ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে কৃষিমন্ত্রী

পাঁচ বছরে সার বিদ্যুতসহ কৃষি খাতে ৪১ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

পাঁচ বছরে সার বিদ্যুতসহ কৃষি খাতে ৪১ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি

সংসদ রিপোর্টার ॥ কৃষি উন্নয়নে সরকার কর্তৃক গত ৫ বছরে সার, বিদ্যুত প্রভৃতি খাতে মোট ৪১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১২-১৩ অর্থবছরে সর্বাধিক ১১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে। উক্ত সময়ে কৃষি কাজে ডিজেল চালিত সেচযন্ত্রে ব্যবহৃত ডিজেলে কোন ভর্তুকি প্রদান করা হয়নি। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারী দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। কৃষিমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে সংসদে উত্তর দেন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুর ইসলাম। মন্ত্রী জানান, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬ হাজার ৪৯৯ কোটি, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১১ হাজার ৯৯৯ কোটি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৮ হাজার ৯৭৩ কোটি, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ হাজার ১০১ কোটি এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৬ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা কৃষি খাতে ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, পেয়ারা উৎপাদনের মতো কৃষকদের মৌসুমী ফল উৎপাদনে উৎসাহী করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক প্রতিবছর ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ পালন করা হয়। জাতীয় পর্যায়ে এবং জেলা ও উপজেলায় ফল মেলা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব মেলায় উন্নতমানের ফল প্রদর্শন ও প্রযুক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে কৃষকদের উন্নত জাতের ও উন্নত মানের ফল চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। মন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি পেয়ারা-২ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। পেয়ারার মতো বর্তমানে সারাদেশে বারি মাল্টা-১-এর চাষ দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ পাহাড়াঞ্চল এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। কৃষকদের ফল চাষে উৎসাহিত করছে মাঠে প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস ইত্যাদি কর্মসূচী বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী জানান, কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে বর্তমান বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। সারের ক্রয় মূল্য চার দফায় কমানোর ফলে সুষম সার ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, বোরো মৌসুমে সেচ কাজে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহে অগ্রাধিকার প্রদান এবং উচ্চ ফলনশীল ও মানসম্পন্ন সরবরাহ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া কৃষি যান্ত্রিকীকরণে শতকরা ৩০ ভাগ ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষক পর্যায়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য কৃষক পরিবারকে বিতরণকৃত কৃষি উপকরণ কার্ডের সংখ্যা ২ কোটি ৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭। এর মধ্যে কৃষকদের মাঝে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৪ হাজার ২০৩ এবং কৃষাণীদের মাঝে ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৭৪ কৃষি উপকরণ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। সরকারী দলের নুরুল ইসলাম সুজনের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, ভূমির উর্বরতা শক্তি তথা মাটির সুস্বাস্থ্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে শস্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে ফসল চাষ করা হচ্ছে। বিন্যাসভিত্তিক ফসল চাষ করা হচ্ছে এবং জৈব সার, ভারি কম্পোস্ট, খামারজাত সার, সবুজ সার উৎপাদন ও ব্যবহার বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে নিয়মিত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ কার্যক্রমের আওতায় হাতে-কলমে জৈব সার, ভার্মি কম্পোস্ট, খামারজাত সার, সবুজ সার প্রস্তুত প্রণালী প্রদর্শনসহ কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
×