ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ফাইনালে আজ বাংলাদেশ-ভারত লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ফাইনালে আজ বাংলাদেশ-ভারত লড়াই

রুমেল খান ॥ যেমনটা ভাবা হয়েছিল, ঠিক তেমনটাই হয়েছে। প্রত্যাশা অনুযায়ীই জয় কুড়িয়ে নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। বুধবার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে তারা প্রথম সেমিফাইনালে ৬-১ গোলে হারায় চাইনিজ তাইপেকে। খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড নাঈম উদ্দিন। এই জয়ে ‘বেক্সিমকো অনুর্ধ-১৮ এশিয়া কাপ হকি’ আসরের ফাইনালে নাম লেখালো বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিতে ভারত ৩-১ গোলে হারায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে। এছাড়া সকালের ম্যাচে ৪-২ গোলে হংকংকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে ষষ্ঠ স্থান লাভ করে ওমান। প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। মাঠেও সেটার প্রতিফলন ঘটায় তারা। তবে প্রথমার্থে মনমতো খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। কারণ ছিল দুটি। প্রচ- রোদে খেলা (বার দুয়েক খেলা থামিয়ে উভয়দল নিয়েছে ‘কুলিং ব্রেক’) এবং চাইনিজ তাইপের অতিমাত্রায় রক্ষণাত্মক খেলার ধরন। এজন্য বিপক্ষের গোলপোস্টে খুব বেশি জায়গা নিয়ে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। জিতলেও পেনাল্টি কর্নার (পিসি) থেকে গোল করার ক্ষেত্রে অনেকটা হতাশই করেছে বাংলাদেশ দল। কেননা পুরো ম্যাচে বাংলাদেশ ১১টি পিসি পেয়ে গোল করে মাত্র ৩টি। পিসি স্পেশালিস্ট আশরাফুল একাই নেন ৭টি পিসি, অথচ গোল করেন মাত্র ২টি পিসি থেকে! বাংলাদেশের পিসির এই উপর্যুপরি ব্যর্থতা যদি আজকের ফাইনাল ম্যাচেও অব্যাহত থাকে, তাহলে তো সেটা চিন্তারই বিষয়! এই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বাংলাদেশ এই মাঠেই চাইনিজ তাইপের সঙ্গে একটি ৫০ মিনিটের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। তাতে বাংলাদেশ জিতেছিল ৯-১ গোলে। ভারতের সঙ্গে তারা খেলেছিল ৪-৪-২ ফর্মেশনে। চাইনিজ তাইপের সঙ্গে আরও আক্রমণাত্মক স্টাইলে, হবে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে। ম্যাচের তিন মিনিটে প্রথম পিসি আদায় করে নেয় লাল-সবুজরা। রাব্বির পুশ স্টপ করেন নাইম আর আশরাফুলের চমৎকার স্টিকওয়ার্কে বল আশ্রয় নেয় জালে (১-০)। ৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে শ্যূটিং সার্কেলের মধ্যে ফাউল করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়াসিন আরাফাত। পেনাল্টি স্ট্রোক পায় চাইনিজ তাইপে। কিন্তু তিং উই চুনের দুর্বল স্ট্রোক খুব সহজেই রুখে দেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক ইয়াসিন আরাফাত। দ্বিতীয় গোলের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ২৮ মিনিট পর্যন্ত। দলীয় অধিনায়কের রোমান সরকারের পুশ থেকে জোরালো হিটে লক্ষ্যভেদ করেন রাজু আহমেদ (২-০)। বিরতির পর গোল করে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় তাইপে। ৪১ মিনিটে জু হু হুয়াঙ্গ দারুণ এক ফিল্ড গোল করে ব্যবধান কমান (১-২)। এই গোল খেয়েই যেন ঝলসে ওঠে বাংলাদেশ। মেতে ওঠে গোলবন্যায়। ৪৯ মিনিটে পেনাল্টি স্ট্রোকে আবারও দলকে এগিয়ে নেন আশরাফুল (৩-১)। ৫৩ মিনিটে পিসি থেকে আশরাফুল তার তৃতীয় গোলটি করলে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়ে তাইপে (৪-১)। চলতি আসরে এটা তার ব্যক্তিগত দশম গোল। ৬০ মিনিটে আরও একটি পিসি থেকে গোল করে বাংলাদেশ। রাব্বির পুশ স্টপ করেন নাইম আর সজীব হোসেন হিটে বল পাঠান জালে (৫-১)। ৬৫ মিনিটে তাইপের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন বাংলাদেশের আরেক ফরোয়ার্ড ফজলে হোসেন রাব্বি (৬-১)। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে গোল করেন ভারতের শিভম আনন্দ, দিলপ্রিত সিং এবং নীলম সন্দ¦ীপ। পাকিস্তানের একমাত্র গোলদাতা আমজাদ আলী। উল্লেখ্য, এই আসরে গ্রুপপর্বে এই ভারকেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৫-৪ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করেছিল বাংলাদেশ। এখন দেখার বিষয়, তাদের দ্বিতীয়বারের মতো হারিয়ে এশীয় স্তরে যে কোন লেবেলের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দারুণ কীর্তি গড়তে পারবে বাংলাদেশ। পারবে কি তারা?
×