স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের জালে গত ২০দিন ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা ইলিশ। ফলে আসন্ন মূল প্রজনন মৌসুমে জাতীয় এ মাছের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্রমতে, কয়েক মাসের খরা কাটিয়ে ভাদ্রের মধ্যভাগ থেকেই বঙ্গোপসাগরে সংযুক্ত দখিনের বিভিন্ন নদ-নদীর মোহনা এবং অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, দুঃসহ তাপপ্রবাহ আর খরার পরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ইলিশ প্রজনন ও এর উৎপাদনে যথেষ্ট সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করে। এরইমধ্যে ডিমওয়ালা ইলিশের আগাম বিচরণ ও আহরণ আসন্ন মূল প্রজনন মৌসুমের সময়টিতে যথেষ্ট বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। অভিপ্রায়নী মাছ ইলিশ সারাবছর ধরেই ডিম ছাড়লেও আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে ও পরেই সর্বাধিক প্রজনন করে থাকে। আর ভাদ্র ও আশ্বিনেই দখিণের উপকূলভাগসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে সবচেয়ে বেশি ইলিশ পরিভ্রমণকালে ধরা পরছে। আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগের তিনদিন ও পরের ১১দিনকে মৎস্য বিজ্ঞানীগণ ইলিশের প্রধান প্রজননকাল মনে করে থাকেন। এর পরবর্তী পূর্ণিমার অনুরূপ সময়কালকেও মৎস্য বিজ্ঞানীগণ ইলিশের দ্বিতীয় সর্বাধিক প্রজননকাল বলে চিহ্নিত করেছেন। সে হিসেবে আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ১৫দিন দক্ষিণাঞ্চলের ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকায় নদ-নদীতে ইলিশসহ সবধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। এসময় সারাদেশে ইলিশের পরিবহন ও বিপণন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সহায়তায় সবধরনের প্রস্তুতিও গ্রহণ করতে শুরু করেছে মৎস্য অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। কিন্তু চলতি বছর আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে ভাগেই প্রচুর প্রজননক্ষম ইলিশ দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর মোহনা ও অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে উঠে আসায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। অনেকটা আকস্মিকভাবে বিপুল ইলিশ পেয়ে জেলেরা মহাখুশি। তবে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও বাজারে তার দাম তেমন একটা কমেনি। দাম যাই হোক না কেন মূল প্রজনন মৌসুমের সামান্য কয়েকদিন আগে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠে আসা এবং তা অভ্যন্তরীণ নদ-নদী মোহনায় ধরা পড়ার ঘটনাকে খুব ভালো বলে মনে করছেন না মৎস্য গবেষকগণ।
