ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পশ্চিমাদের সমকক্ষ হতে বিমান শক্তির পেছনে বিপুল অর্থ ঢালছে রাশিয়া ও চীন

এবার আকাশ দখলের লড়াই

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬

এবার আকাশ দখলের লড়াই

দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও এর ইউরোপীয় মিত্ররা আকাশের দেশ অনেকখানিই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। এখন রাশিয়া ও চীন এ শ্রেষ্ঠত্ব চ্যালেঞ্জ করতে পারে- এমন নতুন নতুন অস্ত্র পেতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে। এটি নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় উৎসাহ যোগাচ্ছে। কোন কোন জঙ্গীবিমান ও বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই প্রথমবারের মতো চালু হবে। রাশিয়া পূর্ব ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের মতো উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে এবং বেজিং দক্ষিণ চীন সাগরে শক্তি দেখাতে থাকার প্রেক্ষাপটে অত্যাধুনিক বিমানগুলো আকাশে জায়গা করে নেবে। এতে পশ্চিমা সামরিক নেতারা তাদের নিজস্ব পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধবিমান উদ্ভাবন করতে জরুরী তাগিদ বোধ করবেন। মার্কিন বিমানবাহিনীর চীফ অব স্টাফ জেনারেল ডেভিড কোল্ডফিন জুন মাসে কংগ্রেস সদস্যদের বলেন, আমাদের নিজস্ব সামর্থ্যরে প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে- এমন উন্নত সামরিক সামর্থ্যরে অধিকারী এমন প্রতিযোগীদের উত্থানই মার্কিন বিমানবাহিনীর জন্য সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ। তার এ সাক্ষ্যদানের কয়েক দিন পরই তিনি ওই পদে অনুমোদন লাভ করেন। দু’মাস পর মার্কিন বিমানবাহিনী এর নতুন এক ৩৫ জয়েন্ট স্ট্রাইক ফাইটার বিমানকে সার্টিফাই করে। এ শ্রেণীর বিমানের নক্সা এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে সেটি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়। বিমানটি সীমিত মাত্রায় ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত আনতেই বিশেষভাবে নির্মাণ করা হয়। ১৯৯০-এর দশকে বসনিয়াতে ন্যাটোর বোমাবর্ষণের সময় থেকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত আনাই ন্যাটোর সামরিক অভিযানের বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়। এফ-২২ জঙ্গীবিমান এখনও অপেক্ষাকৃত নতুন। এটি ২০০৫ সালে প্রথম মোতায়েন করা হয়। শব্দের গতির চেয়ে দ্বিগুণ বেগে চলমান অবস্থায় এফ-২২ শত্রুর বিমানকে গুলি করে ভূপাতিত করতে পারে। এফ-২২ বিমানকে সম্প্রতি এক বোমারু বিমানে উন্নীত করা রয়েছে। এটি শত্রুর ভূখ-ে গোয়েন্দাগিরিও করতে পারে। কিন্তু মার্কিন জঙ্গীবিমান শহরের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি ১৯৭০ দশকের। বিমানবাহিনী ১৯৭৫ সাল থেকে এর এফ-১৫ বিমান চালিয়ে এসেছে। ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত এফ-১৬ বিমান ১৯৭৯ সাল থেকে চালু রয়েছে এবং মার্কিন নৌবাহিনীর এফ/এ-১৮ বিমান প্রথম ১৯৭৮ সালে মোতায়েন করা হয়। ওই সব পুরনো বিমান অনেক এশীয় ও ইউরোপীয় মিত্রেরও বিমানবাহিনীর মেরুদ-। সে সঙ্গে ফ্রান্সের র‌্যাফেল ও ইউরো ফাইটারের মতো নতুন নতুন জেটও ব্যবহার করা হয়। রাশিয়া এর প্রথম স্টেলথ জঙ্গীবিমান টি-৫০ ২০১৮ সালে মোতায়েন শুরু করার পরিকল্পনা করছে। দু’ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিমানটি কয়েক মাইল দূরের শত্রুবিমানের ফোঁড় পেতে অত্যাধুনিক ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত থাকবে। এদিকে রাশিয়া এসইউ-৩৪ বোমারু ও এসইউ-৩৫ জঙ্গীবিমানের মতো এর সর্বশেষ কোন কোন যুদ্ধবিমান সিরিয়াতে মোতায়েন করেছে। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। চীন ঐতিাহিসকভাবেই রুশ নক্সার বিমানগুলোর ওপর নির্ভর করে এসেছে। এদের মধ্যে অনেকটি পুরনো এবং কোন কোনটি লাইসেন্সের আওতায় দেশেই তৈরি করা হয়। এ অবস্থার পরিবর্তন শুরু হয়েছে। কারণ নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। চীন ব্যাপক ক্ষেত্রে সামর্থ্যরে দিক দিয়ে পশ্চিমা বিমানবাহিনীর সঙ্গে ব্যবধান দ্রুত কমিয়ে আসছে। চীনা সেনাবাহিনীর সম্পর্কে পেন্টাগনের চলতি বছরের মূল্যায়নে এ কথা বলা হয়। চীনের জে-২০ দেখতে মার্কিন এফ-২২ এর অনুরূপ এবং তা ২০১১ সালে আকাশে উড়তে শুরু করে। কিন্তু একে সেনাবাহিনীতে এখনও যুক্ত করা হয়নি। এক বছর পর বেজিং পরীক্ষামূলকভাবে এফসি-৩১ বিমান চালানো শুরু করে। এটি দেখতে মার্কিন এফ-৩৫ বিমানের মতো। বিমান শক্তির দিক দিয়ে এখনও যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে রয়েছে। এর হাতে রয়েছে রাডার ফাঁকি দিতে পারে এমন সব বিমান। রাশিয়া ও চীন এখনও এমন বিমান তৈরি করতে পারে না। কিন্তু কেবল নতুন নতুন বিমানই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করছে না। চীন ও রাশিয়া উভয়েই আরও আধুনিক বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র মোতায়েন করছে। মস্কো বলছে, এর নতুন এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ২৩৬ মাইল দূরের বিমানকেও গুলি করে নামাতে পারে। -ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
×