ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গোলবন্যার ম্যাচে শেষ হাসি শেখ জামালের

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

গোলবন্যার ম্যাচে শেষ হাসি শেখ জামালের

স্পোর্টস রিপোর্টার, সিলেট থেকে ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে (বিপিএল) সিলেট পর্বের প্রথমদিনই জমজমাট হয়েছে। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে রবিবার বিকেলে ব্রাদার্স্ ইউনিয়ন ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচটি ছিল দারুণ উপভোগ্য ও উত্তেজনাপূর্ণ। ম্যাচের প্রথমার্ধে ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকা জামাল শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতেছে ৫-৪ গোলে। ম্যাচে দু’টি করে গোল করেন জামালের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন আনসেলমি ও ব্রাদার্সের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এনকোচা কিংসলে। পুরো ম্যাচটিই ছিল নান্দনিক। দু’দলের খেলোয়াড়রা আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়ে সর্বমোট ৯ গোল করেন। যা এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত এক ম্যাচে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। এর আগে এক ম্যাচে ৮ গোল হয়েছিল। ২৮ জুলাই হওয়া ওই ম্যাচেও ৫-৩ গোলে জিতেছিল শেখ জামাল। প্রতিপক্ষ ছিল উত্তর বারিধারা। শুরু থেকেই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমজমাট হয়ে ওঠে। ম্যাচে প্রথম ভাল সুযোগ পায় ব্রাদার্স। ১০ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে সম্মিলিতি আক্রমণ শানায় কমলা জার্সিধারীরা। কিন্তু ডি বক্সের মধ্য থেকে নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এনকোচা কিংসলের দুর্বল শট জামাল গোলরক্ষক লুফে নেন। পাল্টা আক্রমণ থেকে জামালের ডারবোয়ে ল্যান্ডিংয়ের দারুণ শট ব্রাদার্স গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেন কর্নারের বিনিময়ে। ১২ মিনিটে চ্যাম্পিয়ন জামাল আরও একটি সুযোগ হারায়। এবার আরেক বিদেশী নাইজিরিয়ার এমেকা ডার্লিংটনের প্রচেষ্টা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোল করার সুযোগ হারায় ব্রাদার্স। দলটির মিডফিল্ডার ইমতিয়াজ সুলতান জিতুর শট জামাল কিপার ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হলে ফিরতি বলে আবারও সুযোগ আসে। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ১৬ মিনিটে ব্রাদার্সের কিংসলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও ব্যর্থ হন। পরের মিনিটে জামালের ডিফেন্ডার লিংকনও একইভাবে মিস করেন। অবশেষে ম্যাচের ২৮ মিনিটে প্রথম গোল পায় শেখ জামাল। ল্যান্ডিংয়ের ক্রসে বল পেয়ে গোল করেন ওয়েডসন। দুই মিনিট পর আবারও গোল করে জামাল। গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে এবার গোল করেন ল্যান্ডিং। ৩৩ মিনিটে অসাধারণ গোলে ম্যাচে ফেরে ব্রাদার্স। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে মান্নাফ রাব্বি দারুণ দক্ষতায় গোল করেন। ৪২ মিনিটে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় জামাল। এবার সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে গোল করেন নাইজিরিয়ার ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে (৩-২) আবারও ম্যাচে উত্তেজনা ফেরায় ব্রাদার্স। গোপীবাগের দলটির হয়ে স্পট কিকে লক্ষ্যভেদ করেন হাইতির মিডফিল্ডার অগাস্টিন ওয়ালসন। বিরতির পর শুরু থেকেই ম্যাচে ফিরতে মুহুর্মুহু আক্রমণ শানাতে থাকে বাদ্রার্স। এ অর্ধের প্রথম ১৫ মিনিট অনেকটা একতরফা খেলতে থাকে সৈয়দ নাইমুদ্দিনের দল। অবশেষে ফল আসে ৬৩ মিনিটে সমতা ফেরানো (৩-৩) গোলটি করেন ব্রাদার্সের কিংসলে। ওয়ালসনের পাস থেকে দর্শনীয় গোল করেন তিনি। ৭১ মিনিটে আবারও এগিয়ে (৪-৩) যায় জামাল। ডি বক্সের ভেতর থেকে আচমকা শটে গোল করেন মিডফিল্ডার সওয়ার জামান নিপু। পরের মিনিটে আবারও গোল করে জামাল। ওয়েডসন ফাঁকায় বল পেয়ে গোলরক্ষককে ডজ দিয়ে গোল করেন (৫-৩)। এটি এবারের আসরে ওয়েডসনের সাত নম্বর গোল। যা ব্যক্তিগত গোলদাতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ৭৫ মিনিটে আবারও ম্যাচে ফেরে ব্রাদার্স। এবার দ্বিতীয়বারের মতো পেনাল্টি পায় গোপীবাগের দলটি। এ সময় রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে তর্ক করায় লালকার্ড দেখে মাঠের বাইরে যান জামালের ডিফেন্ডার আনিসুর আলম সুইট। ৭৯ মিনিটে ব্যবধান কমানো (৫-৪) গোল করেন কিংসলে। এরপর ম্যাচে সমতা ফেরাতে আক্রমণের ঢেউ বইয়ে দিতে থাকে ব্রাদার্স। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে সুবর্ণ সুযোগও আসে। তৃতীয় পেনাল্টি পায় কমলা জার্সিধারীরা। কিন্তু ওয়ালসনের নেয়া স্পট কিক ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে জামালকে স্মরণীয় জয় উপহার দেন গোলরক্ষক মাকসুদুর রহমান। আর বর্ণিল ম্যাচে কান্না জাগানো হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাদার্স।
×