ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বেড়ায় কলেজে আসে মেয়েরা বাইকে চেপে

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১ অক্টোবর ২০১৬

বেড়ায় কলেজে আসে মেয়েরা বাইকে চেপে

সংবাদদাতা, বেড়া, পাবনা, ৩০ সেপ্টেম্বর ॥ মেয়েদের সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল চালানোর ঘটনা এ দেশে নতুন নয়। কিন্তু মফস্বলের স্কুল বা কলেজে হয়ত প্রথম। মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে পাবনার বেড়া উপজেলার কাশীনাথপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজে। অদম্য ইচ্ছা আর শিক্ষা অর্জনের প্রচেষ্টা এ কলেজের শিক্ষার্থী রাফিয়া আক্তার মিম ও বেবী নাজনীনদের মধ্যে প্রবল। সমাজের কুসংস্কার মাড়িয়ে তারা ১০-১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রতিদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে আসে। বৃহস্পতিবার কলেজ ছুটির পর দেখা যায়, রাস্তার পাশ দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে তারা বাড়ি যাচ্ছে। একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী বেবী নাজনীন জানায়, ‘সে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার দূর থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে যাতায়াত করে। এতে তার অনেক সময় বেঁচে যায়। আগে যখন গাড়িতে যাতায়াত করত, তখন সময়মতো গাড়ি না পাওয়ার কারণে অনেক সময় ব্যয় হতো ও পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটত। এখন সেই সমস্যা আর নেই।’ একাদশ শ্রেণীর আরেক ছাত্রী রাফিয়া আক্তার মিম। কলেজ থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভাটিকয়া গ্রামে তার বাড়ি। কলেজে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটিও জায়গায় জায়গায় ভাঙ্গা। তাই যানবাহনে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই তার বাবা তাকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন। মিম জানায়, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা মেয়েরা কেন পিছিয়ে থাকব? ছেলেরা যদি মোটরসাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করতে পারে, তবে আমরা কেন নয়?’ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম খান বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে ব্যাপারটি দু’একজন সমালোচনার চোখে দেখলেও এখন সবকিছু স্বাভাবিক। শিক্ষার্থীরাও এখন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। ওদের দেখাদেখি আরও কিছু মেয়ে উৎসাহী হয়েছে। আগামীতে দূর-দূরান্তের অনেক শিক্ষার্থীই বাইক কিনবে বলে জানা গেছে।’ জীবনানন্দ দাশের নারী সীমাবদ্ধ ছিল শুধু চোখে। এ যুগের নারীরা সেই সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে পৌঁছতে পেরেছেন শীর্ষেÑ এমনই মন্তব্য করেছেন কলেজ গবর্নিং বডির সভাপতি এমএম শাহাবুদ্দিন টুটুল।
×