ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিপিএল টি২০ ॥ শুক্রবার খেলোয়াড় বাছাই

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিপিএল টি২০ ॥ শুক্রবার খেলোয়াড় বাছাই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরেকটি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসর আসন্ন। আগামী ৪ নবেম্বর থেকে মাঠে গড়াবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক বিপিএল টি২০ ক্রিকেটের চতুর্থ আসর। তবে শুক্রবারই প্লেয়ার বাই চয়েস অনুসারে লটারির মাধ্যমে খেলোয়াড় বাছাই করবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। গত আসরে ৬ দল অংশ নিয়েছে, তার মধ্যে থেকে সিলেট সুপারস্টারস বাদ পড়েছে। তবে রাজশাহী ও খুলনা নতুন করে যোগ হওয়াতে সবমিলিয়ে ৭টি দল অংশ নেবে এবার। ইতোমধ্যেই আগের ৫ দল আগে তাদের হয়ে খেলা দু’জন করে দেশী খেলোয়াড়কে রেখে দিয়েছে এবং আরও ৩১ বিদেশী খেলোয়াড় বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে আগেই যোগ হয়েছেন। নতুন করে ১৪৪ দেশী ও ১৬৮ বিদেশী খেলোয়াড়ের থেকে লটারি করে খেলোয়াড় পছন্দ করবে দলগুলো। ঢাকায় খেলা শুরু হলেও মাঝে ৫ দিন চট্টগ্রামে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। বিদেশী খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই (বিসিবি)। এবার আইকন খেলোয়াড় থাকছে না, তবে ৭টি দলের জন্য ৭ ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে এ+ ক্যাটাগরিতে। যাদের মূল্যও নির্ধারণ করে দিয়েছে বিপিএল গবর্নিং কাউন্সিল এবং সেই পারিশ্রমিকের দায়ভার নেবে বিসিবি। বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বিপিএল গবর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক। বিপিএল কর্মকর্তা, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মতামত ও বিসিবি নির্বাচকদের পরামর্শেই এবার আইকন বাদ দিয়ে এ+ ক্যাটাগরি করা হয়েছে যেখানে মাত্র ৭ ক্রিকেটার আছেন। টি২০ ক্রিকেটে অতীত পরিসংখ্যান বিবেচনায় আনা হয়েছে। এ+ ক্যাটাগরি ছাড়া বাকি চারটি গ্রেডের মূল্য অপরিবর্তিত আছে। ‘এ’ ৭০ হাজার, ‘বি’ ৫০ হাজার, ‘সি’ ৪০ হাজার ও ‘ডি’ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার মূল্য রাখা হয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ইতোমধ্যেই নিজেদের মধ্যে এই ক্রিকেটারদের দলে ভিড়িয়েছেন। সর্বাধিক ৫৫ লাখ টাকায় ঢাকা ডায়নামাইটসে এসেছেন সাকিব আল হাসান। তিনি রংপুর রাইডার্সে ছিলেন। এরপর ৫০ লাখ টাকা করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। মাশরাফি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে, মুশফিক বরিশাল বুলসে, তামিম চিটাগং ভাইকিংসে ও মাহমুদুল্লাহ খুলনা টাইটানসের হয়ে খেলবেন। আর রাজশাহীতে সাব্বির রহমান রুম্মান ও রংপুরে সৌম্য সরকার ৪০ লাখ টাকা মূল্যে। তবে এই মূল্য বিসিবি নির্ধারিত, এরচেয়ে বেশি মূল্যে কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি তাদের নিয়ে থাকলে সেই বাড়তি টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিসিবি কোন দায়িত্ব নেবে না বলে জানিয়েছেন মল্লিক। এখন পর্যন্ত ঢাকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও নাসির হোসেন, চিটাগং তাসকিন আহমেদ ও এনামুল হক বিজয়, রংপুর আরাফাত সানি ও মোহাম্মদ মিঠুন, কুমিল্লা ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস এবং বরিশাল আল-আমিন হোসেন ও তাইজুল ইসলামকে রেখে দিয়েছে। ইতোমধ্যে এবার নতুন দুটি দল দেয়া হয়েছে। একটি খুলনা, অন্যটি রাজশাহী। খুলনা কিনেছে জেমকন গ্রুপ। রাজশাহী কিনেছে ম্যাঙ্গো এন্টারটেইনমেন্ট। এছাড়া রংপুরের মালিকানা বদল হয়েছে। আগে এটা ছিল আই স্পোর্টসের কাছে। এখন নিয়েছে সোহানা স্পোর্টস লিমিটেড কোম্পানি। প্লেয়ার্স ড্রাফটে এ দুটি দলেরই আগে সুযোগ থাকবে খেলোয়াড় নেয়ার। কারণ, গত আসরের দলগুলো দু’জন করে ক্রিকেটার ইতোমধ্যেই পেয়ে গেছে। প্লেয়ার্স ড্রাফটের তালিকায় থাকা ১৪৪ দেশী ও ১৬৮ বিদেশী খেলোয়াড়ের মধ্যে থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো ক্রিকেটার বাছাই করবে। ১৬৮ বিদেশী খেলোয়াড়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪২ জন পাকিস্তান, ৩৬ জন ইংল্যান্ড, ৩৫ জন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ১৫, জিম্বাবুইয়ে ১২, আফগানিস্তান ১০, অস্ট্রেলিয়া ও হল্যান্ড ৪, দক্ষিণ আফ্রিকা ৩, নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড ২ এবং কানাডা, স্কটল্যান্ড ও আরব আমিরাতের ১ জন করে খেলোয়াড় আছেন তালিকায়। আগেভাগেই ৩১ বিদেশীকে নিজেদের দলে টেনে নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। এর মধ্যে টি২০ ক্রিকেটের সবচেয়ে বিধ্বংসী ক্রিকেটার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার ক্রিস গেইলকে এবার পেয়েছে চিটাগং, গত আসরে খেলেছিলেন বরিশালে। পাক অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি থাকছেন রংপুরে এবং ঢাকায় কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনে। চিটাগংয়ে আরও আছেন ডোয়াইন স্মিথ, শোয়েব মালিক, চতুরঙ্গ ডি সিলভা ও মোহাম্মদ নবি, ঢাকায় আরও আছেন আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো, এভিন লুইস, রবি বোপারা; কুমিল্লায় আছেন সোহেল তানভীর, আসহার জাইদি, ইমাদ ওয়াসিম, নুয়ান কুলাসেকারা ও থিসারা পেরেরা; খুলনায় নিকোলাস পুরান, রিকি ওয়েসেলস, মোহাম্মদ আসগর, কেভন কুপার ও বেনি হাওয়েল; রাজশাহীতে ড্যারেন সামি, মোহাম্মদ সামি, শারজিল খান, বাবর আজম; রংপুরে মোহাম্মদ শাহজাদ, দাসুন শানাকা, গিরডন পোপ, রিচার্ড গ্লিসন। সবমিলিয়ে ৪৬ ম্যাচ হবে এবার। নিউজিল্যান্ড সফরের আগে ৯ ডিসেম্বর জাতীয় ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া যাবে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করতে। তখন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে। তবে টানা ৩/৪ দিন খেলার পর একটা দিন বিরতি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মল্লিক। আগের মতোই প্রতিটি দল পরস্পরের বিরুদ্ধে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। জাতীয় দলের বিদেশী কোচ ছাড়া সবাই- নির্বাচক, স্থানীয় কোচ, ট্রেনার সবাই যে কোন দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন। প্রতি ম্যাচে বিদেশী খেলোয়াড় কমপক্ষে তিনজন করে রাখতেই হবে। সর্বোচ্চ তারা খেলাতে পারবে চারজন।
×