ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বড় অর্জন প্রত্যাশা মাশরাফির

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বড় অর্জন প্রত্যাশা মাশরাফির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরেকটি সিরিজ জয়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। সফরকারী আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আজকের ম্যাচ জিতলেই টানা ষষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জয় করবে টাইগাররা। এছাড়া সেটা হবে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের ১০০তম জয়। এ দুুটিকে অনেক বড় অর্জন বলে মনে করছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সে কারণে দ্বিতীয় ম্যাচটাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন তিনি। প্রথম ম্যাচে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়ে জেতার পর এখন সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দল মানসিকভাবে অনেক ভাল অবস্থানে থাকবে বলেও মনে করেন তিনি। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাশরাফি। দীর্ঘ সাড়ে দশ মাস পর আবারও ওয়ানডে খেলতে নেমে নানাবিধ অস্বস্তির মধ্যে ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সেটার ছাপ পড়েছে আফগানদের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডেতে। ব্যাটিং-বোলিংয়ের ক্ষেত্রে সেটা স্বাভাবিক হলেও মাশরাফি মনে করেন ফিল্ডিং সমস্যাটা অনুচিত। প্রথম ম্যাচে ফিল্ডিংয়ে বেহাল দশা ছিল বাংলাদেশের। তিনটি সহজ ক্যাচও মিস করেছেন ফিল্ডাররা। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘ফিল্ডিং নিয়ে অজুহাত দেয়া ঠিক না। এজন্য খেলার মধ্যে থাকতে হবে এমন কোন বিষয় নেই। ব্যাটিং-বোলিং, জুটি বলেন, সংঘবদ্ধ হওয়া বলেন এসবের ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু ফিল্ডিং এমন একটা বিষয় যেটা ভেতর থেকে চাইলেই আপনি উন্নতি করতে পারেন। আশাকরি সামনের ম্যাচে এটা ঠিক করব। একটা জিনিস বডি ল্যাঙ্গুয়েজ হয়তো আমাদের সঠিক অবস্থানে ছিল না।’ যে কোন সময়ই প্রথম ম্যাচটা জরুরী। সেটা যে কোন দলের বিরুদ্ধে সিরিজেই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘সত্যি কথা খেলার মধ্যে থাকলেও প্রথম ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচে বের হয়ে যেতে পারলে অনেক মুক্ত থাকা যায়। আফগানিস্তানের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে বড় কিছু না হলেও কঠিন অংশটা চলে গেছে। আশাকরি সামনের ম্যাচে এ ম্যাচ থেকে মানসিকভাবে ভাল অবস্থানে থাকব।’ দ্বিতীয় ম্যাচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের জন্য। ২০১৪ সালের নবেম্বরে জিম্বাবুইয়ে, গতবছর এপ্রিলে পাকিস্তান, জুনে ভারত, জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ও নবেম্বরে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে টানা ৫টি দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে দল। এবার ষষ্ঠ সিরিজ নিশ্চিত হবে আজ আফগানদের হারালেও। সেই সঙ্গে আসবে শততম জয়। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের জন্য প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। একটা ব্যাপার দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলে সিরিজটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। এজন্য দ্বিতীয় ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন হবে। আমরা চেষ্টা করব দ্বিতীয় ম্যাচেই যেন সেটা হয়। এজন্য আমাদের ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে।’ আফগানিস্তানকে অনেক ভাল একটি দলই মনে করেন মাশরাফি। তাদের বোলিংটাও ভাল। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের সমস্যা হয়েছে সেটা মানতে নারাজ তিনি। এ বিষয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘অবশ্যই আফগানিস্তানের বোলাররা ভাল বোলিং করেছে। একটা বড় স্কোর হতে হলে দু’জনকে বড় ইনিংস খেলতে হয়। সেখানে আমাদের চারজন শুরু করেও বড় স্কোর করতে পারেনি। সাকিবের ‘বড়’ পঞ্চাশ মারার সুযোগ ছিল। এ জিনিসগুলো আগের ম্যাচে পারিনি। এর থেকেও যখন বড় দলের বিপক্ষে খেলব ২৮০ কিংবা ৩০০ প্রায়ই চেজ হচ্ছে, এ কারণে বড় রান করার। কিন্তু সেট ব্যাটসম্যান যদি বড় রান না করে তাহলে কঠিন হয়ে যাবে।’ আফগানদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে যে চাপটা ছিল সেটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন মাশরাফি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড যখন আমাদের সঙ্গে খেলে তখন ওদের বাড়তি চাপ থাকে। খুবই স্বাভাবিক। শেষ ম্যাচে যেটা ভাল লেগেছে; ম্যাচটা প্রায় ৯০ ভাগ ওদের কাছে ছিল। ওখান থেকে ফিরে এসে ম্যাচ জেতা একটা ‘বৈশিষ্ট্য’। এই বৈশিষ্ট্যটা গড়ে তুলতে পারলে বড় ম্যাচেও আমাদের ধারাবাহিক ভাল হবে।’ একই সঙ্গে নিজের বোলিং এবং দলকে দারুণভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন মাশরাফি। কিন্তু সেটাকে চাপ মনে করেন না। বরং দলের চাপের মুহূর্তেও বল হাতে সুস্থিরভাবে বল করেছেন প্রথম ওয়ানডেতেও। মাশরাফি জানান, তিনি সবসময়ই এক জায়গায় বল ফেলতে মনোযোগী থাকেন এবং নেতৃত্বের পাশাপাশি বোলিং করাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে গত দুই বছরে। আর বর্তমান দলের সমন্বয়ে বোলিং অপশনের ঘাটতি নেই বলেও দাবি করেন তিনি। কারণ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছাড়াও আছেন সাব্বির রহমান। তবে ম্যাচে চাপের পরিস্থিতি বিবেচনা করে জেনুইন বোলার ছাড়া তাদের নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাননি বলে জানিয়েছেন মাশরাফি। এ সিরিজের পরই আসবে শক্তিশালী ইংল্যান্ড। সেসব নিয়ে এখনও কেউ চিন্তা করেননি দাবি করে মাশরাফি বলেন, ‘ইংল্যান্ডকে আনার প্রশ্নই আসে না। আমাদের সিরিজ জয় গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
×