ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করল দুই বন্ধু

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

টাঙ্গাইলে স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করল দুই বন্ধু

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৬ সেপ্টেম্বর ॥ টাঙ্গাইল পৌর এলাকার আগ শাকরাইল এলাকায় এক স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তার দুই সহপাঠীর বিরুদ্ধে। তারা তিন বন্ধু টাঙ্গাইলের সন্তোষ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় হাই স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ালেখা করত। নিহত ছাত্রের নাম মমিনুল ইসলাম (১৫)। সে আগ শাকরাইল গ্রামের শহিদুল ইসলাম বিশার ছেলে। বিশা পেশায় একজন রং মিস্ত্রী। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগ শাকরাইল গ্রামে নিহতের এক বন্ধুর বাড়িতে এ মর্মান্তিক হত্যাকা-ের ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতের পিতা শহিদুল ইসলাম বলেন, মমিনুল, পরশ ও হালিম তিন বন্ধু এক সঙ্গে লেখাপড়া করে। সবার পাশাপাশি বাড়ি হওয়াতে এক সঙ্গে তারা চলাফেরা করে। তাদের চলাফেরায় আমরা কখনই নিষেধ করিনি। বেলা ১১টার দিকে হালিম আমার ছেলে মমিনুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে পরশদের বাড়ি থেকে ডাক চিৎকারের আওয়াজ শুনে আমরা এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি আমার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তার মাথায় ও মুখে এলোপাতাড়িভাবে কোপানো হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে টাঙ্গাইলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। তিনি এ হত্যাকা-ে জড়িত হালিম ও পরশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। নিহতের খালু জাকির সরকার বলেন, হালিম বাসা থেকে ডেকে নিয়ে তারা তিন বন্ধু একসঙ্গে স্কুলের সামনে একটি দোকান থেকে চানাচুর কিনে খেয়েছে। তখন তাদের মধ্যে কোন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে হালিম তাকে ডেকে নিয়ে পরশদের বাড়িতে যায়। ওই বাড়িতে গিয়ে পরশের শোবার ঘরে দরজা আটকিয়ে মমিনুলকে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় পরশের বাড়ির লোকজনের ডাকচিৎকারে গ্রামের লোকজন ও মমিনুলের বাবা-মা এগিয়ে আসলে মমিনুলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথেই সে মারা যায়। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ভুইঞা জানান, এদের পরিবারের মধ্যে কোন পূর্বশত্রুতাও ছিল না। কেন, কি কারণে এই মর্র্মান্তিক হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে হালিম ও পরশ পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বিকেলে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে মমিনুলের লাশ সন্ধ্যায় তার গ্রামের বাড়ি আগ শাকরাইলে আনা হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন। এমন হত্যাকা- তারা কোনভাবেই মানতে পারছেন না। রাতে শাকরাইল কবরস্থানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।
×