ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হিলারির শান্ত মেজাজ অনেকের মনোযোগ কাড়ে

ট্রাম্পের প্রতি শীতল সাড়া

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ট্রাম্পের প্রতি শীতল সাড়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে সোমবার রাতে আয়োজিত প্রথম বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণ সম্ভবত তার সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করবে, কিন্তু তা অন্যদের তার কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিতে পারে এমন ঝুঁকি রয়েছে। নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এখনও সেই সিদ্ধান্ত নেননি- এমন ভোটাররা এবং উভয় দলের বিশেষজ্ঞরা সাক্ষাতকারে এ কথা জানান। ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গ্যালোওয়ের গ্যারেই হ্যাকার (৩০) বলেন, আমার মনে হয় ট্রাম্প যেভাবে অন্য লোকের সঙ্গে কথা বলেন, যেভাবে অন্য লোককে সম্বোধন করেন, তা খুবই রূঢ় ও অসম্মানজনক হতে পারে এবং আমরা কোন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে এরূপ মেজাজ প্রত্যাশা করি বলে আমার মনে হয় না। হ্যাকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে উভয় দলের প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু তবুও হ্যাকার এবং সাক্ষাতকারদাতা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি- এমন সব ভোটার কেউই বলেননি যে, বিতর্ক তাদের কোন প্রার্থীকে সমর্থন করতে রাজি করিয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিতর্ক তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার গতিধারায় মৌলিক পরিবর্তন আনবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। হ্যাকার বলেন, তিনি এখনও ডেমোক্র্যাট হিলারি ক্লিনটনকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেন না। রিপাবলিকান হ্যাকার ২০০৮ সালে বারাক ওবামাকে ভোট দিয়েছিলেন। ডেমোক্র্যাটিক কনসালট্যান্ট ক্রিস কফিনিস ক্লিডল্যান্ডে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি- এমন একদল ভোটারের ওপর জরিপ চালান। বিতর্কের শেষে ১১ জন বিতর্কে হিলারি জয়ী হয়েছেন বলে জানান। ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন এমন কথা কেউই বলেননি এবং কোন প্রার্থীই জয়ী হননি বলে মন্তব্য করেন ১৭ জন। কফিনিস বলেন, ৯০ মিনিট পর তারা কোন ভোটারকেই মুগ্ধ না করার এক অবিশ্বাস্যভাবেই ফলপ্রসূ কাজ করেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প বিতর্কের প্রথম দিক দিয়ে ভালই করেছিলেন, কিন্তু তিনি যখন হিলারিকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ শুরু করেন তখন তিনি লোকজনের সমর্থন হারান। এটি ছিল তার হিলারির কাছে হেরে যাওয়ার চেয়েও খারাপ। তিনি নিজের কাছেই হেরে যান। ফিনিক্সের প্রজেক্ট ম্যানেজার ও রিপাবলিকান স্কট র‌্যাটক্লিফ (৩১) বলেন, হিলারি বিতর্কের জন্য কত ভালভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তা দেখে আমি মুগ্ধ। আমার মনে হয়, তিনি স্পষ্টত জয়ী হচ্ছেন। যদিও তিনি যা বলছেন তার সঙ্গে আমি একমত নই। কোন কোন বিশেষজ্ঞ ওই মূল্যায়নের সঙ্গে একমত। রিপাবলিকান কনসালন্ট্যান্ট কেডিন ম্যাডেন বলেন, বিতর্ক চলতে থাকায় ট্রাম্পের প্রস্তুতির অভাবও ধরা পড়তে থাকে। ম্যাডেন ২০১২ সালে রিপাবলিকান প্রার্থী মিট রমনির উপদেষ্টা ছিলেন। তবুও ম্যাডেন মনে করেন, বিতর্ক মানুষের মনে পরিবর্তন আনতে সামান্যই অবদান রেখেছে। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিও বুশের আমলে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি এবং ট্রাম্পের সমর্থক এ্যারি ফ্লাইশার বলেন, কথা চলার মধ্যে ট্রাম্পের বাধাদান এবং তার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ তার জন্য সম্ভবত ভাল হয়নি। তিনি বলেন, ট্রাম্পের পক্ষের লোকেরা এখনও ট্রাম্পের পক্ষে রয়ে গেছে এবং হিলারির পক্ষের লোকেরা এখনও হিলারির পক্ষে রয়ে গেছে। যারা ইতোপূর্বে সিদ্ধান্ত নেননি তারাও সম্ভবত এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। কিন্তু আমি এ কথাও বলব যে, হিলারি শান্ত ও স্থির থেকে যান এবং আমার মনে হয়েছে ট্রাম্প প্রায়ই রেগে যান। হিউস্টনের প্রজেক্ট ম্যানেজার কেন রবিনসন (৩৩) বলেন, বিতর্কতার প্রত্যাশামতো উত্তপ্ত যুক্তিপূর্ণই ছিল। হিলারি তার মেজাজ ট্রাম্পের তুলনায় শান্তই রেখেছিলেন। তিনি বলেন, বিতর্কের সময় ট্রাম্প খুবই কঠিন অবস্থায় পড়েন। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নরক্রসের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইউরোল্যান্ডা গ্রাইমস বলেন, বিতর্কের শুরুর সময়েই তিনি কাকে ভোট দেবেন সেই প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেননি এবং উভয় প্রার্থী নিয়ে হতাশ ছিলেন। বিতর্ক শেষ হলে তিনি আরও হতাশ হয়ে পড়েন।গ্রাইমস নিজেকে একজন ডেমোক্র্যান্ট বলে বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি বলেন, হিলারি তার কথা রাখবেন বলে যে বিশ্বাস করা যায় না, বিতর্ক থেকে তিনি সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। হিলারি স্ববিরোধিতার পরিচয় দেন। পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির এ্যানেনবার্গ পাবলিক পলিসি সেন্টারের ডিরেক্টর ক্যাথলিন জ্যামিসন বলেন, এটি হিলারি ক্লিনটনের জন্য এক ভাল রাতই ছিল। -ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
×