ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঐতিহাসিক টেস্টে ভারতের জয়

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ঐতিহাসিক টেস্টে ভারতের জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ডকে ১৯৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের ঐতিহাসিক ৫০০তম টেস্ট স্মরণীয় করে রাখল বিরাট কোহলির দল। সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেব, মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন, শচীন টেন্ডুলকর, সৌরভ গাঙ্গুলি- কানপুরের গ্রীনপার্কে বসেছিল তারার মেলা। ইন্ডিয়ান বোর্ডের (বিসিসিআই) আমন্ত্রণে হাজির হয়েছিলেন দেশটির সাবেক সব অধিনায়ক। পূর্বসূরি গ্রেটদের দারুণ এক জয়ই উপহার দিল কোহলি-বাহিনী। ৪৩৪ রানের অসম্ভব লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সোমবার পঞ্চম দিনে ২৩৬ রানে অলআউট হয় কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড, প্রথম ইনিংসে অতিথিদের সংগ্রহ ছিল ২৬২। ভারত ৩১৮ ও ৩৭৭/৫ (ডিক্লেঃ)। নিজ দেশের হয়ে দ্রুত ২শ উইকেটের নতুন রেকর্ড গড়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, তবে দুরন্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। কলকাতায় শুক্রবার শুরু তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। ৯৩ রানে প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ফেবারিট ভারত চতুর্থ দিনেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল। সেদিনই টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম ২০০ উইকেটের রেকর্ড গড়েন অশ্বিন। ঐতিহাসিক ম্যাচে রেকর্ডটা স্মরণীয় করে রাখতে শেষ দিনে আরও ৩ উইকেট নিয়েছেন ভারতীয় স্পিনার। দলকেও তাই জয়ের জন্য খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। ভারতের দুরন্ত বোলিংয়ের মুখে সর্বোপরি প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ কিউইরা। ব্যক্তিগত ২ রানেই টম লাথামকে তুলে নেন অশ্বিন। অপর ওপেনার মার্টিন গাপটিলকে তো রানের খাতাই খুলতে দেননি তিনি। ওপেনিং জুটির কোমর ভেঙ্গে দেয়ায় স্বভাবতই চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। ওই অবস্থায় অধিনায়ক উইলিয়ামসনের চেষ্টাও দীর্ঘ হয়নি। ২৫ রান করে আউট হন। এরপর সোমবার অশ্বিন-জাদেজাদের বোলিংকে যা একটু পরীক্ষায় ফেলে লুক রনকি-মিচেল স্যান্টনার জুটি। ১০২ রান যোগ করেন তারা। জুটি ভাঙ্গতে জাদেজার হাতে বল তুলে দেন কোহলি। বুদ্ধিটা দারুণ কাজে লাগে। অশ্বিনের হাতে শেষ হয় রনকির ৮০ রানের প্রতিরোধ। লাঞ্চের পর শামির রিভার্স সুইংয়ে বিজে ওয়াটলিং (১৮) ও মার্ক ক্রেইগ (১) দ্রুত ফিরে গেলে কিউইদের ভাগ্যে হারটা লেখা হয়ে যায়। এরপর অশ্বিন-জাদেজা-শামির ত্রিমুখী আক্রমণের বিপক্ষে একাই লড়ে যাচ্ছিলেন স্যান্টনার। মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন এই স্পিনার কাম-ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ১৭৯ বলে ৭১ রানের পথে কোহলিদের কিছুটা ধের্যের পরীক্ষা নিয়েছেন তিনি। রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফিরিয়েছেন ইনিংসের সফল বোলার অশ্বিন। শেষ দিকে ইশ সোধীর ৩৮ বলে ১৮ রানের ইনিংসটা ভারতের জয় প্রলম্বিত করেছে মাত্র। তিনিও অশ্বিনের শিকারে পরিণত হন। নেইল ওয়াগনারকে (০) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে নিজের ষষ্ঠ শিকার তুলে নেয়ার পাশাপাশি ভারতকে বড় জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন অশ্বিন। ম্যাচে অশ্বিনের মোট উইকেট ১০টি (৪+৬)। এর মধ্য দিয়ে টেস্টের দ্বিতীয় দ্রুততম ২০০ শিকারি (৩৭তম টেস্ট) বনে গেছেন তুখোড় এই স্পিনার- ভারতের হয়ে যা নতুন রেকর্ড। যেটি এতদিন ছিল সাবেক গ্রেট অনিল কুম্বলের দখলে (৪৭ টেস্টে)। অল্পের জন্য বিশ্বরেকর্ড হয়নি। ১৯৩৬ সালে নিজের ৩৬তম টেস্টে ২০০ উইকেট নিয়ে যেটির মালিক অস্ট্রেলিয়ার সিভি গ্রিমেট। ১৯৮০ সালে মৃত্যুবরণ করা অসি লেগস্পিনারের রেকর্ডটি ৮০ বছর ধরে অক্ষত! অশ্বিনের কীর্তি সত্ত্বেও ঐতিহাসিক ৫০০তম টেস্টে ম্যাচসেরা জাদেজা। টেলএন্ডে ৪২* ও ৫০* রানের দারুণ দুটি ইনিংস খেলার পাশাপাশি ঘূর্ণিবলে নিয়েছেন ৬ উইকেট (৫+১)। বড় জয়ে এগিয়ে যাওয়ার পর ভারত অধিনায়ক কোহলি বলেন, ‘ছেলেরা প্রত্যেকে দারুণ খেলেছে। দলের সঙ্কটের সময় অশ্বিন ও জাদেজা হাল ধরেছে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর প্রতিপক্ষ অধিনায়ক উইলিয়ামসন বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে ভারতকে ৩০০ রানে আটকে রাখা বড় ব্যাপার। রনকি আর স্যান্টনার ভাল ব্যাটিং করেছে। ইডেন টেস্টে যা আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগবে।’
×