই ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে। হাজতি আসামিদের সুযোগ-সুবিধার প্রশ্নসহ সাক্ষাতে অর্থ আদায়, সেলে থাকা আসামিদের কাছ থেকে এককালীনসহ প্রতি মাসে অর্থ আদায়, জাতীয় পত্র-পত্রিকা বাদ দিয়ে কমিশন আদায়ের মাধ্যমে অখ্যাত ও আঞ্চলিক পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রদান যেমন চলছে নিয়মিতভাবে, ঠিক তেমনি অফিস স্টাফ ও প্রধান কারারক্ষীসহ কতিপয় কারারক্ষীদের মামলা-মোকদ্দমায় দালালি, মাদক সেবন ও ব্যবসায় জড়িয়ে থাকার ঘটনা ওপেন সিক্রেট। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে আসামিদের আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে কারারক্ষী জাফর আলী ও সেলিম মোল্লা প্রকাশ্যে নগদ টাকা হাতিয়ে নিলে কারাগারের পার্শ্ববর্তী নৌহাটা এলাকার বাসিন্দা পরিবহন শ্রমিক নেতা আলমগীর হোসেন বিশু ড্রাইভারের সঙ্গে কারারক্ষীদের বাগ্বিত-া হয়। ওই সময় কারারক্ষীরা তাকে মূল ফটকের বাইরে যাওয়ার নির্দেশ দিলে বিশু ড্রাইভারের পক্ষে অবস্থান নেয় মুক্তার আলী নামে অপর এক ড্রাইভার। বাদানুবাদের একপর্যায়ে তাদের কারারক্ষীরা ওই এলাকা থেকে বের করে দেয়। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কারারক্ষী জাফর আলীকে কারাগার মোড়ে পেয়ে মুক্তার আলী ও হমু ড্রাইভারসহ কয়েকজন তাকে লাঞ্ছিত করে। ওই ঘটনার পর বিশু ড্রাইভারকে জেলারের কথা বলে কারাগারে ডেকে পাঠালে সে প্রধান ফটক পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশের পরপরই একদল কারারক্ষী তাকে ভেতরে নিয়ে যায় এবং উপর্যুপরি পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। এরপর কারাগার মোড়সহ আশপাশে বিদ্যুত থাকার পরও হঠাৎ করেই কারাগারের লাইন বন্ধ করে দিয়ে কারারক্ষীরা অভ্যন্তরে বিচ্ছিন্নভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও চিৎকার শুরু করে পুলিশে খবর দেয় এবং থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তারা আহত শ্রমিক নেতা বিশু ড্রাইভারকে তুলে দেয়। শুক্রবার বিকেলে আহত বিশু ড্রাইভারের পাশে স্ত্রী শান্তি বেগম অভিযোগ করে বলেন, জামিনে মুক্ত আসামিদের কাছ থেকে কারারক্ষীরা অন্যায়ভাবে টাকা-পয়সা আদায় করলে তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তার স্বামী রোষানলে পড়েন।
×