ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজবিরোধীদের ক্রসফায়ারে দেয়ার দাবি সংসদে নাকচ

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সমাজবিরোধীদের ক্রসফায়ারে দেয়ার দাবি সংসদে নাকচ

সংসদ রিপোর্টার ॥ সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ নারী-শিশু ও এ্যাসিড নিক্ষেপকারী সমাজবিরোধীদের ক্রসফায়ারের দাবি জানালে তা নাকচ করে দিয়েছেন অধিবেশনে সভাপতিত্বকারী ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া। তিনি বলেন, আমরা ক্রসফায়ারে বিশ্বাস করি না। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিরোধী দলকে আশ্বস্ত করে বলেন, এসব দুর্বৃত্ত কেউ-ই রেহাই পাবে না। অনেককেই আমরা গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করেছি। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, জঙ্গীদের ধরে নিয়ে আমরা গুলি করে মেরে ফেলছি, কেউ বাধা দিতে আসেনি। বরং সবাই খুশি হচ্ছেন। একইভাবে নারী ও শিশুদের হত্যাকারী বা নির্যাতকদেরও যদি পুলিশ মেরে ফেলত তাহলে দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না, তাদের ক্রসফায়ারে দিতে হবে। কারণ এসব সমাজবিরোধীরা জঙ্গীদের মতোই ভয়ঙ্কর। এদের ক্রসফায়ারে না দিয়ে তাদের আইনের আশ্রয়ে পাঠানো হলে, আর সেটি যদি সুপ্রীমকোর্ট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবার উল্টো নিঃস্ব হয়ে যাবে। ফিরোজ রশীদ আরও বক্তব্যে বলেন, নারী-শিশু নির্যাতন ও স্কুলছাত্রী অপহরণের ঘটনা অকল্পনীয়। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে পত্রিকার পাতায় এসব দেখে আমরা শিউরে উঠি। এক ছাত্রী স্কুলে যাচ্ছিল, পথে তাকে চাকু মেরে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীন দেশে এ ঘটনা কল্পনা করা যায়! কিছুদিন আগে কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী রাইসাকে চাকু মেরে হত্যা করা হলো। মিরপুরে আফসানাকে নির্যাতন করা হয়েছে। কালকিনিতে মিতু ম-লকে কোচিংয়ে যাওয়ার পথে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসব কিসের আলামত? ছাত্রীরা এখন স্কুল-কলেজে যেতে পর্যন্ত ভয় পাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না, এসব সমাজবিরোধীদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে। ফিরোজ রশীদের এ ধরনের প্রস্তাবের বিষয়ে এ সময় সংসদে সভাপতিত্বকারী ডেপুটি স্পীকার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন মাননীয় সদস্য, আমি আপনার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি। আপনি যে ক্রসফায়ারে মারার কথা বললেন, আপনার পেছনে যে লোকটি বসে আছেন তিনি তো মানবাধিকারের প্রশ্ন তুলবেন। আমরা ক্রসফায়ারে বিশ্বাস করি না। ডেপুটি স্পীকার এ সময় বিষয়টি সম্পর্কে পরে একদিন সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পরামর্শ দেন। পরে ফ্লোর নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের কিছু ঘটনা ঘটছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এসব বিষয়ে আমি পরে বিবৃতি দেব। এছাড়া এ্যাসিড নিক্ষেপ বন্ধে আমরা প্রায় সফল পর্যায়ে পৌঁছে গেছি, তারপরও দু-একটি ঘটনা ঘটছে। সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে অপরাধীদের ধরার, অনেককে ধরা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অপরাধীরা কেউ-ই রেহাই পাবে না। এনজিওদের মাধ্যমে সোলার প্যানেল স্থাপন বন্ধের দাবি ॥ আওয়ামী লীগের ড. হাছান মাহমুদ পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে বলেন, সোলার প্যানেল স্থাপনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে এজন্য কিছু এনজিওর নাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এসব এনজিও বাজারের তুলনায় তিনগুণ দাম নিচ্ছে। ফলে সরকারী অর্থে যে কাজ হওয়ার কথা, সেই তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ কাজ হচ্ছে। অবিলম্বে এই মনোপলি বন্ধ করতে হবে। এ সময় উপস্থিত অন্য সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে হাছানের দাবিতে সমর্থন দেন। এছাড়া স্বতন্ত্র সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী সরকারীভাবে হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে নানা অব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেন।
×