স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আজ বাংলাদেশে আসছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। রাতে ঢাকায় পা রাখার কথা রয়েছে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলের ক্রিকেটারদের। তবে বাংলাদেশে আসছেন না পেসার জেমস এ্যান্ডারসন। তার না আসা কোন নিরাপত্তাজনিত কারণে নয়। ইনজুরি সংক্রান্ত। একই কারণে সিমার মার্ক উডও আসছেন না। এ্যান্ডারসন ও উডের পরিবর্তে বাংলাদেশে আসবেন স্টিভেন ফিন ও জ্যাক বল।
ঢাকায় পা রেখে দুইদিন অনুশীলন করবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। ৩ অক্টোবর ফতুল্লায় একদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নামবে। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ অক্টোবর প্রথম, ৯ অক্টোবর দ্বিতীয় ও ১২ অক্টোবর তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নামবে ইংল্যান্ড। প্রথম দুই ওয়নাডে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ও তৃতীয় ওয়ানডেটি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। সবকটি ম্যাচ দিবারাত্রিতে হবে। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ১৪-১৫ ও ১৬-১৭ অক্টোবর দুইদিনের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। ২০ অক্টোবর চট্টগ্রামে প্রথম ও ২৮ অক্টোবর মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামবে ইংল্যান্ড।
শুরুতে ওয়ানডে সিরিজ। তাই ওয়ানডে দলের ক্রিকেটাররাই আগে আসবেন। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক ইয়ন মরগান ও ওপেনিং ব্যাটসম্যান এ্যালেক্স হেলস আগেই সিরিজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। এবার সেই দলে যুক্ত হলেন এ্যান্ডারসন ও উড। তবে আজ যে জস বাটলারের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড ওয়ানডে দল আসছে, সেই দলে আগেই ছিলেন না এ্যান্ডারসন। টেস্ট দলে ছিলেন। মার্ক উড অবশ্য ওয়ানডে ও টেস্ট দুই দলেই ছিলেন।
ওয়ানডে দলের উড ছাড়া বাকি সবাই আসছেন। জস বাটলার (অধিনায়ক), মঈন আলী, জনি বেয়ারস্টো, জ্যাক বল, স্যাম বিলিংস, লিয়াম ডসন, বেন ডাকেট, লিয়াম পাঙ্কেট, আদিল রশিদ, জেসন রয়, বেন স্টোকস, জেমস ভিন্স, ডেভিড উইলি, ক্রিস ওকস ও ফিন আসছেন। এ্যান্ডারসন ও উড ইনজুরি থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেননি। তাদের স্ক্যান রিপোর্ট তাই বলছে। ডান হাতের ফাঁটল থেকে সেরে উঠতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে এ্যান্ডারসনের। উডের অবস্থাও একই। আগামী ২০ অক্টোবর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটি। এরপরই ভারতের মাটিতে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা ইংল্যান্ডের। কিছুদিন আগে এই এ্যান্ডারসনই বলেছিলেন যে কোন ক্রিকেটারের জন্যই মাত্র দু’মাসের মধ্যে সাতটি টেস্ট খেলা অনেক ঝক্কির ব্যাপার। আর ৩৪ বছর বয়সী এ্যান্ডারসন মনে করেন এই বয়সে টানা এতগুলো টেস্ট খেলতে তার আরও বেশি পরিচর্যা দরকার। গত জুলাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে চোট পাওয়ার পর এখন এই পরিচর্যা তার জন্য খুবই জরুরী। বলেছিলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটা যে কোন খেলোয়াড়ের জন্যই কষ্টকর। আপনি ফিট থাকলে অবশ্যই আপনি খেলতে চাইবেন। যে ফরমেটই হোক না কেন খেলতে আপনি মুখিয়ে থাকবেন। কিন্তু একটা সময় আসে যখন বাড়তি পরিচর্যার দরকার হয়। ৩৪ বছর বয়সে আমার নিজের আরও যতœশীল হওয়া উচিত নিজের প্রতি। সম্ভব হলে ভারতের মাটিতে পাঁচটি টেস্টের পাঁচটিই আমি খেলতে চাই। কিন্তু সেটা খেলে ফেলা যে কোন বোলারের জন্যই খুব শক্ত।’
ভারত সফরের আগে তার ফিটনেস টেস্ট নেয়া হবে। তারপর তাকে ভারত সফরে রাখা না রাখা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আর বাংলাদেশ সিরিজের জন্য এক টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নটিংহ্যামশায়ারের ২৫ বছর বয়সী পেসার জেক বলই এখন এ্যান্ডারসনের বিকল্প হতে যাচ্ছেন। আর উডের পরিবর্তে থাকবেন ফিন।
এক সিরিজ এখনও শেষ হয়নি বাংলাদেশের। আরেক সিরিজের ঢোল বাজা শুরু হয়ে গেছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে শনিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এর একদিন আগেই বাংলাদেশে পা রাখছে ইংল্যান্ড দল।
এত আগে বাংলাদেশে আসার কারণ একটিই, আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া। ঠা-া থেকে গরম আবহাওয়ায় আসছে ইংল্যান্ড। এ বিষয়টি উপমহাদেশে ক্রিকেট খেলতে এলেই ভোগায় ইংলিশদের। আর তাই একটু আগে এসে আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেয় তারা। সেই কাজটি এবারও করছে।
আসার আগেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের কি অবস্থা হচ্ছে, তা জেনে গেছেন ক্রিকেটাররা। তাতেতো ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের খুশিই হওয়ার কথা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিপাকে পড়া মানেই হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়া। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা যাওয়া। যেটি ইংল্যান্ডের জন্য সুবিধাই হওয়ার কথা।
এরপরও ইংল্যান্ড দলের সাবেক অধিনায়ক নাসির হুসেইন মনে করেন, বাংলাদেশের বিপক্ষে ইংল্যান্ডকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হবে। সর্বশেষ দুটি ম্যাচেই যে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে ইংল্যান্ড। সত্যিই কি সেইরকম হবে? তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত স্বস্তিই মিলছে। নিরাপত্তা নিয়ে বহু কথা হওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত আজ আসছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল।