ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আমি চিত্রাঙ্গদাকে ধারণ করি ॥ ফারজানা মিতা

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আমি চিত্রাঙ্গদাকে ধারণ করি ॥ ফারজানা মিতা

সাজু আহমেদ ॥ ফারজানা মিতা। এ সময়ের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল মঞ্চকর্মী। একাধারে তিনি নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিচালক এবং অভিনেত্রী। পাশাপাশি টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে কোরিওগ্রাফার হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন। নির্দেশক হিসেবেও অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। স্বপ্নদলের এই নিয়মিত সদস্য টিভি নাটক ও একটি মঞ্চনাটকের নির্দেশনা দিয়ে নন্দিত হয়েছেন। ফরিদপুরের মেয়ে ফারজানা মিতা ছোটবেলা থেকেই নাচ শিখেছেন নৃত্যগুরু বেলায়েত হোসেন ও হাসিবুল ইসলামের কাছে। এরপর ২০০৩ সাল থেকে ঢাকায় শিবলী এবং নিপার তত্ত্বাবধানে নৃত্যাঞ্চলের নৃত্যে প্রশিক্ষণ নেন। ২০০৫ সালে ঢাকায় আসেন। এখানে নৃত্যচর্চার পাশাপাশি মঞ্চনাটকের কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করেন। এক সময় স্বপ্নদলে কোরিওগ্রাফির পাশাপাশি অভিনয় শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘ত্রিংশ শতাব্দী’, ‘ডাকঘর’, ‘স্পার্টাকাস’, ‘হরগজ’, ‘জাদুর প্রদীপ’, সেলমি আল দীনের ‘ফেস্টুনে লেখা স্মৃতি’ ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’, মাইমোড্রামা ‘গ্রহণকালের পূর্ণশশী’ নাটকে কাজ করেছেন। এর মধ্যে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকের ৫০তম প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে আজ। আজকের প্রদর্শনীটি প্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হককে উৎসর্গ করা হয়েছে। এ নাটকের কোরিওগ্রাফির পাশাপাশি সব প্রদর্শনীতে অভিনয় করেছেন। এ জন্য দলের পক্ষ থেকে আজ তাকে সম্মাননা দেয়া হবে। ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকটি ফারজানা মিতার ক্যারিয়ারে অন্যতম বিষয়। কারণ নাটকের মাধ্যমে সমাজে নারীদের অধিকার ও মর্যাদার কথা বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। এমন একটি নাটকের কোরিওগ্রাফির পাশাপাশি প্রধান চরিত্রে কাজ করতে পেরে অনেকটাই আপ্লুত ফারজানা মিতা। তিনি বলেন, নাটকের মতো বাস্তবেও নিজের মধ্যে চিত্রাঙ্গদাকে ধারণ করি আমি। নাটকের কোরিওগ্রাফির পাশাপাশি অভিনয়ের সুযোগ দেয়ার জন্য তিনি স্বপ্নদল প্রধান জাহিদ রিপনের কাছে কৃতজ্ঞতা জানান। কারণ জাহিদ রিপনের প্রেরণায় ইতোমধ্যে মঞ্চের প্রতি ভাললাগা থেকে ভালবাসায় পরিণত হয়েছে তার। তাই আজীবন মঞ্চেই কাজ করতে চান। ফারজানা মিতা একজন নৃত্যশিল্পী ও নৃত্য পরিচালক হিসেবেও তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। নৃত্যাঞ্চলে ২০০৩ সাল থেকে শিবলী এবং নীপার তত্ত্বাবধানে নৃত্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ ছাড়াও ভারতে সুকল্যাণ ভট্টাচার্য, স্বপন মজুমদারের কাছেও নৃত্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। বিভিন্ন টিভি নাটকে কাজ করছেন ফারজানা মিতা। এর মধ্যে তাঁর পরিচালনায় ‘রং বদল’ নামে একটি খ-নাটক ২০১৪ সালে এটিএনবাংলায় প্রচার হয়। এছাড়া আব্দুল আউয়াল চৌধুরী প্রযোজিত বিটিভির ‘হাসি আনন্দের গল্প’, ‘অতঃপর চিবুকের কাছে একা’, ‘মুনিয়া এসেছিল’, চ্যানেল আইয়ের তাহের শিপনের পরিচালায় ‘গোলাপি মঞ্জিল’ নাটকের কোরিওগ্রাফির কাজ করেছেন। এটিএন বাংলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিচালনা করে থাকেন। এছাড়া মোক্তাদির ইবনে সালাম পরিচালিত ‘রঙ্গের দুনিয়া’ চলচ্চিত্রের কোরিওগ্রাফির কাজ করেছেন তিনি। ফারজানা মিতা বিটিভির তালিকাভুক্ত নৃত্য পরিচালক এবং শিল্পকলা একাডেমির তালিকাভুক্ত নৃত্যশিল্পী। এছাড়া নৃত্য প্রশিক্ষক হিসেবে রাজধানীর দুটি স্কুলে নৃত্য প্রশিক্ষন দিচ্ছেন। পাশাপাশি একজন আইনজীবী হিসেবেও কাজ করছেন তিনি। টিভি মিডিয়ায় নৃত্য পরিচালনা ও শিল্পী হিসেবে কাজের পাশাপাশি কাজ করতে চান চলচ্চিত্রের কোরিওগ্রাফার হিসেবে। স্বপ্নদলের পাশাপাশি নিজের নৃত্যদল ‘শিল্পচক্র’র ব্যানারে ড. মুকিদ চৌধুরীর রাধা রমনের গল্প নিয়ে নৃত্যনাট্য তৈরির কাজ করছেন। এ দল নিয়ে এগিয়ে যেতে চান সংস্কৃতিক অঙ্গনে। তিনি তার শ্রম এবং মেধার সমন্বয়ের মাধ্যমে এগিয়ে যাবেন তার স্বপ্নের পথে। তাঁর জন্য শুভকামনা।
×