ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দশজন নিয়েও মুক্তিযোদ্ধার জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

দশজন নিয়েও মুক্তিযোদ্ধার জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার, সিলেট থেকে ॥ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেডের কাছে দুর্ভাগ্যের হারের পর জয়ের ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়চক্র। সোমবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের (বিপিএল) ম্যাচে দশজন নিয়ে খেলেও উত্তর বারিধারাকে ১-০ গোলে পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। বিজয়ী দলের জয়সূচক গোলদাতা মিডফিল্ডার শাহ আলমগীর কবির অনিক। এই জয়ে লীগে পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে মুক্তিযোদ্ধা। আট ম্যাচ শেষে তাদের ঝুলিতে জমা পড়েছে ১৫ পয়েন্ট। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে লীগের সেরা সাফল্যের দল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। ম্যাচের প্রথামার্ধের প্রায় পুরো সময়ই আধিপত্য বিস্তার করে খেলে মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু শুরুতেই দুর্ভাগ্য ভর করে আব্দুল কাইয়ুম সেন্টুর দলের। ম্যাচের পঞ্চম ও ষষ্ঠ মিনিটে পরপর দু’টি সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয় দলটির। প্রথমে নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার সিমোন ইয়োডিকার হেড বারপোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। বারিধারার গোলরক্ষক মোহাম্মদ এরশাদ বল নিয়ে কালেক্ষপণ করেন। যে কারণে তিনি ভুল পাস দেন। আর ফাঁকায় বল পেয়ে যান বিদেশী সিমোন। কিন্তু পোস্টের বাধায় গোলবঞ্চিত হন তিনি। পরের মিনিটে আবারও মুক্তিযোদ্ধার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বারপোস্ট। কর্নার কিক থেকে আসা বলে আরেক নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড আহমেদ কোলো মুসার হেড পোস্টে আটকে যায়। ১২ মিনিটে আবারও সহজ সুযোগ নষ্ট করে মুক্তিযোদ্ধা। মাঝমাঠ পেরিয়ে তৌহিদুল আলম তৌহিদ সুবিধা মতো জায়গায় বল পান। দু’জনকে কাটিয়ে বিপজ্জনকভাবে তিনি বারিধারার ডি বক্সে ঢুকে পড়েন। কিন্তু শেষক্ষণে এসে গোলরক্ষককে একা পেয়েও ভুল পাস দেন তৌহিদ। ১৮ মিনিটে ম্যাচে প্রথম সুযোগ পায় বারিধারা। ডানপ্রান্ত থেকে মোঃ জাভেদের দেয়া নিখুঁত ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন কেনিয়ান ফুটবলার কলিন্স টিয়েগো। ২০ মিনিটে মুক্তিকে গোলবঞ্চিত করেন বারিধারার গোলরক্ষক এরশাদ। সংঘবদ্ধ আক্রমণে কোলো মুসা ফাঁকায় বল পান। ডি বক্সের মাথা থেকে এই নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ডের বিদ্যুতগতির শট বারিধারা গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেন। ৩২ মিনিটে ম্যাচে প্রথম ভাল সুযোগ পায় বারিধারা। মাঝমাঠ থেকে সম্মিলিত আক্রমণে ফরোয়ার্ড জাভেদ ডানপ্রান্তে বল দেন মিডফিল্ডার রোহিত সরকারকে। রোহিতের ক্রস থেকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা কলিন্সের হেড বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে বারিধারার দুর্গে চড়াও হয়ে খেলতে থাকে মুক্তির ফুটবলাররা। ৪৭ মিনিটে আসে কাক্সিক্ষত গোলের সুযোগ। কিন্তু আরেকবার সম্ভাবনা নষ্ট করেন সিমোন। ডি বক্সের ভেতর অরক্ষিত জায়গায় বল পেয়েছিলেন এই নাইজিরিয়ান। শটও নেন বুলেটগতির। কিন্তু বারিধারা গোলরক্ষক পাঞ্চ করে দলকে রক্ষা করেন। ৫৫ মিনিটে রোহিত সরকারের একক প্রচেষ্টায় গোলের সুযোগ এসেছিল বারিধারার সামনে। বামপ্রান্ত দিয়ে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে ক্ষিপ্রগতিতে মুক্তির বিপদসীমানায় ঢুকে সেন্টু সেনকে পাস দেন। কিন্তু এই মিডফিল্ডারের শট মুক্তির গোলরক্ষক মামুন খান প্রতিহত করেন। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে অযথাই মুক্তিযোদ্ধার সর্বনাশ বয়ে আনেন মিডফিল্ডার মোবারক হোসেন ভুঁইয়া। থ্রোয়িং করতে যেয়ে মোবারক ইচ্ছা করে বারিধারার সেন্টু সেনের মুখে বল মারেন। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে লালকার্ড দেখান। এর ফলে ম্যাচের বাকি ৩৩ মিনিট একজন কম নিয়ে খেলতে হয় মুক্তিকে। কিন্তু এতেই যেন জ্বলে ওঠে অধিনায়ক শহিদুল হকের দল। দশজনের দলে পরিণত হওয়ায় দশ মিনিটের মধ্যেই জয়সূচক গোল আদায় করে নেয় মুক্তিযোদ্ধা। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে গোলটি করেন মিডফিল্ডার শাহ আলমগীর কবির অনিক। কর্নার থেকে আসা বল বারিধারার রক্ষণভাগ ফিরিয়ে দিলেও ফাঁকায় বল পান অনিক। ডি বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে তার আচমকা শট বামপোস্ট ঘেঁষে জালে জড়ায় (১-০)। যেন চেয়ে চেয়ে গোলটি দেখেন বারিধারার ফুটবলাররা। মুক্তিযোদ্ধা একজন কম নিয়ে খেললেও ম্যাচের বাকি সময়ে গোলের পরিষ্কার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি বারিধারা। বরং মুক্তিযোদ্ধা ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারায়। ম্যাচ শেষে দশজন নিয়ে খেলেও জয় পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা কোচ আব্দুল কাইয়ুম সেন্টু। তিনি বলেন, ম্যাচটা সহজ ছিল না। ওদের পাঁচ-ছয়জন ডিফেন্সে খেলেছে। এরপরও আমরা জিততে পেরেছি। এজন্য শুকরিয়া। মুক্তি কোচ বলেন, একজন কম হয়ে গেলেও আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। টিম ভালই করছে। অন্যদিকে বারিধারার নতুন কোচ রাশেদ আহমেদ পাপ্পু হারের জন্য অভিজ্ঞতার অভাবকে অন্যতম কারণ হিসেবে বলেন।
×