ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিদায় সব্যসাচী

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিদায় সব্যসাচী

মোরসালিন মিজান ॥ চক্ষের ভিতর থিকা সোহাগের পাখিরে উড়াও,/বুকের ভিতর থিকা পিরীতের পূর্ণিমার চান,/নিজেই তাজ্জব তুমি- একদিকে যাইবার চাও/অথচ আরেক দিকে খুব জোরে দেয় কেউ টান...। অমোঘ সেই টান, সেই বিদনাবিধূর বিচ্ছেদ মেনে নিলেন কবি। মেনে নিতে হলো। সব্যসাচী লেখকের ‘পায়ের আওয়াজ’ কানে আর আসবে না। ‘জাগো বাহে কোনঠে সবাই...।’ জাগবেন না কালজয়ী সাহিত্য স্রষ্টা। ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’ হয়ে ওড়ে গেলেন, ফিরবেন না কোনদিন। কবিতার সমৃদ্ধ সোনালি খাতা বন্ধ হলো। থামল হৃৎকমল। কবিতা গল্প উপন্যাস নাটক সিনেমা সঙ্গীতমসহ সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণের পর শেষ হলো পরিভ্রমণ। সকলকে একরকম বলে কয়েই চিরপ্রস্থান গ্রহণ করলেন বাংলা সাহিত্যের ক্ষণজন্মা পুরুষ অগ্রগণ্য কবি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। বিপুল সৃষ্টির মাঝে নিলেন শেষ আশ্রয়। এখন থেকে তাঁর একমাত্র ঠিকানাÑ অনুরক্ত পাঠকের ‘পরানের গহীন ভিতর।’ মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ফুসফুসে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে ৮১ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তাঁর (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যাসহ অগণিত ভক্ত-পাঠক-অনুরাগী রেখে গেছেন। সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। কবির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পারিবারিক সূত্র জানায়, অবস্থার অবনতি ঘটলে সোমবার সকালে সৈয়দ হককে হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে রাখা হয় লাইফসাপোর্টে। কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেন কবি। মঙ্গলবার দুপুরে সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করতে একটি শক্তিশালী মেডিক্যাল বোর্ড বসানো হয়। বোর্ডের বরাত দিয়ে সে সময় হাসপাতাল সূত্র জানায়, কবির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি। সর্বশেষ, বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক কবিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় কবির স্ত্রী বিশিষ্ট লেখিকা আনোয়ারা সৈয়দ হকসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে এপ্রিলে ফুসফুসে জটিলতা নিয়ে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার জন্য যান কবি। লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালের ডাক্তাররা প্রথম কবির ফুসফুসে ক্যান্সার শনাক্ত করেন। এক পর্যায়ে বাঁচার আশা ক্ষীণ হয়ে এলে ডাক্তারদের পরামর্শে ১ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন তিনি। এরপর থেকেই ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে কবিকে দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কবির চিকিৎসার ব্যয় বহন করেন তিনি। পরবর্তীতে আরও অনেকেই কবিকে দেখতে হাসপাতালে যান। সবার সঙ্গেই কথা বলেন সৈয়দ হক। তবে, গত শনিবার হাসপাতালের ছয় তলার ৬০৪ নম্বর কেবিনে গিয়ে দেখা যায়, শঙ্কটাপন্ন কবি। এই প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে কথা বলার চেষ্টাও করেন তিনি। কিন্তু মুখে কিছু বলার শক্তি ছিল না। তাঁর চোখের প্রখর দৃষ্টি আর আঙ্গুলের ভাষায় যে বলা, তা অনুবাদের উর্ধে ছিল! পরে অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে তাঁকে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি। কবি পতœীকে প্রধানমন্ত্রীর ফোন ॥ রাতে কবির মরদেহ গুলশানের বাসভবনে পৌঁছার পর কবিপতœী আনোয়ারা সৈয়দ হককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোন করে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় উপস্থিত কবি তারিক সুজাত জানান, প্রধানমন্ত্রী কবির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং কবি পরিবারের সদস্যদের সান্ত¡না দেন। সকাল ১১টায় শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা ॥ এরপর মরদেহ পুনরায় হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জানান, সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সৈয়দ হকের মরদেহ আজ সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হবে। সে লক্ষ্যে জোট সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এর আগে ১০টা ৪৫ মিনিটে শ্রদ্ধা নিবেদনের বাংলা একাডেমিতে রাখা হবে সৈয়দ হকের মরদেহ। একই দিন সকাল ১০টায় তেজগাঁয়ে চ্যানেল অই কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম নামাজে জানাজা। জন্মভিটা কুড়িগ্রামে শেষ শয্যা ॥ জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কবির দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে মরদেহ হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হবে জন্মভিটা কুড়িগ্রামে। সেখানে পূর্বনির্ধারিত স্থানে সমাহিত করা হবে সৈয়দ শামসুল হককে। রাষ্ট্রপতির শোক ॥ সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, সৈয়দ হক বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে নন্দিত বিচরণ বাংলার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাকে অমর করে রাখবে। প্রধানমন্ত্রীর শোক ॥ পৃথক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যু দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর কাছে বাঙালী, বাংলাদেশ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এক অভিন্ন সত্তা। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, একই মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক প্রমুখ সৈয়দ হকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। হাসপাতালের করিডরে বিষণœ বিকেল ॥ সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। হাসপাতালের করিডরে নেমে আসে বিষণœ বিকেল। মৃত্যু সংবাদে সেখানে ছুটে যান শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনরা। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ, সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাতসহ অনেকে ছিলেন কবি পরিবারের পাশে। জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত জনকণ্ঠকে বলেন, হক ভাই (সৈয়দ শামসুল হক) অসুস্থ ছিলেন কিন্তু আমরা আশা ছাড়িনি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলাম, তিনি আমাদের মাঝে ফিরবেন। তা আর হলো না। তাঁর মৃত্যু বাংলা কবিতা ও সাহিত্যের অনেক বড় ক্ষতি। মনোবল ছিল অটুট, শতাধিক নতুন কবিতা ॥ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলেও, সৈয়দ শামসুল হক একদমই ভেঙ্গে পড়েননি। জানা যায়, মানসিকভাবে তিনি ছিলেন খুবই শক্ত। সৃষ্টির জগতে আগের মতোই ডুবে ছিলেন। সব ধরনের লেখালেখি করেছেন। কখনও ল্যাপটপ কম্পিউটার নিয়ে বসেছেন। কখনও মুখে বলছেন। লিখেছেন অন্যরা। পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে শুয়ে বসে তিনি ১৭০টি নতুন কবিতা লিখে গেছেন। গান লিখেছেন ৮টি। শেক্সপিয়রের হ্যামলেট নাটকের অনুবাদও করেন হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায়! জানা যায়, লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও লিখেছেন তিনি। কিছুদিন আগে বাংলা একাডেমিতে জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলামের জন্মদিন উদ্যাপন করা হয়। তখন লন্ডন থেকে চমৎকার একটি লেখা তৈরি করে পাঠান সৈয়দ শামসুল হক। তার আগে গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গীদের চালানো নৃশংসতার বিরুদ্ধে কবিতা লিখে প্রতিবাদ করেন। গত ঈদে বিভিন্ন ঈদ সংখ্যায়ও যথারীতি লিখেছেন। শুধু তাই নয়, দেশের কথা, দেশের মানুষের কথা তার ভাবনাজুড়ে ছিল। হলি আর্টিজানে হামলার পর সাংস্কৃতিক কর্মীরা গান কবিতার দীর্ঘ মিছিল বের করেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে গুলশান পর্যন্ত মিছিলের সঙ্গে না থাকতে পারলেও কবি লন্ডনে বসেই খোঁজ নিয়েছেন। মানসিকভাবে মিছিলের সঙ্গে থাকার কথা আয়োজকদের জানিয়ে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছেন। বর্ণাঢ্য জীবন ॥ সৈয়দ শামসুল হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন। মাতা হালিমা খাতুন। বাবা-মায়ের আট সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। সৈয়দ শামসুল হকের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুড়িগ্রাম মাইনর স্কুলে। সেখানে তিনি ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। এরপর ভর্তি হন কুড়িগ্রাম হাই ইংলিশ স্কুলে। ১৯৫০ সালে গণিতে লেটার মার্কসসহ ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ততদিনে কবিতায় ডুবেছেন শামসুল হক। একেবারে অল্প বয়সেই কবিতার প্রেমে পড়ে যান। মাত্র এগারো-বারো বছর বয়সে লিখে ফেলেন প্রথম কবিতাটি। তখন অসুস্থ। টাইফয়েডে শয্যাশায়ী। এ অবস্থায় বাড়ির রান্নাঘরের পাশে সজনে গাছে লাল টুকটুকে একটি পাখিকে বসে থাকতে দেখেন। তাতেই মাথায় চলে আসে পদ্য। কবি কিশোর লিখে ফেলেন- আমার ঘরে জানালার পাশে গাছ রহিয়াছে/তাহার উপরে দুটি লাল পাখি বসিয়া আছে। এরপর আরও আরও কবিতা। ১৯৪৯-৫০ সালের দিকে, ম্যাট্রিক পরীক্ষার পর অনেক অবসর সময় পেয়ে যান। এ সময় দুই শতাধিক কবিতা রচনা করেন তিনি। আর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৫১ সালের মে মাসে। ফজলে লোহানী সম্পাদিত ‘অগত্যা’ পত্রিকায় ‘উদয়াস্ত’ শিরোনামে একটি গল্প ছাপা হয় তাঁর। ক্রমশ তাঁর সাহিত্য চর্চার গুণ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। হোমিও চিকিৎসক বাবার স্বপ্ন- সন্তান হবে বড় ডাক্তার। ডাক্তারি পড়ানোর সব ব্যবস্থা প্রায় পাকা করে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু রক্তে যার কবিতা, তাকে সাদা এপ্রোনে বন্দী করবে? সাধ্য কার? নিজের মতো বাঁচতে সৈয়দ শামসুল হক ১৯৫১ সালে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। কিছু তো করা চাই। ভারতের বোম্বেতে এক বছরের বেশি সময় সিনেমা প্রডাকশন হাউসে সহকারী হিসেবে কাজ করেন। দেশে ফিরে আসেন ১৯৫২ সালে। নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী, ঢাকার জগন্নাথ কলেজে মানবিক বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৫৪ সালে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিষয় ছিল ইংরেজী সাহিত্য। তবে পড়ালেখা অসমাপ্ত রেখে ১৯৫৬ সালে বেরিয়ে আসেন তিনি। ওই সময় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’। সব্যসাচীর যত সৃষ্টি ॥ সৈয়দ শামসুল হক সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় মনের আনন্দে বিচরণ করেছেন। তাঁর রচনা অনেক। অংসখ্য। সৃষ্টির ভা-ার যেমন বিশাল, তেমনি সমৃদ্ধ। তাঁর কালজয়ী কবিতার সংখ্যা চট করে গুনে বলে দেয়া দুরূহ কাজ। ‘পরানের গহীন ভিতর’, ‘বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালার মতো অনেক কাব্যগ্রন্থ ও কবিতা সৈয়দ হককে অমর করে রাখবে। উপন্যাসের মধ্যে ‘রক্ত গোলপ’, ‘নিষিদ্ধ লোবান’, ‘খেলারাম খেলে যা’সহ বেশ কিছু রচনা সব সময় মুগ্ধ করে রেখেছে পাঠককে। বাংলা কাব্যনাট্যে তার অবদান তো চিরস্মরণীয়। কাব্যনাট্যকে রিষ্টপুষ্ট করে তুলতেই যেন সৈয়দ হক লিখেন তাঁর প্রথম কাব্যনাট্য ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। ১৯৭৫ সালের মে মাসে বিবিসির লন্ডন অফিসে কর্মরত অবস্থায় নাটকটি লিখেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে লেখা নাটকগুলোর মধ্যে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে স্বার্থক। সবথেকে আলোচিত। একইরকম বিস্ময় নিয়ে মঞ্চে আসে তাঁর ‘নূরলদীনের সারাজীবন’। এ কাব্যনাট্যটিও বহুকাল ধরে আলোকিত করে রেখেছে ঢাকার মঞ্চ। রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় লেখা নাটকের সংলাপ এখন বঞ্চিত মানুষের প্রতিবাদের ভাষা। লেখালেখির কৌশল সহজ ভাষায় তুলে ধরে তিনি লেখা ‘মার্জিনে মন্তব্য’ সৈয়দ হকের খুব গুরুত্বপূর্ণ রচনা। প্রবন্ধও লিখেছেন অনেক। ‘হৃৎ কমলের টানে’ তাঁর বিখ্যাত প্রবন্ধ সংকলন। পুরস্কার ॥ অহর্নিশ চর্চা ও উৎকৃষ্ট সৃষ্টির ফল হিসেবে মাত্র ২৯ বছর বয়সে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। এত কম বয়সে এর আগে কেউ বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাননি। পরবর্তীতে একুশে পদকে সম্মানিত করা হয় সৈয়দ শামসুল হককে।
×