ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরের অধিকাংশ রাস্তা বেহাল

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ১ অক্টোবর ২০১৬

যশোরের অধিকাংশ  রাস্তা বেহাল

সাজেদ রহমান, যশোর অফিস ॥ যশোর শহরের অধিকাংশ প্রধান সড়ক সংস্কার কাজে প্রশংসা কুড়ালেও ৯টি ওয়ার্ডের বহু রাস্তা একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী। ভাঙ্গা এ রাস্তায় রিক্সাও আসতে চায় না। ফলে এলাকাবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ এখন চরমে। শহর ঘুরে দেখা গেছে, খড়কি-একরামুল হক সড়ক, ধোপাপাড়া-খড়কি, এমএম কলেজ দক্ষিণ রোড, ভোলা ট্যাংক, রায়পাড়া তুলোতলা, পৌরসভার সামনের সড়ক, মোল্লাপাড়া, শংকপুর ইসহাক সড়ক, পশ্চিম বারান্দীনাথপাড়া, খালধার-আমিনিয়া মাদ্রাসা রোড, রাঙ্গামাটি গ্যারেজ কদমতলা, হুশতলা-তাঁতীপাড়াসহ শহরের অনেক রোড বেহাল। দীর্ঘদিন এসব রোডে পরিকল্পিত কোন সংস্কার কাজ হয়নি। অনেক বছর আগেই পিচের পর ইট খোয়াও ওঠে গেছে। ফলে রাস্তাগুলো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাতে আলো ছাড়া চললেই হুমড়ি খেয়ে খানা-খন্দে পড়তে হয়। তাছাড়া এ্যাম্বুলেন্সও সময়মত পৌঁছাতে পারে না এসব এলাকায়। খড়কি-একরামুল হক সড়ক গিয়ে চোখে পড়েছে ইট খোয়ার বালাই নেই। এখন শুধু কাদা আর কাদা। একটু বৃষ্টি হলেই সড়ক অজপাড়া গায়ের কর্দমাক্ত রাস্তার রূপ নেয়, যা দিয়ে হেঁটে চলাও দুস্কর হয়ে পড়ে। একরামুল হক সড়কের দক্ষিণ মোড়ের বাসিন্দা হাতেম আলী বলেন, যতদূর মনে পড়ে ৫ বছর আগে ইট বালি রাস্তায় পড়েছিল। কিন্তু কিছু দিন পর তা আবার পানিতে ধুয়ে গেছে। একই কথা জানালেন রবিউল ইসলাম, আব্দুল মোমিন ও সালমান। তারা বলেন, সরু এ রোডে যখন তখন বড় বড় ট্রাক ঢুকে পড়ে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। তারা সংস্কারে জন্য পৌরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধোপাপাড়া-খড়কি রোডের এক বাসিন্দা বলেন, এ রোডে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে কোন কাজ হয় না। আশরাফ হোসেন নামে এক শিক্ষক বলেন, সরকারী এমএম কলেজ দক্ষিণ গেট-খড়কি রোডে দীর্ঘ ৪/৫ বছর কোন কাজ হয় না। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। রেলগেট হয়ে রায়পাড়া-তুলোতলা রোডে ইট ও খোয়া ওঠে মাটি বের হয়েছে। স্থানীয়রা যার যার বাড়ির সামনের অংশে ইট বালি ও ইটের ছোট খোয়া (ঘ্যাস) ফেলে রেখেছে। যার ফলে কোন মতে চলাচল করা যায়। এ রাস্তার পাশেই রেলরোড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ স্কুলে প্রতিদিন চলাচল করে ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া হাসান শেখ ও তার বন্ধুরা। কিন্তু কাদা টপকিয়ে তাদের স্কুলে যেতে হয়। তবে বেশি বৃষ্টি হলে আবার এ রাস্তায় আসে না তারা। কারণ তখন রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। রায়পাড়া-তুলোতলা রোডের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ইউনুস আলী এ ব্যাপারে বলেন, প্রায় ৪০ বছর এ রাস্তায় কেউ এক ঝুড়ি ইট ফেলেনি। একই অবস্থা শংকরপুর মুরগির ফার্ম রোড-কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল পর্যন্ত (ইসহাক সড়ক) রাস্তা বড়ই বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে কাজ না হওয়ায় ইট, বালি ওঠে গেছে। তাছাড়া একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। শংকরপুর এলাকার আব্দুল আজিজ বলেন, বেশ আগেই এ রাস্তায় কাজ করার জন্য ইট খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। চলাচলের অনুপোযোগী বগচর-তাঁতীপাড়া রোড। এ রাস্তায় মানুষ ঠিকমতো হাঁটতেও পারছে না বলে জানান লাভলু সরদার নামে স্থানীয়। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে পৌরসভার লোক দু’একটা আদলা ইট ফেলে রেখে যায়। একই অবস্থা মোল্লাপাড়া, ভোলা ট্যাংক, পালবাড়ি-গাজিরঘাট রোড, মোমিননগর-নওদাগ্রাম, নতুন খয়েরতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় রোড, কাঁঠালতলা-ঘোষপাড়া, ঘোপ-নওয়াপাড়া রোড, পাইপপট্টি হয়ে ফায়ার সার্ভিস মোড়, পোস্ট অফিসপাড়া, টিএন্ডটি-আদ-দ্বীন হাসপাতাল, স্টেডিয়ামপাড়া, ডিসি বাংলো রোড হয়ে ধর্মতলা, সিএন্ডবি রোড, খড়কি কবরস্থান রোডও চলাচলে অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। রাঙ্গামাটি গ্যারেজ-কদমতলা রোডের অবস্থা বেশ খারাপ। রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৫/২০ বছর এ রাস্তায় কাজ হয় না। খুবই কষ্টই চলাচল করতে হয়। এদিকে খালধার রোড-আমিনিয়া মাদ্রাসা রোড ও পশ্চিম বারান্দীনাথপাড়া সড়কের রাস্তাও বেহাল। মানিক উদ্দিন নামে এক দোকানী বলেন, দীর্ঘ ১০/১২ ধরে খালধার-আমিনিয়া মাদ্রাসা রোড ও পশ্চিম বারান্দীনাথপাড়া সড়কের কোন কাজ হয় না। এ ব্যাপারে যশোর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আহমান বারী বলেছেন, আগামী ৫ বছরের বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা রয়েছে। বরাদ্দ আসলেই ওই সব রাস্তা সংস্কার করা হবে। কিছু টাকা বরাদ্দও হয়েছে। যার কাজ খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে।
×