ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

‘৭ সৃজনশীল প্রশ্ন মানি না’

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬

‘৭ সৃজনশীল প্রশ্ন মানি না’

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার সৃজনশীল পদ্ধতির সাতটি প্রশ্নের উত্তর প্রদান প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে প্রায় দশটি সরকারী-বেসরকারী বালক ও বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি জোর করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আরও একটি রচনামূলক অতিরিক্ত প্রশ্ন চাপিয়ে দিচ্ছে। অপরদিকে, নৈর্র্ব্যক্তিক প্রশ্ন ১০টি কমিয়ে ৩০টিতে অর্থাৎ ৩০ নম্বরে আনার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ তাদের। রচনামূলক প্রশ্ন ৬০ নম্বর থেকে বৃদ্ধি করে ৭০ নম্বরে পরিণত করার অপচেষ্টা বন্ধের তাগিদে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। অভিযোগ উঠেছে, মানববন্ধন চলাকালে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাস্তায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রেখে শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিলে খুলশী থানা পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। একপর্যায়ে লাঠি চার্জের চেষ্টাও করে পুলিশ। আতঙ্কিত হয়ে শিক্ষার্থীরা ছোটাছুটি করায় আহতের ঘটনাও ঘটেছে শতাধিক। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কোন ধরনের বাধা প্রয়োগ না করলেও পুলিশের এ ধরনের অপচেষ্টাকে অভিভাবকরা ক্ষমতার অপব্যবহার হিসাবে উল্লেখ করেছেন। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছে, সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপর জোর করে চাপানো একটি পদ্ধতি। যে পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজী, সমাজ, ধর্ম, ইতিহাস বিষয়ের উপর লিখতে সম্ভব। কিন্তু অঙ্ক, উচ্চতর গণিত ও হিসাব বিজ্ঞানের মতো বিষয় সৃজনশীলে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি কমিয়ে দিচ্ছে। কারণ, সৃজনশীলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পূর্ণাঙ্গতা প্রকাশ পাচ্ছে না। অথচ, বাপ-চাচাদের আমলে যে শিক্ষা পদ্ধতি ছিল তা দেশ পরিচালনায় যেমন অগ্রগামী তেমনি অতীত ইতিহাস ঘাটলেও শিক্ষার উপর জ্ঞান বৃদ্ধির যে পরিসীমা তা বিস্তৃত ছিল। অথচ, বর্তমান সৃজনশীল শিক্ষা ব্যবস্থা অনেকটা জ্ঞানার্জনের পূর্ণাঙ্গতা দিচ্ছে না। উদাহরণ স্বরূপ শিক্ষার্থীরা বলেছে, উচ্চতর গণিতে ও সাধারণ গণিতে সৃজনশীলের প্রভাব দিয়ে অনেকটা মাথা নষ্টের ব্যবস্থা করেছে। অপরদিকে, হিসাব বিজ্ঞানে বিভিন্ন অধ্যায়ের পূর্ণাঙ্গ অঙ্ক করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, যে কোন প্রশ্নেই দেখা যাচ্ছে, পূর্ণাঙ্গতা বাদ দিয়ে অসম্পূর্ণ উত্তর দিয়ে শেষ করতে হচ্ছে। এতে আগামীতে শিক্ষার্থীরা উচ্চতর শ্রেণীতে অধ্যয়ন করতে গিয়ে চরম বেকায়দায় পড়ছে বলে অভিযোগ করেছে সিনিয়ররা। নগরীর প্রায় ১০টি স্কুলের সামনে পৃথকভাবে ছোটখাটো আকারে সৃজনশীল পদ্ধতিতে ৭টি প্রশ্নের বিরোধিতা করে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। আবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দামপাড়া থেকে নাসিরাবাদ বয়েজ স্কুল পর্যন্ত কয়েকটি নামকরা সরকারী-বেসরকারী স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশ নেয়। ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানান দিতে চেয়েছিল অনৈতিক ও অমানবিকভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে কঠোর করে তোলার অভিযোগ। এ অভিযোগের মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীরা গত কয়েক বছরের ন্যায় পরীক্ষা পদ্ধতি চালু রাখার দাবি জানায়।
×