ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করতে দেয়া হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করতে দেয়া হবে না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, দেশে ধর্মের নামে কোন অন্যায় ও অধর্মের কাজ করতে দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সারাদেশের মানুষ জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এদের ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারী দলের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদরোধে বর্তমান সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সব ধরনের জঙ্গীবাদ, নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সব আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জঙ্গী-নাশকতাকারীদের গতিবিধি সম্পর্কে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত আছে এবং জঙ্গী ও সন্ত্রাসীসহ সব অপরাধীদের কর্মকা- রোধে তাদের অর্থের যোগানদাতা ও অর্থের উৎসের সন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সংসদ সদস্য বেগম হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপর থাকার ফলে দেশে সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা সংক্রান্তে মামলার রহস্য উদঘাটনের সফলতার পরিচয় দিয়েছে। সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রয়োজনের তুলনায় দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। পুলিশ বাহিনীর মঞ্জুরিকৃত জনবল ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৩১ জন। দেশের আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ৫০ হাজার জনবল বৃদ্ধির নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ইতোমধ্যে পুলিশ অধিদফতরের বিভিন্ন ইউনিটের জন্য ১৩ হাজার ৬৪১টি নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে পুলিশ বাহিনীর জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সালের এ পর্যন্ত গত ৬ বছরে ৫২ হাজার ৩৩৩ পুলিশ সদস্য এবং ২৩ হাজার ৫২৩ বিজিবি সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত ৬ বছরে নিয়োগ দেয়া পুলিশের সদস্যদের মধ্যে এএসপি পদে ৭০২, এসআই (নারী/পুরুষ) ৪ হাজার ১৯৩, পুলিশ সার্জেন্ট (পুরুষ/নারী) ৯২২ এবং কনস্টেবল (পুরুষ/নারী) ৪৬ হাজার ৫১৬। বেগম সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ হতে ২৮ স্থল বন্দর দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পণ্য আমদানি/রফতানি হয়ে থাকে। উক্ত স্থলবন্দরসমূহে বিজিবির কঠোর নজরদারি, চেকিং ও নিরাপত্তার মাধ্যমে আমদানি/রফতানিকৃত যানবাহনসমূহ বাংলাদেশ হতে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে চলাচল করে থাকে। উক্ত দায়িত্ব পালনে যেকোন ধরনের ঝুঁকি এড়াতে বিজিবি সদা প্রস্তুত রয়েছে। স্থলবন্দর সমূহে বিজিবি দায়িত্ব পালনে যেকোন ঝুঁকি এড়াতে ইমিগ্রেশন পুলিশকে সহায়তা করতে সক্ষম রয়েছে। সংসদ সদস্য মুহাঃ গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আরও জানান, ইতোমধ্যে পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে এডিপির অর্থায়নে ‘১৮টি আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যা পিইসি সভা অনুষ্ঠানের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা শহরে আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
×