ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে দুটি বিল উত্থাপন

প্রকাশিত: ০৮:১০, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

সংসদে দুটি বিল উত্থাপন

সংসদ রিপোর্টার ॥ স্বল্পব্যয়ে ও উন্নত সড়কনির্ভর বাসভিত্তিক গণপরিবহন সেবা দিতে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ করা হবে। এজন্য বিশেষ ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং আনুষঙ্গিক বিধান প্রণয়নে ‘বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) বিল-২০১৬’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। রবিবার জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর বিল-২০১৬’ নামের অপর একটি নতুন বিল উত্থাপন করেন। বিল দুটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রিপোর্ট প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তবে বিল দুটি উত্থাপনের বিরোধিতা করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। তবে কণ্ঠভোটে তার আপত্তি নাকচ হয়ে যায়। পরে সেতুমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী পৃথকভাবে বিল দুটি সংসদে উত্থাপন করেন। সংসদে উত্থাপিত বিআরটি বিলের বিধান অনুযায়ী, প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী জেলার মধ্যে এ বিআরটি স্থাপন ও পরিচালনা করা হবে। বিআরটি পরিচালনার জন্য লাইসেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক। তবে শতভাগ সরকারী কোম্পানিকে লাইসেন্স ফি দিতে হবে না। সরকারী-বেসরকারী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিআরটি স্থাপন, স্থাপনা ও পরিচালনার সুযোগ রাখা হয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া বিআরটি নির্মাণ, উন্নয়ন বা পরিচালনা করলে ১০ বছরের কারাদ- এবং ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করলেই একই পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে। প্রস্তাবিত আইনটিতে বিআরটির ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বঙ্গবন্ধু সেতু, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল আইন ও পায়রা বন্দর আইনের মতো বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। বিআরটি নির্মাণ বা পরিচালনা হতে পারে এমন কোন স্থানে ক্ষতিপূরণ আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘরবাড়ি বা স্থাপনা নির্মাণ করা হলে সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিককে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না। জমির শ্রেণী পরিবর্তন করলেও কোন ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে না। কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তপক্ষ সাত কর্মদিবসের মধ্যে আপীল করতে পারবে। বিলে বলা হয়েছে, বিআরটির ভাড়া নির্ধারণের জন্য নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি থাকবে। কমিটি বিআরটি পরিচালনা ব্যয় ও জনসাধারণের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে ভাড়া নির্ধারণের সুপারিশ করবে। বিআরটির প্রতিটি কোচে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, মহিলা, শিশু ও প্রবীণদের জন্য নির্ধারিতসংখ্যক আসন সংরক্ষিত থাকবে। বিআরটি পরিচালনাকালে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে। বিআরটি পরিচালনার ক্ষেত্রে সব যাত্রীর বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বীমা না করলে ১০ বছরের কারাদ- এবং পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করা হবে। বিলে আরও বলা হয়েছে, বিআরটি নির্মাণ ও পরিচালনায় বাধা দিলে এক বছরের কারাদ- ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে। কোন ব্যক্তি যদি অনুমতি ছাড়া বিআরটির সংরক্ষিত স্থানে প্রবেশ করে, তাহলে তাকে এক বছরের কারাদ- ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। কোন ব্যক্তি যদি বিআরটি বাস ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘœ ঘটায়, তাহলে তাকে পাঁচ বছরের কারাদ- ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে। আর বিআরটির টিকেট বা পাস জাল করলে এবং অননুমোদিতভাবে টিকেট বা পাস বিক্রি করলে ১০ বছরের কারাদ- ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়া কারিগরি মান অনুসরণ না করলে লাইসেন্সধারীকে পাঁচ বছরের কারাদ- ও ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। শুরু থেকেই বিআরটিকে মোবাইল কোর্টের এখতিয়ারে নেয়ার বিধান রাখা হয়েছে ওই বিলে।
×