ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

থিয়েটারের উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতা জরুরী ॥ জাহিদ রিপন

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১ অক্টোবর ২০১৬

থিয়েটারের উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতা  জরুরী ॥ জাহিদ রিপন

জাহিদ রিপন। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে এক পরিচিত মুখ। একাধারে নির্দেশক, অভিনেতা এবং একজন সফল সংগঠক। তার প্রতিষ্ঠিত নাট্য সংগঠন স্বপ্নদলের নিয়মিত বিভিন্ন প্রযোজনায় নির্দেশনার পাশাপাশি তিনি নিজে অভিনয় করেন। তার নির্দেশনায় একাধিক নাটক দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ ও ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটক দুটি ভারতের রং উৎসবে এবং লন্ডনে মঞ্চায়নের পর প্রশংসতি হয়েছে। এর মধ্যে ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ নাটকটির ৭০টির অধিক প্রদর্শনী হয়েছে। আর ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকটি’র গত ২৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাট্য উৎসবে ৫০তম প্রদর্শনী হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মঞ্চ নাটক ও অন্য বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। প্রথমেই ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকের প্রেক্ষাপট জানতে চাই। জাহিদ রিপন : ২০১১ সালে রবীন্দ্রনাথের সার্ধোশততম জন্মবার্ষিকীতে নাটকটি আমরা সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় মঞ্চে আনি। তখন আমরা সিন্ধান্ত নিয়েছিলাম রবীন্দ্রনাথের এমন কোন নাটক মঞ্চে আনব যে বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং অতটা পরিচিত নয়। এ চিন্তা থেকে আমরা রবীন্দ্রনাথের কাব্যনাটক চিত্রাঙ্গদা বাছাই করি। কারণ নৃত্যনাট্য হিসেবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ অনেক দলই প্রদর্শনী করেছে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ কাব্যনাটকের বাইরে আরও একটি নাটক লিখেছিলেন ১৮৯২ সালে। আর কাব্য নাটক ‘চিত্রাঙ্গদা’ লিখেছিলেন এর ৪৪ বছর পরে ১৯৩৬ সালে। কিন্তু এ কাব্যনাটক রচনার পর আধুনিক মঞ্চে এ কাব্যনাটক মঞ্চায়ন হয়নি। এর ফলে রবীন্দ্রনাথের পরিচিত নাটকের বাইরে আরেকটি অপরিচিত নাটক আমাদের মাধ্যমে পরিচিত হয়ে উঠবে। আমরা তখন এ নাটক মঞ্চায়নের সিদ্ধান্ত নেই। ওই বছর বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় রবীন্দ্র নাটক নির্মাণের জন্য ১৪টি দলকে সহায়তা দেয়। তার মধ্যে আমাদের ‘চিত্রাঙ্গদা’ অন্যতম। সেই অর্থে নাটকটি বাংলাদেশের জনগণের টাকায় তৈরি হয়। নাটকটির মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ নারীকে একটা সম্মান দিয়েছেন। নারীকে কোন্ জায়গায় দাঁড়াতে হবে। নাটকের কহিনী মহাভারতের, এ কাহিনীর মাধ্যমে নারীর আজকের ভাবনা কী হওয়া উচিত, নারী ও পুরুষের সঙ্গে সম্মাননাবস্থানটা কী হবে সে বিষয়ে ঈঙ্গিত করেছেন রবীন্দ্রনাথ। ‘চিত্রাঙ্গদা’ যে পৌরাণিক কাহিনী সেটা একটা উপলক্ষ মাত্র। রবীন্দ্রনাথ নারী-পুরুষকে যে সম্মানাবস্থানটা দিয়েছেন সে জায়গাতে নাটকটি আমাদের কাছে অপরিহার্য মনে হয়েছে।
×