ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১ আইনটি ‘সর্বনাশা পরিণতি’ ডেকে আনবে॥ সৌদি কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ১৮:৩৭, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১ আইনটি ‘সর্বনাশা পরিণতি’ ডেকে আনবে॥ সৌদি কর্তৃপক্ষ

অনলাইন ডেস্ক॥ সৌদি আরবের পারস্য উপসাগরীয় মিত্র দেশগুলোও রিয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে নাইন ইলেভেন আইনের সমালোচনা করেছে। উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট জিসিসি মনে করে এটি দেশগুলোর সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। কেননা, নাইন ইলেভেন আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে বিদেশের কোনও সরকারের কোনও না কোনও রকমের সংশ্লিষ্টতা থাকে তখন সেইসব সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন ফেডারেল আদালতে মামলা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করা যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে পাস হওয়া নাইন ইলেভেন আইনটি ‘সর্বনাশা পরিণতি’ ডেকে আনবে বলে হুঁশিয়ার করেছে সৌদি আরব। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি খবরটি নিশ্চিত করেছে। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভেটোকে উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ও কংগ্রেসে বিলটি পাস হওয়ার পর এমন প্রতিক্রিয়া জানালো সৌদি সরকার। কেননা, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চালানো ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সৌদি আরবের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ রেখেই নাইন ইলেভেন বিলটি তৈরি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রায় দুই মাস আগে ৯/‌১১ হামলা নিয়ে ২৮ পাতার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়,২০০১ সালে বিমান ছিনতাই করে চালানো ৯/‌১১ হামলায় ১৯ জন হামলাকারী সৌদি আরবের নাগরিক। ৯/১১ হামলার ঘটনায় সৌদি সংশ্লিষ্টতার আলামত পাওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সংঘটিত জঙ্গি তৎপরতায় ভিন্ন কোনও দেশের নাগরিকের সংশ্লিষ্টতা আইনগতভাবে মোকোবেলার কথা ভাবতে শুরু করে মার্কিন প্রশাসন। এবারের ৯/১১ বার্ষিকীর দিনেই জাস্টিস এগেইনস্ট স্পন্সরস অব টেররিজম অ্যাক্ট নামে এ সংক্রান্ত একটি বিল মার্কিন সিনেটে মৌখিক অনুমোদন পায়। তবে তখনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়ে দিয়েছিলেন,এই বিলে তিনি ভেটো দেবেন। কথামতো তিনি ওই বিলে ভেটো দিলেও বুধবার মার্কিন পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সেই ভেটোর বিপরীতে রায় আসে। বুধবার সিনেটে ৯৭-১ ভোটে ও কংগ্রেসে ৩৩৮-৭৪ ভোটে বিলটি পাস হয়। আর তাতে করে বিলটি আইনে পরিণত হতে আর কোনও বাধা থাকলো না। তবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব ৯/১১ হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করার পাশাপাশি বিলটির প্রবল বিরোধিতা করে আসছে। বিলটি পাস হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরব ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রকে উদ্ধৃত করে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, নাইন ইলেভেন বিলের সর্বনাশা ও বিপজ্জনক পরিণতি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন কংগ্রেসকে হুঁশিয়ার করেছে সৌদি আরব। সৌদি প্রেস এজেন্সির খবরে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে করে বলা হয়, ‘আইনটি বিশাল উদ্বেগের বিষয়’। ওই মুখপাত্র বলেন, ‘এ আইন রাষ্ট্রগুলোর অনাক্রম্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের জন্য নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে।’ ওবামার ভেটো উপেক্ষা করে সিনেট ও কংগ্রেসে বিলটি পাস হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ঘটনাটিকে বিব্রতকর বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ভেটো দেওয়ার পর এক বিবৃতিতে ওবামা বলেছিলেন, ‘এই বিলটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। এ বিল পাস হলে যুক্তরাষ্ট্র বা সশস্ত্র গ্রুপের কর্মকাণ্ড, প্রশিক্ষণ ও সমর্থণের জন্য আমেরিকান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হতে পারে’। বিবৃতিতে ওবামা বলেন, যদি এই মামলাকারীদের কেউ অন্যদেশের নিজস্ব আইনে দেশটির আদালতে মামলায় জয়ী হন তাহলে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সম্পত্তি আটকে দিতে পারে। যা যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক খাতের জন্য ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া ডেকে আনতে পারে। নিউ ইয়র্কের ডেমোক্রেটিক দলের সিনেটর চাক শুমার বলেন, হোয়াইট হাউস ও নির্বাহীরা কূটনৈতিক বিবেচনায় আগ্রহী। কিন্তু আমরা পরিবার (৯/১১ হামলার শিকার) ও ন্যায় বিচারে আগ্রহী। সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি
×