ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত আজ হকির ফাইনাল

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বাংলাদেশ-ভারত আজ হকির ফাইনাল

রুমেল খান ॥ লক্ষ্য ছিল ফাইনাল খেলা। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এবার নতুন লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আর এই লক্ষ্য বাস্তবে রূপ দেয়াটা মোটেও কঠিন কিছু নয়, বরং খুবই সম্ভব। কেননা প্রতিপক্ষ চেনা এবং তাদের হারানোর দুরূহ কাজটিও একবার সারা। ‘বেক্সিমকো অনুর্ধ-১৮ এশিয়া কাপ হকি’ আসরের ফাইনালে উঠেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দলের জন্য ছিল ‘বৃহস্পতি তুঙ্গে!’ মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রথম সেমিফাইনালে ৬-১ গোলে হারায় চাইনিজ তাইপেকে। খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড নাঈম উদ্দিন। বাংলাদেশের আশরাফুল ইসলাম একাই করেন তিনটি গোল। এছাড়া একটি করে গোল করেন রাজু আহমেদ, সজীব হোসেন এবং ফজলে হোসেন রাব্বি। এছাড়া বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিতে ভারত ৩-১ গোলে হারায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে। এছাড়া সকালের ম্যাচে ৪-২ গোলে হংকংকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে ষষ্ঠ স্থান লাভ করে ওমান। গতবছর ফুটবলে ‘এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে’ ভারতকে দু’বার হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশের বালিকা ফুটবল দল। কেননা, যে কোন পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় সেবারই ভারতকে প্রথম হারায় বাংলাদেশ। ওই আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। ঠিক তাদেরই মতো কীর্তি গড়ার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৮ জাতীয় হকি দলকেও। কেননা, যে কোন পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় এবারই প্রথম ভারত দলকে হারিয়েছে বাংলাদেশ (গ্রুপ পর্বে, ৫-৪ গোলে)। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক রোমান সরকার বলেন, ‘ফাইনালে গ্রুপ পর্বের পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে ভারতকে আবারও হারাতে চাই। আমাদের খেলোয়াড়রা এখন দারুণ উজ্জীবিত অবস্থায় রয়েছে। আশাকরি আমরাই সফল হব। ইনশাল্লাহ ভারতকে হারিয়েই শিরোপা জিতবো।’ দলের প্রধান কোচ কাওসার আলী বলেন, ‘এই দলটি অনেকদিন ধরে একসঙ্গে খেলছে। ওদের যেভাবে অনুশীলন করানো হয়েছে, যা যা শেখানো হয়েছে সেটা তারা মাঠে নেমে দিয়েছে। আসলে ফাইনালে ওঠাটা কাজের স্বীকৃতিই বলতে পারেন।’ এই জয়ে প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়েই খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। মাঠেও সেটার প্রতিফলন ঘটায় তারা। তবে প্রথমার্থে মনমতো খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। কারণ ছিল দুটি। প্রচ- রোদে খেলা (বার দুয়েক খেলা থামিয়ে উভয়দল নিয়েছে ‘কুলিং ব্রেক’) এবং চাইনিজ তাইপের অতিমাত্রায় রক্ষণাত্মক খেলার ধরন। এজন্য বিপক্ষের গোলপোস্টে খুব বেশি জায়গা নিয়ে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। জিতলেও পেনাল্টি কর্নার (পিসি) থেকে গোল করার ক্ষেত্রে অনেকটা হতাশই করে বাংলাদেশ দল। কেননা পুরো ম্যাচে বাংলাদেশ ১১টি পিসি পেয়ে গোল করে মাত্র ৩টি। পিসি স্পেশালিস্ট আশরাফুল একাই নেন ৭টি পিসি, অথচ গোল করেন মাত্র ২টি পিসি থেকে! বাংলাদেশের পিসির এই উপর্যুপরি ব্যর্থতা যদি আজকের ফাইনাল ম্যাচেও অব্যাহত থাকে, তাহলে তো সেটা চিন্তারই বিষয়! এখন দেখার বিষয়, ভারতকে দ্বিতীয়বারের মতো হারিয়ে এশীয় স্তরে যে কোন লেবেলের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস রচনা করতে পারে কি না বাংলাদেশ।
×