ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেখ জামাল-ঢাকা আবাহনী দ্বৈরথ অমীমাংসিত

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শেখ জামাল-ঢাকা আবাহনী দ্বৈরথ অমীমাংসিত

জাহিদুল আলম জয়, সিলেট থেকে ॥ একটা বড় ম্যাচে যা যা থাকা দরকার তার সবই ছিল শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড ও ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের মধ্যকার ম্যাচে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের (বিপিএল) আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের উপভোগ্য ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়। ম্যাচের প্রথমার্ধে আবাহনী এগিয়ে ছিল ২-১ গোলে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জামালের হয়ে জোড়া গোল করেন হাইতির ফরোয়ার্ড ওয়েডসন আনসেলমি। অপর গোলটি আরেক বিদেশী জাম্বিয়ার মিডফিল্ডার দারবোয়ে ল্যান্ডিংয়ের। আবাহনীর হয়ে একটি করে গোল করেন মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ, ইংলিশ ফরোয়ার্ড লি টাক ও নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে চিজোবা। এই ড্রতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রাখল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জামাল। ৯ ম্যাচ শেষে তাদের ভা-ারে জমা সর্বোচ্চ ১৯ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে ঢাকা আবাহনী। পুরো ম্যাচটি ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। আবাহনীর পেনাল্টি মিস, লালকার্ড দেখা, দু’দলের খেলোয়াড়ের ঝগড়া, রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, গোলোৎসব সবই ছিল। তবে ম্যাচে দুই পয়েন্ট হাতছাড়া করে হতাশ আবাহনী শিবির। দলটির অস্টিয়ান কোচ জর্জ কোটান ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আপনারা ভাল থাকলেও আমি ভাল নেই। আমি কিছুটা হলেও হতাশ। অনেক সুযোগ ছিল আমাদের তিন পয়েন্ট পাওয়ার। প্রথমে এগিয়ে গেলেও এক পর্যায়ে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে হারের শঙ্কা জেঁকে বসেছিল শেখ জামালের। সেই অবস্থা থেকে ম্যাচ ড্র করে স্বাভাবিকভাবেই খুশি ধানম-ির ক্লাবটি। সংবাদ সম্মেলনে জামালের সুইডিশ কোচ স্টেফান হ্যানসনও স্বীকার করলেন। আমি খুশি দলের পারফর্মেন্সে। এত বড় ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ড্র করাটাও কৃতিত্বের। কিক অফ থেকেই ম্যাচ জমে উঠে। দু’দলই মিস করতে থাকে একের পর এক সুযোগ। অবশেষে ম্যাচের ৪১ মিনিটে ওয়েডসন আনসেলমির দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় শেখ জামাল। ডানপ্রান্ত দিয়ে জামালের ল্যান্ডিংয়ের ক্রস আবাহনী ডিফেন্ডার তপু বর্মণ হেড করে ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। চলতি বলে ওয়েডসন দৃষ্টিনন্দন গোল করেন (১-০)। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটেই সমতা ফেরায় আবাহনী। গোল করেন মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ। ইমনের কর্ণার থেকে তপুর বর্মণের হেড জামাল গোলরক্ষক মাকসুদুর রহমান হিমেল আয়ত্তে নিতে ব্যর্থ হলে বল পান ফাহাদ। চলতি বলে দরুণ গোল করেন তিনি (১-১)। পরের মিনিটে ফের এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ আসে আবাহনীর। হেমন্তর শট শেখ জামালের ডিফেন্ডার লিংকনের হাতে লাগে। পেনাল্টি পায় আবাহনী। কিন্তু দলটির ইংলিশ ফরোয়ার্ড লি টাকের নেয়া স্পট কিক বামদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দলকে বাঁচান জামাল গোলরক্ষক মাকসুদুর। পেনাল্টি মিসের আক্ষেপ ঘোচাতে সময় নেননি লি। পরের মিনিটেই (অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিট) ইংলিশ তারকা একক প্রচেষ্টায় গোল করে আবাহনীকে এগিয়ে নেন। ডি বক্সের মাথা থেকে কোণকুণি শটে বল জালে জড়ান লি (২-১)। বিরতির পর ৪৯ মিনিটে আবাহনীর প্রথম গোলদাতা ফাহাদ লালকার্ড দেখেন রেফারির সঙ্গে তর্ক করে। জর্জ কোটানের দলকে তাই বাকি ৪০ মিনিট দশজন নিয়ে খেলতে হয়। একজন কম হয়ে যেন জেদ বেড়ে যায় আবাহনীর। পরের মিনিটেই ডানপ্রান্ত থেকে জুয়েল রানার ক্রসে অসাধারণ প্লেসিং শটে গোল করেন সানডে (৩-১)। ৫৬ মিনিটে ডারবোয়ে ল্যান্ডিংয়ের গোলে ব্যবধান ৩-২ করে জামাল। এমেকা ডার্লিংটনের হেডে বল পেয়ে দারুণ শটে গোল করেন তিনি। ৫৮ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ পায় ধানম-ির ক্লাবটি। এবার ওয়েডসনের হেড সাইডপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। ৭৬ মিনিটে সমতা ফেরায় শেখ জামাল ওয়েডসনের অসাধরণ গোলে। আবাহনীর ডিফেন্ডার তপু বর্মণকে কাটিয়ে ও সামাদ ইউসুফকে বোকা বানিয়ে দৃষ্টিনন্দন প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন হাইতির ফরোয়ার্ড (৩-৩)। ম্যাচে এটি তার দ্বিতীয় ও লীগে সর্বোচ্চ ৯ নম্বর গোল। শেষ পর্যন্ত এই ফলাফলেই শেষ হয় ম্যাচ।
×